০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
একনেক শেষে ড. ওয়াহিদউদ্দিন

দুর্নীতি কিছুটা কমেছে, তবে চাঁদাবাজি কমেনি

-

উন্নয়ন প্রকল্পের গাড়ি কোথায় যায় এবং একজন অফিসার কয়টা জিপ-গাড়ি ব্যবহার করেন এসব খুঁজে বের করা হবে। এ জন্য একনেক সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, জেলা উপজেলাসহ সারা দেশে সরকারি যেসব গাড়ি আছে তার একটি তালিকা করা হবে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, দুর্নীতি কিছুটা কমেছে, তবে চাঁদাবাজি তেমন কমেনি।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দ্বিতীয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেন। তিনি জানান, সভায় ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে সরকারের খরচ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৪১২ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে সাত হাজার ৭৪৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, প্রকল্প ঋণসহায়তা থেকে ১৬ হাজার ১২ কোটি ৩৩ লাখ টাকা এবং বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৬৫৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা নেয়া হবে।
ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব আছে। আমরা এখন বিবিএসের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিয়েছি। তারা যে হিসাব নিয়ে আসে আমি আইনগতভাবে শুধু সই করা ছাড়া আর কিছুই দেখি না। তিনি বলেন, দেশে বেসরকারি বিনিয়োগ কম। এ দিকে আমরাও অনেক বেছে ও যাচাই-বাছাই করে প্রকল্প নিচ্ছি। আবার যেসব রাজনৈতিক প্রকল্প আছে, যেগুলোর কিছু এখনো শুরু হয়নি সেগুলো নেয়া হচ্ছে না। যেসব রাজনৈতিক প্রকল্পের কাজ শেষের পথে সেগুলোর প্রয়োজনীয়তা না থাকলে শেষ করা হচ্ছে। ফলে সরকারি বিনিয়োগও কম হচ্ছে। ফলে অর্থপ্রবাহ কমে গেছে।

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, চলতি প্রকল্পগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। তাই সময় লাগছে। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ কম হওয়ায় প্রকল্প ধীরগতিতে, এগুলোর অর্থপ্রবাহ বাড়বে না। অর্থপ্রবাহ বাড়াতে আগের প্রকল্পের কাজ এগোতে হবে। নতুন কিছু প্রকল্প হাতে নিতে হবে। তবে আগে থেকে চলমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধির আগে ব্যয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রকল্পের আওতায় বড় বড় অবকাঠামো নির্মাণ কিংবা গাড়ি কেনার চেয়ে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি, পার্ক ও লাইব্রেরি নির্মাণ, জলাধার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হবে। এত দিন সরকারি প্রকল্পের আওতায় সারা দেশে কতগুলো গাড়ি কেনা হয়েছে, সেগুলো কোথায় আছে, কিভাবে ব্যবহার হচ্ছে সব খতিয়ে দেখবে সরকার। প্রকল্প শেষ হলে গাড়িগুলো কেন আর খুঁজে পাওয়া যায় না তা যাচাই করা হবে। ওয়াহিদউদ্দিন বলেন, ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের টাঙ্গাইল পর্যন্ত হয়ে স্থবির হয়ে আছে। সেখানে যথেষ্ট বিদেশী অর্থায়ন আছে। সুদের হারও কম। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। বর্তমান সরকার বিদেশী অর্থায়নের প্রকল্পগুলোকে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা বাড়িয়ে রাজধানীকে বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগে রাজনৈতিক নানা কার্যক্রম ছিল। মিছিল, মিটিং সমাবেশ হলে ট্রাক ভাড়া করে লোক আনা হতো। এতে অর্থপ্রবাহ বাড়ত। এখন তো সেসব কার্যক্রম নেই। আমি বলছি না, ফের সেসব চালু করা হবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন দুর্নীতি ও চাঁদাবাজি বন্ধ রয়েছে।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে- সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প-২ এলেঙ্গা- হাটিকামরুর-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প। রিজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট। কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর একটি রেল-কাম রোড সেতু নির্মাণ প্রকল্প। মাতারবাড়ী পোর্ট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প। এ ছাড়া সাতটি প্রকল্পের ব্যয় না বাড়িয়ে শুধু মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement