১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

ভারতের রেকর্ড : হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

-


ভারতের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচটি হেরেছে বাজেভাবে। হায়দরাবাদে বাংলাদেশের বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। চার-ছক্কার ঝড় বইয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ভারত তোলে রেকর্ড ছয় উইকেটে ২৯৭ রান। জবাবে খেলতে নেমে গড়পড়তা রান করে শান্তবাহিনী। কোনো ম্যাচেই তারা ১৪০ রানের গণ্ডি পেরোতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত নির্দিষ্ট ওভারে বাংলাদেশ সাত উইকেটে ১৬৪ রান করলে ১৩৩ রানের জয় পায় স্বাগতিকরা। তাতে মাহমুদুল্লাহর বিদায়ী ম্যাচটি হোয়াইটওয়াশ হওয়ায় দুঃসহ স্মৃতিই বহন করবে টাইগার শিবিরে।

মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বিদায়ী টি-২০তে কী নির্মম ব্যাটিংই না করলেন ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। দু’জনের দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ বলে ১৭৩ রানের জুটিতে ছয় উইকেটে ২৯৭ রান করেছে ভারত। স্ট্রাইকেরেট ১৪.৮৫। টি-২০তে এটিই বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের সর্বোচ্চ স্কোর। এ সংস্করণে ভারতের সর্বোচ্চও। ভারতীয় ব্যাটাররা যেভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে, কৌতূহল ছিল টি-২০তে সর্বোচ্চ ইনিংসে নেপালের রেকর্ড ভাঙতে পারবে কি না। তবে ইনিংসের শেষ বলে রিংকু সিং (৮) ছক্কা মারলেও ৩০০ হয়নি ভারতের। অবশ্য আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের মধ্যে এটিই সর্বোচ্চ স্কোর। গত বছর হ্যাংঝুতে এশিয়ান গেমসে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে ৩১৪ রান করেছিল নেপাল। পাওয়ার প্লেতে ভারতের স্কোর ছিল ১/৮২। এটিই টি-২০ তে প্রথম ছয় ওভারে সর্বোচ্চ রান।

ভারতের আগে ২০১৭ সালের ২২ ডিসেম্বর সর্বোচ্চ ছিল শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পাঁচ উইকেটে ২৬০ রান। গতকাল সেটি টপকে বাংলাদেশের বিপক্ষে হায়দরাবাদে রাজীব গান্ধী স্টেডিয়ামে করে ফেলল ছয় উইকেটে ২৯৭। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে যা সর্বোচ্চ। যদি সার্বজনীন ধরা হয় তাহলে গত বছর সেপ্টেম্বরে মঙ্গোলিয়ার বিপক্ষে নেপালের তিন উইকেটে ৩১৪ রান টি-২০তে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তিন উইকেটে ২৭৮ রান যা আফগানিস্তান করেছিল ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
হায়দরাবাদে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ বাউন্ডারির রেকর্ডও হয়েছে। ৪৭ বাউন্ডারি এসেছে ভারতের ইনিংসে। টেস্ট খেলুড়ে দেশের মধ্যে আগে সর্বোচ্চ ৪২ বাউন্ডারির রেকর্ড ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। টেস্ট খেলুড়ে দেশের টি-২০তে এক ইনিংসে যৌথভাবে সর্বোচ্চ ছক্কাও দেখেছে ক্রিকেট বিশ্ব। ২২ ছক্কায় আফগানিস্তান ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে এ রেকর্ড ভারতের। সব মিলে যৌথভাবে তৃতীয় ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডও এটি। স্যামসন ও সূর্যকুমার মিলে ভারতের টি-২০-এর তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড গড়েছেন। ৬১ বলে ১৫.০৪ গড়ে দুইজন মিলে করেছেন ১৭৩ রান। আর টি-২০তে চতুর্থ দল হিসেবে বাংলাদেশের পাঁচ বোলার ৪০ রানের বেশি করে রান বিলিয়েছেন।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমেই বড় ইনিংস খেলার ইঙ্গিত দেন স্যামসন। তাসকিন আহমেদের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে টানা চারটি চার মেরেছেন। এরপর রিশাদ হোসেনের করা ইনিংসের দশম ওভারে টানা পাঁচ ছয় মেরেছেন। স্যামসন আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৪০ বলে। এই সংস্করণে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই কোনো ভারতীর প্রথম সেঞ্চুরি। এ নিয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের সেঞ্চুরির সংখ্যা দাঁড়াল ৬।
আন্তর্জাতিক টি-২০তে রোহিত শর্মার পর ভারতের হয়ে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন স্যামসন। রোহিত করেছিলেন ৩৮ বলে আর স্যামসন ৪৭ বলে। রোহিতের এই রেকর্ড ভাঙতে না পারলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০তে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটি এখন তার। ২২ বলে ফিফটি পেয়েছেন স্যামসন। ২০১৯ সালে রাজকোটে আগের রেকর্ডটি ছিল রোহিতের ২৩ বলে ফিফটি। ২৩ বলে ফিফটি করে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছেন সূর্যকুমারও। ১৫তম ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-২০তে ২৫০০ রানের মাইলফলক ছুঁয়েছেন ভারত অধিনায়ক। ৩৫ বলে ৮ চার ও ৫ ছয়ে ৭৫ রান করে মাহমুদুল্লার বলে ফেরেন সূর্য। তার আগে ৪৭ বলে ১১ চার ও ৮ ছয়ে ১১১ রান মোস্তাফিজুর রহমানের বলে ফেরেন স্যামসন। ওপেনার অভিষেক শর্মা (৪) ফেরার পর দু’জনে জুটি বেঁধেছিলেন।

সঞ্জু-সূর্য বিদায় নিলেও রানের গতি থামেনি ভারতের। এরপর ২৬ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন রাইয়ান পরাগ (৩৪) ও হার্দিক পান্ডিয়া (৩৭)। ভারতকে শেষ পর্যন্ত ৩০০ পেরোনো স্কোর নিতে দেননি তানজিম হাসান সাকিব। পরপর দুই বলে পান্ডিয়া ও নিতিশ রেড্ডিকে (০) ফেরান বাংলাদেশী পেসার সাকিব। তিন উইকেট নেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন তাসকিন, মোস্তাফিজ ও মাহমুদুল্লাহ।
জবাবে খেলতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারান পারভেজ হোসেন ইমন (০)। তানজিদ হাসান তামিম ১২ বলে ১৫ করে ওয়াশিংটনের শিকার। শান্ত ১১ বলে একটি করে চার ছক্কায় ১৪ রানে রাভির শিকার। লিটন ও তৌহিদ হৃদয় জবাব দিতে থাকেন ভারতীয় বোলারদের। ওই রাভির বলেই ফিরতে হয় লিটন দাসকে। অবশ্য মারদাঙ্গাভাবে ২৫ বলে ৮ চারে ৪২ রানে সাজঘরে ফিরেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ ফিরলেন ৯ বলে এক বাউন্ডারিতে মাত্র ৮ রান করে। রাঙানো হলো না তার শেষ ম্যাচটি। ১৪ ওভারে ১৩০ রানে পাঁচ উইকেট নেই টাইগারদের।
একপ্রান্ত আগলে রেখে বিপদের মাঝেও তৌহিদ হৃদয় ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরি তুলেন নেন। ৩৫ বলে তিনটি করে চার ছক্কায় ৫২ রান করেন। এরপর মাহেদী ৩, রিশাদ ০-তে আউট হলে তৌহিদ ৬৩ রানে ও তানজিম ৮ রানে অপরাজিত থেকে খেলা শেষ করেন। বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয় সাত উইকেটে ১৬৪ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত ইনিংস : ২৯৭/৬ (স্যামসন ১১১, অভিষেক ৪, সূর্যকুমার ৭৫, রাইয়ান ৩৪, হার্দিক ৪৭, রিঙ্কু ৮*, নিতিশ ০, ওয়াশিংটন ১*, তাসকিন ১/৫১, তানিজিম ৩/৬৬, মোস্তাফিজ ১/৫২, মাহমুদুল্লাহ ১/২৬)।
বাংলাদেশ ইনিংস : ১৬৪/৭ (ইমন ০, তানজিদ ১৫, শান্ত ১৪, লিটন ৪২, হৃদয় ৬৩*, মাহমুদুল্লাহ ৮, মাহেদী ৩, রিশাদ ০, তানজিম ৮*, মায়াঙ্ক ২/৩২, রাভি ৩/৩০, ওয়াশিংটন ১/৪, নিতিশ ১/৩১)।
ফল : ভারত ১৩৩ রানে জয়ী।
সিরিজ : ভারত ৩-০তে জয়ী।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ কার্যক্রম সবার জন্য সমান অধিকারের বাংলাদেশ গড়তে চাই : ড. ইউনূস বঞ্চিত কর্মকর্তাদের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগে বৈষম্য এস আলমের দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিপাকে ব্যাংকগুলো ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হিংসা ও বিভক্তির কবর রচনা করে জাতীয় ঐক্য চাই : ডা: শফিক আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রোটিয়াদের কাছেও হারল টাইগ্রেসরা নিহন হিদানকিওর নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ে ইউনূসের অভিনন্দন ভারতের রেকর্ড : হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে পররাষ্ট্র সচিবের সিরিজ বৈঠক

সকল