০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৩ আশ্বিন ১৪৩১, ৪ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

চিকিৎসায় নোবেল জিতলেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী

-

চলতি বছর চিকিৎসাশাস্ত্রে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক নোবেল পুরস্কার জিতে নিলেন দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন। ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি ‘মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকার জন্য’ তাদের এ পুরস্কার দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নোবেল কমিটি গতকাল বিকেলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানায়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকুন কিভাবে বিভিন্ন কোষের বিকাশ ঘটে সে সম্পর্কে জানতে আগ্রহী ছিলেন। তারা মাইক্রো আরএনএ আবিষ্কার করেছেন। এটি একটি নতুন শ্রেণীর ক্ষুদ্র আরএনএ অণু, যা জিন নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের যুগান্তকারী আবিষ্কার জিন নিয়ন্ত্রণের একটি সম্পূর্ণ নতুন নীতি প্রকাশ করেছে, যা মানুষসহ বহুকোষী জীবের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।’
দুই বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের গুরুত্ব তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এটি এখন জানা গেছে যে, মানব জিনোম এক হাজারেরও বেশি মাইক্রো আরএনএ’র জন্য কোড করে। তাদের আশ্চর্যজনক আবিষ্কার জিন নিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ নতুন মাত্রা প্রকাশ করেছে। মাইক্রো আরএনএ জীব কিভাবে বিকাশ লাভ করে ও কাজ করে তার জন্য মৌলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হচ্ছে।’

এ বছরের নোবেল পুরস্কার জিন কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোষে ব্যবহৃত একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া আবিষ্কারের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। জেনেটিক তথ্য ডিএনএ থেকে ট্রান্সক্রিপশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মেসেঞ্জার আরএনএ-তে এবং এরপর প্রোটিন উৎপাদনের জন্য কৌষিকতন্ত্রে প্রবাহিত হয়। সেখানে এমআরএনএগুলো ডিএনএতে সঞ্চিত জেনেটিক নির্দেশাবলি অনুসারে যাতে প্রোটিনগুলো তৈরি হয় সেভাবে রূপান্তরিত হয়। ২০ শতকের মাঝামাঝি থেকে বেশ কয়েকটি মৌলিক বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এই প্রক্রিয়াগুলো কিভাবে কাজ করে তা ব্যাখ্যা করেছে।
সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে নোবেল পুরস্কার ঘোষণার প্রথম দিন করোনাভাইরাসের টিকার প্রযুক্তি আবিষ্কারের জন্য দুই বিজ্ঞানীকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়। তারা হলেন, ক্যাটালিন ক্যারিকো ও ড্রু ওয়েইসম্যান। ১৯০১ সাল থেকে সুইডেনের ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট এ পুরস্কার প্রদান করে আসছে। চিকিৎসাশাস্ত্রে এবারের পুরস্কার হিসেবে দুই বিজ্ঞানী পাচ্ছেন প্রায় ১১ লাখ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশী টাকায় অঙ্কটা প্রায় ১৩ কোটি। ৭০ বছর বয়সী ভিক্টর অ্যামব্রোস ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুয়েটস মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক আর ৭২ বছর বয়সী রাভকুন হচ্ছেন হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের অধ্যাপক।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ‘আমাদের ক্রোমোজোমের মধ্যে সঞ্চিত তথ্যগুলোকে শরীরের সব কোষের জন্য একটি নির্দেশাবলির সাথে তুলনা করা যেতে পারে। প্রতিটি কোষে একই ক্রোমোজোম থাকে, তাই প্রতিটি কোষে ঠিক একই সেট জিন এবং হুবহু একই নির্দেশাবলি থাকে। তবুও বিভিন্ন কোষের ধরন, যেমন পেশি এবং স্নায়ুকোষের সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে। কিভাবে এই পার্থক্য উদ্ভূত হয়? উত্তরটি রয়েছে জিন নিয়ন্ত্রণে, যা প্রতিটি কোষকে শুধু প্রাসঙ্গিক নির্দেশাবলি নির্বাচন করতে বাধ্য করে। এটি নিশ্চিত করে যে, প্রতিটি কোষের মধ্যে শুধু সঠিক জিনের সেট সক্রিয় রয়েছে।’

 

 


আরো সংবাদ



premium cement