আরো ৪৭ জেলেসহ ৫ ট্রলার ছাড়ল মিয়ানমার
- কক্সবাজার অফিস ও উখিয়া সংবাদদাতা
- ১২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৯
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে সাগর থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া আরো ৫ ফিশিং ট্রলার ছেড়ে দিয়েছে মিয়ানমার নৌবাহিনী। গত বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে মাঝিমাল্লাসহ এসব ট্রলার মিয়ানমার বাহিনী ছেড়ে দিলে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের টহল জাহাজ ট্রলারগুলো সেন্টমার্টিন দ্বীপের কাছে নিয়ে আসে। পরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের জেটি ঘাটে মাঝিমাল্লাসহ ট্রলারগুলো নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানিয়েছে টেকনাফ কোস্ট গার্ড। ওইসব ট্রলারে ৪৭ জন মাঝিমাল্লা ও জেলে রয়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে ধরে নিয়ে যাওয়া অন্য একটি ফিশিং ট্রলার ছেড়ে দিয়েছিল মিয়ানমার নৌবাহিনী। ট্রলারটি বৃহস্পতিবার দুপুরে ১১ জন মাঝিমাল্লা জেলেসহ শাহপরীর দ্বীপের ঘাটে এসে পৌঁছে। এর মধ্যে মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে নিহত এক জেলের লাশ এবং গুলিবিদ্ধ দুইজন জেলে ছিল।
টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, গত বুধবার বিকেলে সেন্টমার্টি দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্বে সাগরে বাংলাদেশী জলসীমায় মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশী ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলে নিহত হন। গুলিবিদ্ধ ২ জনসহ আহত হয়েছে আরো একাধিক জেলে। পরে মাঝিমাল্লাসহ ৬টি ফিশিং ট্রলার আটক করে নিয়ে যায় মিয়ানমার বাহিনী। ঘটনার শিকার ট্রলারগুলোর মালিক কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা।
গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জেলে মো: ওসমান গনি শাহপরীর দ্বীপের কোনাপাড়া এলাকার বাচ্চু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীর দ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধীন ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২ জেলেও ওই ট্রলারের।
ধরে নিয়ে যাওয়া অপর ৫টি ট্রলারের মালিক হলেন, শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রিপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমানের ২টি, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তার ভাই আতা উল্লাহ, উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো: আছেম।
পরে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের কাছে ১টি ট্রলারসহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটার দিকে নিহত জেলের লাশ ও ১১ জন জেলে নিয়ে ট্রলারটি শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে ফিরেছে।
একটি ট্রলারের মালিক মোহাম্মদ কায়সার বলেন, সেন্টমার্টিনের কাছাকাছি মাছ ধরা শেষে শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাট দিয়ে ফিরছিলাম। এ সময় নাইক্ষ্যংদিয়া সংলগ্ন অংশে মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ আমার ট্রলারের দিকে অতিক্রম করছিল। মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজ থেকে হঠাৎ আমার ট্রলার লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে আমাদের এক জেলে মারা গেছে আর দু’জন গুলিবিদ্ধ হয়। তিনি বলেন, আমরা নাফ নদের বাংলাদেশের পানিসীমায় ছিলাম এবং হাত উঁচু করে বাংলাদেশী পতাকা দেখিয়ে তাদের গুলি না করতে ইশারা করছিলাম। এর পরও তারা মানেনি। অন্য এক মালিক মতিউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে অপর ৫টি ট্রলারসহ জেলেরা সেন্টমার্টিনে এসেছে। ওখানে জেলেদের সাথে আলাপ করে কোস্ট গার্ড ও বাংলাদেশের নৌবাহিনী তথ্য সংগ্রহ করে। পরে সেন্টমার্টিন থেকে ওইসব ট্রলারও শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে নেয়া হয়।
কোস্ট গার্ডের শাহপরীর দ্বীপের দায়িত্বরত এক কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সাথে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার সকালে একটি ও বিকেলে ৫টি ট্রলার ছেড়ে দেয়া হয়। ৫টি ট্রলার, মাঝিমাল্লা ও জেলেকে গতকাল শুক্রবার সকালে শাহপরীর দ্বীপের জেটিতে নিয়ে আসা হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা