০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১, ৩ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ

-


টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই হওয়া বাংলাদেশের সামনে ছিল নতুন চ্যালেঞ্জ টি-২০ সিরিজ। সেই লক্ষ্যে মাঠে নামার আগে নতুন জার্সি উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জার্সিতে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে লাল রঙকে। ক্রিকেটারদের নতুন জার্সির ভাগ্য ফেরাতে পারেনি। একই ধারাবাহিকতায় উইকেট বিলিয়ে দিয়েছেন ব্যাটাররা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে আসা যাওয়ার মিছিলে ছিলেন অভিজ্ঞ ব্যাটাররা। অপেক্ষাকৃত ভারতের তরুণ তুর্কিরা কোনোরকম পাত্তাই দেয়নি টাইগার ব্যাটারদের। ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৩৫ রানে। তিনটি করে উইকেট নেন আর্শদিপ ও বরুন চক্রবর্তী। জবাবে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তুলোধুনো করে ৪৯ বল বাকি থাকতে তিন উইকেটে ১৩২ রান করে ৭ উইকেটের জয় তুলে নেয় ভারত। তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজের প্রথমটিতে জিতে ১-০ তে এগিয়ে গেল ত্রিরঙ্গারা।
টেস্ট সিরিজের দুঃস্মৃতি পেছনে ফেলে নতুন লক্ষ্য নিয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে সাকিববিহীন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ খেলেছে ১৭৬টি ম্যাচ। সাকিব খেলেছেন ১২৯টি। অল্পকিছু ম্যাচ যেগুলো খেলা হয়নি, সেসব ইনজুরি নয়তো ছুটি নেয়ার কারণে। ভারতের মতো শক্ত প্রতিপক্ষের কাছে সাকিববিহীন বাংলাদেশ কেমন করে সেটাই ছিল দেখার।

টস জিতে প্রথমে বাংলাদেশকেই ব্যাট করতে পাঠায় ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। মাত্র ৪৩ রানে ৪ উইকেট হারায় টাইগাররা। ৪ রান করে আউট হন লিটন দাস। পারভেজ হোসেন ইমন বোল্ড হন ৮ রানে। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত এবং তৌহিদ হৃদয় মিলে চেষ্টা করেন শুরুর বিপর্যয় সামাল দেয়ার। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ দুই উইকেটে ৩৯ রান তোলে। বাংলাদেশ দল ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু ২৬ রানের জুটি গড়ার পর ভেঙে গেল এই জুটিও। ১৮ বলে ১২ রান করে আউট হন হৃদয়।
মাহমুদুল্লাহ (১) ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন বাউন্ডারি লাইনে ক্যাচ দিয়ে। মায়াঙ্ক যাদবের বলে তার ক্যাচটি ধরেন ওয়াশিংটন সুন্দর। জাকের আলীও দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। বরুনের গুগলিতে বোকা বনে বোল্ড হন ডানহাতি এই ব্যাটার। ৬ বলে ১ ছক্কায় ৮ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তাতে দশ ওভারে ৫৭ রানে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের। কিছুটা টিকে ছিলেন অধিনায়ক শান্ত। নিচু হয়ে আসা স্লো বল বোলার ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতেই তুলে দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ২৭ রানে শেষ হলো তার ইনিংস। দলীয় ৭৫ রানে ৬ উইকেটের পতন।

রিশাদ এসেও থিতু হতে পারেননি। বরুনের বলে হার্দিককে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৫ বলে একটি করে চার ছক্কায় ১১ রান করে। তাতে বরুনের ৩ উইকেট প্রাপ্তি হয়। সাত উইকেট হারিয়ে শতরান পার করে বাংলাদেশ। ১৫তম ওভারের শেষ বলে ওয়াশিংটনকে মিরাজ বাউন্ডারি হাঁকালে বাংলাদেশের রান ৯৮ থেকে ১০২ তে যায়। ১৫ ওভার শেষে ৭ উইকেটে বাংলাদেশের রান ১০২। তাসকিন মিরাজের সাথে ভুল বুঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে ফিরলেন ১৩ বলে ১২ রান করে। শরিফুল দুই বল খেলে হার্দিকের বলে বোল্ড শূন্য রানে। ১৮ ওভারে ৯ উইকেটে ১১৭ রান টাইগারদের। বাকি দুই ওভার মোস্তাফিজকে নিয়ে নির্বিঘেœ কাটিয়ে দিতে পারেননি মিরাজ। আর্শদিপের বলে বোল্ড হন মোস্তাফিজ (১)। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে থামতে হয় ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানে। মিরাজ ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। তারা ১.৬ ওভারে তুলে নেন ২৫ রান। হঠাৎ তৌহিদ হৃদয়ের থ্রোতে রান আউটে কাটা পড়েন অভিষেক। ৭ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ১৬ রান করেন তিনি। ৫.৩ ওভারে দলীয় ৬৫ রানে মোস্তাফিজের বলে জাকের আলীকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন অধিনায়ক সুরিয়াকুমার। ১৪ বলে দুই চার তিন ছক্কায় ২৯ রান করেন তিনি। দলীয় ৮০ রানে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফিরেন ওপেনার সঞ্জু স্যামসন। মিরাজের বলে রিশাদকে ক্যাচ দেয়ার আগে তুলে নেন ১৯ বলে ৬ চারে ২৯ রান। ১০ ওভারেই শতরান পার করে স্বাগতিকরা। জয়ের বাকি কাজটা সারেন নিতিশ কুমার ও হার্দিক পান্ডিয়া। ১১.৫ ওভারেই জয়ের বন্দরে নোঙর করে ভারত। নিতিশ ১৬ রানে এবং হার্দিক ১৬ বলে ৫ চার ও দুই ছক্কায় ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :
বাংলাদেশ ইনিংস : ১৯.৫ ওভারে ১২৭/১০ (মিরাজ ৩৫*, মোস্তাফিজ ১, শরিফুল ০, তাসকিন ১২, রিশাদ ১১, শান্ত ২৭, জাকের ৮, মাহমুদুল্লাহ ১, হৃদয় ১২, ইমন ৮, লিটন ৪, বরুন ৩১/৩, হার্দিক ২৬/১, মায়াঙ্ক ১/২১, ওয়াশিংটন ১/১২, আর্শদিপ ৩/১৪)।
ভারত ইনিংস : ১১.৫ ওভারে ১৩২/৩ (অভিষেক শর্মা ১৬, সুরিয়াকুমার ২৯, সঞ্জু স্যামসন ২৯, হার্দিক ৩৯*, নিতিশ ১৬*, মোস্তাফিজ ১/৩৬, মিরাজ ১/৭, তাসকিন ০/৪৪, রিশাদ ০/২৬, শরিফুল ০/১৭)।
ফল : ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : ১-০ তে এগিয়ে ভারত।

 


আরো সংবাদ



premium cement