১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
রুকন সম্মেলনে ডা: শফিক

২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার হত্যা মামলা সচল হবে

ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতে ইসলামীর রুকন সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন ডা: শফিকুর রহমান : নয়া দিগন্ত -


২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যার ঘটনার মামলা আবার সচল হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদীরা ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবের মাধ্যমে প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করে লাশের ওপর পৈশাচিক নৃত্য করেছিল। এই হত্যাকাণ্ডের নেত্রীর বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট মামলা দায়ের করা হলেও ইতিহাস চুরি করে ক্ষমতার দাপটে তার নামের মামলা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু দিন বদলেছে। আল্লাহ চাইলে তার বিরুদ্ধে আবার মামলা সচল হবে। তার বিরুদ্ধে মজলুমরা বিচার চাইতেই পারেন।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় সম্মেলনে দারসুল কুরআন পেশ করেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম। সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানের পিতা গোলাম রাজ্জাক। বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য আব্দুর রব, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা: ফখরুদ্দীন মানিক, মহানগরী উত্তর শিবির সভাপতি আনিসুর রহমান ও পশ্চিমের সভাপতি সালাহউদ্দিন মাহমুদ প্রমুখ। উদ্বোধনী সেশনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে চোখ ও পা হারানো ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, তলোয়ারের মাধ্যমে নয় বরং শ্রেষ্ঠত্ব ও আদর্শের মাধ্যমে ইসলাম বিজয়ী হয়েছে; তাই আমাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব ও আদর্শ দিয়েই বৈষম্য, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ গড়তে হবে। তিনি আরো বলেন, ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ বিজয়ের মাধ্যমে জাতি নতুন করে আলোর মুখ দেখেছে। স্বৈরাচারী ও ফ্যাসিবাদী শাসনের সাড়ে পনের বছর দেশের চিহ্নিত কিছু লোক ছাড়া বেশির ভাগ মানুষই মজলুম ছিলেন। তারা দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর দাপটের সাথে দেশ শাসন করে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে ঠেলে দিয়েছিল। তারা চৌকস ও দেশপ্রেমী ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে দেশের সীমান্ত ও প্রতিরক্ষাকে দুর্বল করে দিয়েছিল। সেনাবাহিনী নিজস্ব তত্ত্বাবধানে ঘটনার একটি তদন্ত করলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। তারা নিজেরা তদন্ত করলেও সে তদন্তের ফলাফলও জনগণকে জানানো হয়নি। ঘটনার নেপথ্য নায়করাই দেশের রাজা বনে গিয়েছিল। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের অতন্ত্র প্রহরী হওয়ার কারণেই জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করে জুলুম-নির্যাতন চালানো হয়। বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে শীর্ষনেতাদের হত্যা করে দেশ পরিণত করা হয় বধ্যভূমিতে। এ জন্য গণমাধ্যমকেও ব্যবহার করা হয়েছে। শাহবাগে বেআইনি জমায়েত করে দেশে সৃষ্টি করা হয়েছিল এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। তথাকথিত কয়েকজন আলেমও তাদের সমর্থন করেছিল। মূলত পতিত সরকার ছিল গণহত্যাকারী সরকার। তারা ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে নির্বিচারে অসংখ্য আলেম হত্যা করেছিল, যা ছিল মানবতাবিরোধী অপরাধ। কিন্তু আল্লাহর মেহেরবাণীতে তাদের পতন হয়েছে। তারা অতিমাত্রায় অহঙ্কারী হয়ে উঠেছিল। আর অহঙ্কার আল্লাহ তায়ালার ভূষণ। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে সে অবস্থার অবসান হয়েছে। তাই এই বিজয়কে অর্থবহ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, স্বৈরাচারী শাসন কখনো স্থায়ী হয় না। আওয়ামী লীগ টিকতে পারেনি। তারা দেশে দেড় দশক ধরে অপশাসন-দুঃশাসন চালিয়ে গণবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা থেকে লজ্জাজনকভাবে বিদায় নিয়েছে।
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বীরের জাতি। তাই আমাদেরকে কেউ কখনো পরাভূত করতে পারেনি; আর কখনো পারবেও না। দেশে দীর্ঘ মেয়াদে ফ্যাসিবাদী এবং স্বৈরাচারী শাসন চলেছে। তারা অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্য দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদের শেষ রক্ষা হয়নি।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, আমরা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। ফ্যাসিবাদী অপশক্তি আমাদের নিবন্ধন ও প্রতীক কেড়ে নিয়ে ক্ষান্ত হয়নি বরং নিষিদ্ধ করে আমাদের গতিরোধ করেছে। কিন্তু জামায়াতের অগ্রযাত্রা তারা কোনোভাবেই রোধ করতে পারেনি।
সম্মেলনের উদ্বোধক শহীদ নাসিব হাসান রিয়ানের পিতা গোলাম রাজ্জাক বলেন, রিয়ান সব সময় শহীদ হওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিল। আল্লাহ তাকে সে মহান মর্যাদা দান করেন। আমরা তার জন্য গর্বিত। তিনি শহীদ রিয়ানের অসমাপ্ত স্বপ্ন পূর্ণতা দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মাদ সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করতে আমাদেরকে অনেক ত্যাগ ও কোরবানি করতে হয়েছে। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর প্রকাশ্য দিবালোকে লগি-বৈঠার তাণ্ডব চালিয়ে মাসুম, শিপন, মুজাহিদ, জসিম উদ্দীনসহ সাতজনকে শহীদ করে লাশের ওপর নৃত্য চালিয়ে নির্মম পৈশাচিকতা প্রদর্শন করা হয়েছিল। কথিত বিচারের নামে প্রহসন করে শীর্ষনেতাদের হত্যাসহ শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। তাই ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।
ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ : রাজধানীর দনিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা করেছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ। দলটির কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ শহীদের পরিবারের মধ্যে এ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন। এ সময় সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্ততা করেন তিনি। যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমির নওশেদ আলম ফারুকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মতিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অফিস সম্পাদক ও কর্মপরিষদের সদস্য ড. মোবারক হোসাইন।

চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের রুকন সম্মেলন
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, গোটা জাতি বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার। জামায়াতে ইসলামীও একটি বৈষম্যহীন সমাজ চায়। চট্টগ্রামকে ইসলামের প্রবেশদ্বার উল্লেøখ করে তিনি বলেন, আগামী দিনে আমরা যেন এই চট্টগ্রাম থেকে ইসলামী বিপ্লবের সূচনা করতে পারি সে জন্য সদস্যদের ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি বলেন, এখলাসপূর্ণ সহিহ্ নিয়ত নিয়ে আল্লাহর জন্য কাজ করতে হবে। দ্বীন বিজয়ী হবে আল্লাহর সাহায্যের মাধ্যমে। আমাদের বেশি বেশি কুরআন ও হাদিস পাঠ করতে হবে। নবী সা:-এর জীবনীর সবকিছু মানবজাতির জন্য অনুসরণীয়। গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর কাজিরদেউড়িতে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরী আয়োজিত সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরী আমির সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও মহানগরী সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিনের সঞ্চালনায় রুকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- জামায়াতে ইসলামীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে দারসুল কুরআন পেশ করেন বাইতুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ এবং ওলামা-মাশায়েখ পরিষদ চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ড. অধ্যক্ষ মাওলানা সাইয়েদ আবু নোমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামায়াত আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেন, কাউকে সন্তুষ্ট করতে কোনো কিছু করা যাবে না। যা কিছু করতে হবে সব হবে আল্লাহর জন্য। মুমিনের সব কাজ হবে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। প্রত্যেক সদস্যকে বিচক্ষণতার অধিকারী হতে হবে। আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পাওয়া যাবে না। দ্বীনের সৌন্দর্য হচ্ছে সবার সাথে সাম্য রক্ষা করা। তবে সাংগঠনিক শৃঙ্খলার বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

তিনি বলেন, আল্লাহ যাকে হেদায়েত দান করেন তিনি হেদায়তপ্রাপ্ত হন। হেদায়াতপ্রাপ্ত হলে সেই মানুষের জীবন পাল্টে যায়। মুমিনের জন্য পেছনে যাওয়ার কোনো রাস্তা নেই। মুমিনদের আল্লাহ যেকোনোভাবে সাহায্য করবেন। তিনি আরো বলেন, বেশি বেশি আত্মসমালোচনা করতে হবে। আল্লাহর জন্য নিজেকে সোপর্দ করতে হবে।
জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী আল্লøাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। বাংলার জমিনে জামায়াতে ইসলামী একমাত্র আল্লাহর দ্বীনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। কারো ছোটখাটো বিষয়কে বড় করে দেখা যাবে না। ঘুমানোর আগে অপরকে ক্ষমা করে দিয়ে ঘুমাতে হবে। বিদ্বেষমুক্ত অন্তরের অধিকারী হতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ফ্যাসিবাদ ও জুলুমের ধারা থেকে বাংলাদেশ মুক্ত হয়েছে। আর কোনো ফ্যাসিবাদকে এই জমিনে মাথা চাড়া দিতে দেয়া হবে না।

