০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১,
`

বৃষ্টিতে কুষ্টিয়ায় ফসলের ক্ষতি ১০ কোটি টাকার বেশি

-

শরতের শুরু থেকে বৃষ্টি হেমন্তে এসেও শেষ হচ্ছে না। বৃষ্টির মাত্রা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সর্বত্র বৃষ্টিতে রেকর্ড ছাড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে প্রতিনিয়ত। সারা দেশের মতো কুষ্টিয়ার অবস্থা একই রকমের। অতি বৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ দিন দিন বেড়েই চলেছে। কয়েক দফা অতি বর্ষণে কুষ্টিয়ার মাঠে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। জেলার ফসলের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকার বেশি বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মধ্যে রয়েছে আমন ধান, কলা, সবজি, মাষকলাই, তুলা, মরিচ, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও পেঁপে। এ ছাড়া রয়েছে আখ। কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেয়া তথ্যমতে, সেপ্টেম্বরের মাঝে ও শেষে দফায় দফায় কয়েক দিনের অতি বৃষ্টির প্রভাবে কুষ্টিয়ার ছয়টি উপজেলায় কয়েক হাজার কৃষকের ক্ষতি হয়েছে। যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। কুষ্টিয়া সদর, খোকসা, কুমারখালী, মিরপুর, ভেড়ামারা ও দৌলতপুর উপজেলার আক্রান্ত ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ৮৯০ হেক্টর। জেলাজুড়ে আমন ধান, কলা, সবজি, মাষকলাই, তুলা, মরিচ, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ ও পেঁপের এ বছর আবাদ হয়েছিল ১ লাখ ৫ হাজার ৩২৭ হেক্টর। এর মধ্যে এখনো অক্ষত আছে এক লাখ এক হাজার ৯২৪ হেক্টর জমির ফসল। এই অতি বৃষ্টিতে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কলাচাষিদের। ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণের দিক দিয়ে মাষকলাইয়ের ক্ষতিগ্রস্ত জমির পরিমাণ ৩৩ দশমিক ৫৯ হেক্টর।

এ ছাড়া কৃষি অফিসের দেয়া তথ্য মতে পদ্মার পানি বাড়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার চর এলাকা চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের নিচু চর ডুবে মাষকলাই এবং মরিচের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে সম্ভাব্য মাষকলাইয়ের পরিমাণ এক হাজার ৬৭৯ হেক্টর এবং মরিচ ৭০ হেক্টর। যার ক্ষতির বাজারমূল্য নির্ধারিত হয়নি এখনো। জেলার বিভিন্ন স্থানে আখের চাষ রয়েছে। অতি বৃষ্টির কারণে চাষিদের রোপণ করা আখ পড়ে যাওয়ায় চাষিরা আর্থিকভাবে দারুণ ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। স্থানীয় আখ চাষি মিজানুর রহমান জানান, মোবারকগঞ্জ চিনিকলের আওতায় ৪০ বিঘা জমিতে আখ রোপণ করেছি। আর মাত্র ২ মাস পর মিলে আখ সরবরাহ করব কিন্তু শেষে এসে একেবারেই বৃষ্টির কারণে মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে পড়েছি। তিনি জানান, শুধু আমি না এলাকার শত শত আখ চাষির আখ বৃষ্টির কারণে মাটিতে শুয়ে পড়ছে। আর এই আখ তুলতে কয়েক দফায় অতিরিক্ত লেবারের খরচ বেড়েছে। অল্প কয়েক দিনের ব্যবধানে তিনবার আখ তুলতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে যা লোকসান গুনতে হবে।
কুষ্টিয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক সুফি মো: রফিকুজ্জামান জানান, সেপ্টেম্বর মাসে বৃষ্টি এবং পদ্মার পানি বাড়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পরবর্তী চাষাবাদে পরামর্শ এবং প্রণোদনা দেয়া হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement