১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৬ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

৮৬ রানে সিরিজ হারল বাংলাদেশ

-


টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল ভারত। লাল বলের ক্রিকেটে পাত্তা না পাওয়া বাংলাদেশ রঙ ছড়াতে পারেনি রঙিন পোশাকেও। সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০তে টাইগারদের পাত্তাই দেয়নি সূর্যকুমার যাদবের দল। ৮৬ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করল ভারত। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে টস হেরে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২১ রান করে স্বাগতিকরা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৩৫ রানের বেশি করতে পারেনি বাংলাদেশ। তাতে ভারতের ৮৬ রানে জয়ী এক ম্যাচ আগেই সিরিজ নিশ্চিত করে। আগামী ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের হোয়াইটওয়াশ এড়াতে মাঠে নামবে বাংলাদেশ।

দিল্লির টি-২০তে পাওয়ার প্লেতে দারুণ শক্তিমান ছিল বাংলাদেশ। শুরুর ছয় ওভারে ভারতের ৪৫ রানে ৩ উইকেট তুলে নেয়। ২৫ রানে ফেরায় দুই ওপেনারকে। আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজ তুলে নেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবের উইকেট। ৬ রানে জীবন পাওয়া নিতিশ কুমার ৩৪ বলে ৭৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে ভুগিয়েছেন বাংলাদেশকে। তার সাথে রিংকু সিং শতাধিক রানের জুটি গড়ে ভারতকে চালকের আসনে বসান। দু’জনেই ঝড়ো হাফ সেঞ্চুরি করেন। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-২০তে ভারত প্রথমবার দুই শ’ রান করে। শেষ ওভারে রিশাদ হোসেন ৩ উইকেট নিলেও সর্বোচ্চ ৫৫ রান দেন। তানজিমও ৪ ওভারে দেন ৫০ রান, পান দু’টি উইকেট। তাসকিন ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। সমান সংখ্যক উইকেট পেয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমানও। ৯ উইকেটে ভারত করেছে ২২১ রান।
জবাবে খেলতে নেমে শুরুটা মারদাঙ্গা হলেও ধীরে ধীরে চিরচেনা রূপে ফিরে লাল সবুজের ব্যাটাররা। যা একটু লড়াই করলেন ভারত সিরিজ শেষে টি-২০কে বিদায় বলা মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তাতে শুধু হারের ব্যবধানটাই কমেছে। তার ৪১ রান সত্ত্বেও বাংলাদেশ থামল ৯ উইকেটে ১৩৫ রানে। তাতে ৮৬ রানের আত্মসমর্পণ শান্ত বাহিনীর।

২২২ রানের লক্ষ্য দিয়ে পারভেজ হোসেন ইমনের মারকুটে ব্যাটিংয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিল ভারত। প্রথম ওভারে আর্শদীপ সিংকে তিনটি চার মারেন বাংলাদেশের ওপেনার। ভারতীয় পেসারের পরের ওভারেই তিনি উইকেট হারালেন বোল্ড হয়ে। ১২ বলে ১৬ রান করেন ইমন। ২০ রানে সফরকারীরা প্রথম উইকেট হারাল। বাংলাদেশের বোলারদের অসহায়ত্বের দিনে বড় শট খেলে আউট শান্ত, বরুণের বলে বোল্ড লিটন।
তিন নম্বরে নেমেই প্রথম দুই বলে চার মারেন নাজমুল হোসেন শান্ত। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের আভাস দিয়েছিলেন। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে বড় শট খেলতে গিয়ে লং অনে হার্দিক পান্ডিয়াকে ক্যাচ দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ৭ বলে ১১ রান করে ওয়াশিংটন সুন্দরের শিকার হন শান্ত। ৪০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাঁচ বলের মধ্যে আরেকটি উইকেট হারায় সফরকারীরা। ভরুণ চক্রবর্তীর নিচু বলে বোল্ড হন লিটন দাস। ষষ্ঠ ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেট পেলেন ভারতীয় স্পিনার। ১১ বলে ১৪ রান করেন তিনি। ৪২ রানে তিন উইকেট হারায় চন্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৪৩ রান।

অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম বড় স্কোরের জন্য বিখ্যাত। আইপিএলের শেষ পাঁচ ম্যাচের দশ ইনিংসে দুশোর ওপরে রান উঠে আটবার! এই পরিসংখ্যানই জানান দিয়েছিল দিল্লিতে সিরিজের দ্বিতীয় টি-২০ও বিগ স্কোর হবে। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা সূর্যকুমার বাহিনী শুরুর ৬ ওভারে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর খানিকবাদেই ঘুরে দাঁড়ায়। ১০ ওভারে তুলে নেয় ১০১ রান। পাওয়ার প্লের পরের ৪ ওভারে ভারত তুলল ৫৬ রান। এই পর্যায়ে তিন স্পিনার তুলোধুনো হলেন। সবচেয়ে বেশি আহত হলেন লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন। প্রথম ওভারে রিশাদের খরচা ১১ রান। দ্বিতীয় ওভারে ব্যয় করলেন ২৪। যার মধ্যে ছক্কাই হলো তিন। দুই ওভারে রিশাদের মোট খরচা ৩৫ রান। যাতে ছক্কার মার ৪টি!
নীতিশ রেড্ডি তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় টি-২০তে হাফ সেঞ্চুরির আনন্দে ভাসলেন। ২৭ বলে করলেন ফিফটি। অথচ তার ইনিংস শেষ হতে পারত মাত্র ৩ রানে। তানজিম হাসান সাকিবের বলে উইকেটের পেছনে লিটন দাস ক্যাচটা তালুবন্দী করেও রাখতে পারলেন না। রেড্ডি ও রিঙ্কু মাত্র ৪৫ বলে ১০০ রানের জুটি পুরো করেন। বাউন্ডারির তুলনায় তার ছক্কা হাঁকাতেই বেশি পছন্দ করছিলেন। ৩৪ বলে রেড্ডি ৭৪ রানে ফিরেন শেষমেষ। যাতে বাউন্ডারি মাত্র চারটি। আর ছক্কা সাতটি! রিঙ্কু সিং ২৯ বলে ৫৩ রান করে ফেরেন। শেষতক কুড়ি ওভারে ৯ উইকেটে ২২১ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
ভারত ইনিংস : ২২১/৯ (স্যামসন ১০, অভিষেক ১৫, সূর্যকুমার ৮, নিতিশ কুমার ৭৪, রিঙ্কু সিং ৫৩, হার্দিক ৩২, রাইয়ান ১৫, ভরুন ০, আর্শদীপ ৬, ওয়াশিংটন ০*, মায়াঙ্ক ১*, রিশাদ ৩/৫৫, মোস্তাফিজ ২/৩৬, তানজিম ২/৫০, তাসকিন ২/১৬)।
বাংলাদেশ ইনিংস : ১৩৫/৯ (পারভেজ হোসেন ইমন ১৬, লিটন দাস ১৪, শান্ত ১১, তৌহিদ হৃদয় ২, মিরাজ ১৬, জাকের আলী ১, রিশাদ ৯, তানজিম ৮, মাহমুদুল্লাহ ৪১, তাসকিন ৫*, মোস্তাফিজুর ১*, ভরুন ২/১৯, মায়াঙ্ক ১/৩০, নিতিশ ২/২৩, আর্শদীপ ১/২৬, ওয়াশিংটন ১/৪, অভিষেক ১/১০, রাইয়ান ১/১৬)।
ফল : ভারত ৮৬ রানে জয়ী।
সিরিজ : ২-০ তে এগিয়ে ভারত।


আরো সংবাদ



premium cement