ফ্যাসিবাদের ষড়যন্ত্রের কারণে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে। যে আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদ মুক্ত হয়েছে, সেখানে নেতৃত্ব দেয়ার মাধ্যমে জামায়াত এই দেশের মানুষের মন জয় করেছে। এ জন্য আজ বাংলাদেশের মানুষ জামায়াতের নেতৃত্ব দেখার জন্য মুখিয়ে রয়েছে।
সভাপতির বক্তৃতায় শাহজাহান চৌধুরী বলেন, দ্বীন কায়েমের দায়িত্ব মহান আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের ওপর অর্পণ করেছেন। এ ব্যাপারে রুকন ভাইদেরকে সচেতন ও যত্নশীল হতে হবে। ময়দানে বলিষ্ঠভাবে কাজ করার জন্য আমাদেরকে ভূমিকা পালন করতে হবে। চট্টগ্রামের প্রতিটি মানুষের মধ্যে ইসলামের সুমহান দাওয়াত পৌঁছে দিতে হবে। আজকে দেশের ১৮ কোটি মানুষ আমাদের দিকে চেয়ে রয়েছে। গত ১৮ বছরে দুর্নীতি লুটপাট করে, ভূমি দখল থেকে শুরু করে নৈরাজ্যের মাধ্যমে বাংলাদেশকে যে সঙ্কটের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে সেই অবস্থান থেকে ফিরিয়ে আনার জন্য জামায়াতে ইসলামীকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

রাজধানীর দনিয়ায় শহীদ পরিবারের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর আর্থিক সহায়তা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেছেন, এশিয়ার সর্ববৃহৎ দল দাবি করা আওয়ামী লীগ আজ অস্তিত্বহীন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী যিনি দাম্ভিকতার সাথে বলেছেন হাসিনা পালায় না! অথচ ক্ষমতা ছাড়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীসহ দলের শীর্ষ নেতারা লেজ গুটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। শনিবার রাতে রাজধানীর দনিয়ায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের পরিবারের মধ্যে আর্থিক সহায়তা প্রদান ও সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা নিজেও বলেছিল, আওয়ামী লীগের শেকড় বাংলার মাটিতে এমনভাবে প্রোথিত, শত চেষ্টা করেও একে কেউ উপড়ে ফেলতে পারবে না, আওয়ামী লীগকে ছিন্নভিন্ন করা যাবে না। কিন্তু আজ কেন আওয়ামী লীগ অস্তিত্বহীন প্রশ্ন রেখে ড. মাসুদ বলেন, স্বৈরাচার করে, জনগণের বুকে গুলি চালিয়ে, জনগণের কণ্ঠ রোধ করে, দেশের সম্পদ পাচার করে জনগণের ভালোবাসা পাওয়া যায় না, যাবে না। জনগণের ভালোবাসা পেতে হলে জামায়াতে ইসলামীর মতো জনগণের পাশে থাকতে হবে, জনগণকে ভালোবাসতে হবে। জামায়াতে ইসলামীর ওপর শেখ হাসিনা যতই জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে, এক দিনের জন্যও জামায়াতে ইসলামীর কার্যক্রম বন্ধ ছিল না। জামায়াতের একজন আমিরের ফাঁসি দেয়ার আগেই আরেকজন আমির দায়িত্ব পালনের জন্য প্রস্তুত থাকেন এবং ছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দল চালানোর জন্য একটা লোকও পাওয়া যায়নি। এতেই বোঝা যায়, শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের মতো দলের ভেতরেও একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বোঝে না এবং বিশ্বাস করে না। সে জন্যই তারা এক ব্যক্তির কৃতিত্বে দেশ ও দল পরিচালনা করেছিল। জামায়াতে ইসলামী গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বলেই জামায়াতে আমির যে কেউ হতে পারেন। কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা পরিবারের থেকে জামায়াতের আমির হন না।

যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমির নওশেদ আলম ফারুকের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মতিউর রহমান খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সুধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের অফিস সম্পাদক ও কর্মপরিষদের সদস্য ড. মোবারক হোসাইন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কদমতলী উত্তর থানা আমির আবদুর রহিম জীবন, কদমতলী উত্তর থানা শূরা ও কর্মপরিষদের সদস্য ওমর ফারুক, তালিমুল মিল্লাত মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা মিজানুর রহমান, কদমতলী উত্তর থানা নায়েবে আমির হালিম মিয়াজী, জামায়াত নেতা আবু সায়েদ, দনিয়া ওয়ার্ড সভাপতি মাওলানা মোস্তফা কামাল, দনিয়া ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি আমিনুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
সুধী সমাবেশ শেষে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদের পরিবারের মধ্যে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement