১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১, ৬ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

প্রধান উপদেষ্টার সাথে রুশ রাষ্ট্রদূতের বিদায়ী সাক্ষাৎ

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বাংলাদেশে রাশিয়ার বিদায়ী রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভিকেন্টিভিচ ম্যান্টিটস্কির সাক্ষাৎ : পিআইডি -


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি ম্যান্টিটস্কি।
গতকাল রাজধানীর তেজগাঁও-এ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। সাক্ষাৎকালে ম্যান্টিটস্কি রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে বাংলাদেশে তার দায়িত্ব পালনের তিন বছরের বেশি ঘটনাবহুল সময়ের কথা স্মরণ করেন।
রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন এবং জানান এই কেন্দ্রে আগামী বছর বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে বলে তারা আশা করছেন। প্রকল্পটি মূলত রাশিয়ার অর্থায়ন ও কারিগরি বা বিশেষজ্ঞ সহায়তায় বাস্তবায়ন হচ্ছে।
সাক্ষাতে তারা বাংলাদেশে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি গাজপ্রমের অনুসন্ধান কার্যক্রম, রাশিয়া থেকে গম ও সার রফতানি এবং রূপপুর প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

প্রধান উপদেষ্টা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে রাশিয়ার সহায়তা এবং বাংলাদেশে গম ও সার সরবরাহে রাশিয়ার ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার রূপপুর প্রকল্পের অর্থ পরিশোধের বিষয় সমাধান করবে। তিনি বাংলাদেশে রাশিয়ার আরো বিনিয়োগকে স্বাগত জানান।
উভয় দেশের যৌথভাবে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা এক সাথে কাজ করব।’
সাক্ষাৎকালে প্রধান উপদেষ্টার এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোর্শেদ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক মো: আবুল হাসান মৃধা উপস্থিত ছিলেন।

বিনিয়োগ বাড়াতে স্পেনের প্রতি আহ্বান ড. ইউনূসের
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য স্পেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল ঢাকায় স্পেনের রাষ্ট্রদূত গ্যাব্রিয়েল সিস্টিয়াগা প্রধান উপদেষ্টার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি আরো বলেন, বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ থেকে অনেক সম্পদ লুটপাট হয়েছে, তাই দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধি দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সহায়ক হবে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সাক্ষাৎকালে স্পেনের রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টার কাছে জানতে চান, স্পেন নিজেদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের চলমান সংস্কার উদ্যোগে কিভাবে সহায়তা করতে পারে। অধ্যাপক ইউনূস স্পেনের এই প্রস্তাবের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ যেসব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সংস্কার করার চেষ্টা করছে, সেখানে আপনাদের যেকোনো ধরনের সহযোগিতাকে আমরা স্বাগত জানাব। তিনি সংস্কার কার্যক্রমে সহায়তা প্রদানে বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা খাত এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের অবকাঠামোগত বিনিয়োগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রদূতকে বলেন, স্পেন আমাদের অনেকভাবে সহায়তা করতে পারে। তারা এখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আমাদের পোশাক পণ্যের আমদানি বাড়াতে পারে। এ ছাড়াও উন্নয়ন খাতে স্পেনের কিছু সহায়তা পেলে বাংলাদেশ লাভবান হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

ড. ইউনূস জানান, প্রায় ৬০ হাজার বাংলাদেশী বর্তমানে স্পেনে কর্মরত রয়েছেন। তিনি দেশটিকে প্রযুক্তি ও অপ্রযুক্তিগত উভয় খাতে আরো শ্রমিক নেয়ার আহ্বান জানান।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেয়ায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে স্পেনের প্রেসিডেন্ট পেদ্রো সানচেজের একটি চিঠি হস্তান্তর করেন রাষ্ট্রদূত সিস্টিয়াগা। এ ছাড়া ২০২৫ সালের ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত স্পেনে অনুষ্ঠেয় উন্নয়নের জন্য অর্থায়নবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য স্পেনের প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান।
অধ্যাপক ইউনূস রাষ্ট্রদূতকে স্পেনের রানি সোফিয়াকে তার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিতে বলেন এবং রানীকে আবার বাংলাদেশে আসার আমন্ত্রণ জানান।

 


আরো সংবাদ



premium cement