০৯ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১, ৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বাজার নিয়ন্ত্রণে সাড়ে ৪ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি

-

ডিমের দাম বাড়ছেই। এ পরিস্থিতিতে সরকার সাড়ে ৪ কোটি পিস ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে। এ ডিম আমদানি করতে হলে মানতে হবে কিছু শর্ত। এ ছাড়া বাজারে ডিমের দাম কমাতে ডিম আমদানির ওপরে থাকা শুল্ককর সাময়িকভাবে প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। বর্তমানে ডিম আমদানির ওপর ৩৩ শতাংশ কর-শুল্ক রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। অন্য দিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে লেখা এক চিঠিতে ডিম আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান শুল্ককর প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল জানানো হয়েছে, বর্তমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় ও বাজারদর স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সাময়িকভাবে ও সীমিত সময়ের জন্য সাতটি প্রতিষ্ঠানকে ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠান মোট সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানি করতে পারবে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য মতে বর্তমানে দেশে প্রতিদিন পাঁচ কোটি ডিমের চাহিদা রয়েছে।
ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঢাকার দক্ষিণ যাত্রাবাড়ীর মেসার্স মিম এন্টারপ্রাইজকে এক কোটি পিস, যশোর চৌরাস্তা মোড়ের মেসার্স তাওসিন ট্রেডার্সকে এক কোটি পিস, সাতক্ষীরার লবশা এলাকার মেসার্স সুমন ট্রেডার্সকে ২০ লাখ পিস, রংপুরের ভগী এলাকার আলিফ ট্রেডার্সকে ৩০ লাখ পিস, রাজধানীর মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকার হিমালয়কে এক কোটি পিস, শান্তিনগরের মেসার্স প্রাইম কেয়ার বাংলাদেশকে ৫০ লাখ পিস এবং তেজকুনিপাড়ার মেসার্স জামান ট্রেডার্সকে ৫০ লাখ পিস ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বর মাসেও এক দফায় ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু সেই ডিম আমদানি বাজারের ওপর তেমন কোনো প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি।

এবার ডিম আমদানি করার ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত দেয়া হয়েছে। প্রথম শর্ত হলো এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লুমুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে। তৃতীয়ত, ডিম আমদানির প্রতিটি চালানের কমপক্ষে ১৫ দিন আগে সংশ্লিষ্ট সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তাকে জানাতে হবে। চতুর্থত, আমদানির অনুমতি পাওয়ার পরে সাত দিন পর পর অগ্রগতি প্রতিবেদন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দাখিল করতে হবে।
শুল্কছাড়ের সুপারিশ : এনবিআরের কাছে পাঠানো চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, সম্প্রতি স্থানীয় বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতির কারণে এর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। ডিমের এমন অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে পণ্যটি আমদানিতে সাময়িক সময়ের জন্য শুল্ককর প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। তবে কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড়ের বিষয়ে এনবিআর থেকে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে চিঠিতে উল্লেখ করে ট্যারিফ কমিশন।
বর্তমান ডিম আমদানিতে মোট ৩৩ শতাংশ শুল্ককর রয়েছে বলে জানায় ট্যারিফ কমিশন। কমিশন জানায়, এ শুল্ককর অব্যাহত রাখলে আমদানি করা ডিম স্থানীয় বাজারে দামের ক্ষেত্রে তেমন প্রভাব রাখবে না। ট্যারিফ কমিশন চিঠিতে বলেছে, এ জন্য আমদানি পর্যায়ে ডিমের ওপরে থাকা শুল্ককর স্বল্প সময়ের জন্য প্রত্যাহার করা হলে সাধারণ জনগণ স্বস্তির জায়গা খুঁজে পাবে। এ অবস্থায় ডিমের ওপর সুনির্দিষ্ট মেয়াদে শুল্ককর প্রত্যাহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এনবিআর চেয়ারম্যানের কাছে পুনরায় অনুরোধ জানায় ট্যারিফ কমিশন।
এ দিকে, মাসখানেক ধরে বাজারে ডিমের দাম কয়েক দফায় বেড়েছে। গতকাল ঢাকার বড় বাজারগুলোয় প্রতি ডজন মুরগির বাদামি ডিম ১৫৫-১৬০ টাকা ও পাড়া-মহল্লায় তা ১৭০-১৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ কয়েক সপ্তাহ আগে এ ধরনের মুরগির ডিম ১৪০-১৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ বাজারে ডিমের যে চাহিদা রয়েছে, তার চেয়ে কম ডিম বাজারে আসছে। মূলত এ কারণেই দাম বেড়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল