০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`
বাজার দর

ডিমের ডজন ১৮০ সবজির দামও বাড়তি

-


বাজারে এক ডজন ডিমের দাম ১৭০ টাকায় উঠেছে, যা গত সপ্তাহের চেয়ে ১০ টাকা বেশি। আর পাড়া-মহল্লায় দোকানে ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত। প্রতি সপ্তাহেই রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে ডিমের দাম; যা নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
এ দিকে গত সপ্তাহের চেয়ে আরো বেড়েছে সবজির দাম। চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। আর পেঁয়াজের দাম সামান্য কমতে দেখা গেছে। শুক্রবার রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে এই চিত্রই দেখা গেছে।
বিক্রেতারাই বলছেন, ডিমের দাম একদম অস্থিতিশীল। দুই-তিন সপ্তাহ ধরেই ডিম কিনতে কষ্ট হচ্ছে নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের। এখন ডিমের দাম শুনে অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন। বাজারে খুচরায় প্রতিটি ডিম ১৫ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
এ দিকে কৃষি বিপণন অধিদফতর গত ১৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশে উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা দাম নির্ধারণ করে দেয়। সে হিসাবে ডিমের হালি খুচরা পর্যায়ে ৪৭ টাকা ৪৮ পয়সায় বিক্রি হওয়ার কথা। অথচ এখন প্রতি হালি কিনতে হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকায়। সে হিসাবে হালিতে ১১ থেকে ১২ টাকার বেশি গুনতে হচ্ছে গ্রাহককে।
অন্য দিকে বাজারে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে এক সপ্তাহ আগে। ব্রয়লার মুরগি এখনো ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি মুরগির দামও ১০ টাকা বেড়ে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা হয়েছে।
এ ছাড়া বাজারে বেশ কয়েক মাস ধরে চড়া রয়েছে আলু ও পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ভারত পেঁয়াজ রফতানিতে শর্ত শিথিল ও শুল্ক কমানোর পর দেশের পেঁয়াজের দাম অল্প কিছুটা কমেছে। আগে যেটি ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, সে পেঁয়াজ এখন ১১০ থেকে ১১৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

অন্য দিকে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের সপ্তাহের থেকে বেশ কিছু সবজির দাম কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা করে বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, টানা কয়েক দিন বৃষ্টির কারণে সবজির সরবরাহ কমেছে। অনেক সবজি ক্ষেতে নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া এখন গ্রীষ্মের মৌসুমের সবজিগুলো সরবরাহ শেষ দিকে, আর শীত মৌসুমের আগাম সবজির সরবরাহ কম। দুই মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এখন দাম বাড়ছে।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা আজহার আলী বলেন, গ্রীষ্মের মৌসুম শেষে, শীতের মৌসুম শুরুর আগের এ সময়টি প্রতি বছর সবজির দাম একটু বেশিই থাকে। এ ছাড়া বৈরী আবহাওয়ার কারণে সবজির সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার মোকামগুলোতে এখন সবজির দাম বেশি।
পেঁপে ছাড়া বাজারে ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। তাও ৬০ থেকে ৭০ টাকায় শুধু পটোল মিলছে। ঢেঁড়স, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, কচুরমুখী বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে। বরবটি, কাঁকরোল, করলা, বেগুন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হতে দেখা গেছে। এ ছাড়া শীতের আগাম সবজি শিম বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। প্রতি পিস ছোট ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

কাউখালী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, পিরোজপুরের কাউখালীতে বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ ক্রেতারা বাজার করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে। অন্য দিকে বাজার মনিটরিং দুর্বল থাকার কারণে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রতিটি জিনিসের দাম। ক্রেতারা আক্ষেপ করে বলেন, কোন দেশে বাস করছি, সামান্য একটু সবজিও কিনতে পারছি না। মাছ-গোশতের কথা বাদই দিলাম। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় উপজেলার দক্ষিণ বাজারে হাটের দিনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেল প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য দাম ক্রেতাদের নাগালের বাহিরে।
প্রতি কেজি বেগুন ১২০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, গাজর ২০০ টাকা, বরবটি ৮০ টাকা, টমেটো ১৮০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, রেহা ৬০ টাকা, পাতাকপি ৭০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ৩২০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, কচুর গাড়ি ৬০ টাকা, আলু ৫৫ টাকা, করলা ৭০ টাকা,পটোল ৫০ টাকা, ছোট এক পিস লাউ ৮০ টাকা, এক আটি লাউ শাক ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার করতে আসা ক্রেতা সরোয়ার হোসেন বলেন, বর্তমানে বাজারে যেভাবে সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ছে তাতে করে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই।
কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজল মোল্লা বলেন, আমরা বাজার মনিটরিং জোরদার করার চেষ্টা করছি। আশা করি কিছু দিনের মধ্যেই বাজারদর নিয়ন্ত্রণে আসবে।


আরো সংবাদ



premium cement