০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

সেনাবাহিনীতে সৎ অফিসাররাই পদোন্নতির দাবিদার : প্রধান উপদেষ্টা

সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ উদ্বোধন
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪’ এ অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের সাথে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন : আইএসপিআর -


অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেনাবাহিনী সদর দফতরে ‘সেনাসদর নির্বাচনী পর্ষদ-২০২৪-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন।
আইএসপিআর গতকাল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রথম পর্বের এই পদোন্নতি পর্ষদে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কর্নেল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদবির যোগ্য কর্মকর্তারা পরবর্তী পদোন্নতির জন্য বিবেচিত হবেন।
প্রধান উপদেষ্টা পদোন্নতি পর্ষদের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে তার বক্তব্যে ছাত্র-জনতার বিপ্লবে সিক্ত নতুন বাংলাদেশে সবাইকে স্বাগত জানান। এ সময় তিনি জুলাই-আগস্ট মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সবাইকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সশস্ত্র বাহিনী তথা সেনাবাহিনীর শহীদসহ সব বীর সেনানিদেরও স্মরণ করেন, যাদের আত্মত্যাগ জাতি চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা পদোন্নতির জন্য অফিসারদের পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলি, শৃঙ্খলার মান, সততা, বিশ্বস্ততা ও আনুগত্য এবং সর্বোপরি নিযুক্তিগত উপযুক্ততার ওপর গুরুত্ব অরোপ করতে নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের নির্দেশনা প্রদান করেন। সৎ, নীতিবান ও নেতৃত্বের অন্যান্য গুণাবলি সম্পন্ন অফিসারগণই উচ্চতর পদোন্নতির দাবিদার বলে তিনি মন্তব্য করেন।

তা ছাড়া রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে যেসব অফিসার সামরিক জীবনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যোগ্য নেতৃত্ব প্রদানে সফল হয়েছেন সেসব অফিসারদেরকে পদোন্নতির জন্য নির্বাচন করার নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, দেশের ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে দেশকে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতির হাত থেকে রক্ষা করেছে। ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আবারো দেশের মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলে তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছলে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী, চিফ অব জেনারেল স্টাফ এবং সশস্ত্রবাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাকে স্বাগত জানান।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা সচিবও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান উপদেষ্টা সেনাবাহিনীর উপস্থিত কর্মকর্তাদের সাথে ফটোসেশনে অংশগ্রহণ করেন এবং পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিপিবদ্ধ করেন।
‘সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর’

প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বর্তমান সরকার মানুষের বাসস্থানসহ সব মৌলিক অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, সংবিধানের ১৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসা মানুষের মৌলিক অধিকার।
‘বিশ্ব বসতি দিবস’ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। আজ (৭ অক্টোবর) দিবসটি পালিত হবে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘তরুণদের সম্পৃক্ত করি, উন্নত নগর গড়ি’।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেশের উন্নয়নকে বেগবান ও টেকসই করার লক্ষ্যে এসব প্রতিকূলতাকে নির্মূল করার জন্য সরকার সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশের অনেক শহরের মতোই বাংলাদেশের শহর বা নগরগুলো এখনো অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই নগর উন্নয়ন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে নাই। দারিদ্র্য, বৈষম্য, দুর্নীতি, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিশৃঙ্খলা, নাগরিক নিরাপত্তাহীনতা, পরিবেশগত বিপর্যয় তথা জলবায়ু পরিবর্তনের নানা অভিঘাতে ভুগছে এ দেশের ছোটো-বড় বিভিন্ন শহর।
মুহাম্মদ ইউনূস প্রযুক্তিগত জ্ঞান, উৎকর্ষ ও তরুণদের উদ্যোগ আর প্রবীণ অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান আমাদের দেশে উন্নত ও নিরাপদ নগর প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার নিরাপদ বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘ ১৯৮৬ সাল থেকে প্রতি বছর অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার ‘বিশ্ব বসতি দিবস’ হিসেবে উদযাপন করে আসছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement