২০ হাজার ভিসা আবেদনকারীর পাসপোর্ট ফেরত দিল ভারতীয় হাইকমিশন
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:৪২
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর কার্যত ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন বাংলাদেশীদের ভিসা প্রদান স্থগিত রেখেছে। ভারতীয় মিডিয়া দি প্রিন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, প্রতিবাদ ও হুমকির মুখে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন এসব বাংলাদেশী ভিসা আবেদনকারীর পাসপোর্ট ফেরত দিয়েছে। শুধু মেডিক্যাল বা স্টুডেন্ট ভিসাসহ মাত্র কয়েক শ’ জরুরি অনুরোধ আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে।
প্রিন্টের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনে কিছু হুমকিমূলক ই-মেইলসহ প্রতিবাদ এবং জোরালো শব্দের ই-মেইলের পরে ২০ হাজার বাংলাদেশী ভিসা আবেদনকারীদের পাসপোর্ট ফেরত দেয়া হয়। বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ভিসা পরিষেবা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত থাকায়, পাসপোর্টগুলো ভারতীয় হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে ছিল। ভারতীয় সরকারি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে জরুরি ভিসার জন্য মাত্র কয়েক শ’ অনুরোধ বিবেচনা করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রাথমিকভাবে মেডিক্যাল, স্টুডেন্ট এবং ডাবল এন্ট্রি ভিসা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। গত মাসে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের কারণে বিক্ষোভের পর থেকে বাংলাদেশে ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলো অনেকাংশে বন্ধ থাকায়, অনেক আবেদনকারীর পাসপোর্ট ঢাকার হাইকমিশনের কাছে থেকে যায়। উত্তেজিত আবেদনকারীরা হাইকমিশনকে বেশ কয়েকটি ই-মেইল পাঠায় এবং এসব ই-মেইলের ক’টিতে ভাঙচুরের হুমকি দেয়া হয়। ভারতীয় ভিসা আবেদন কেন্দ্রগুলোতে কর্মীদের হেনস্তা করার ঘটনাও ঘটে। অনেকে হাইকমিশনকে ট্যাগ করে সোশ্যাল মিডিয়ায় হুমকিও দিয়েছেন।
প্রিন্ট’এর তথ্যমতে, ঢাকায় একটি ভারতীয় হাইকমিশন এবং অন্যান্য চারটি কনস্যুলেট ভারতে সর্বাধিকসংখ্যক বাংলাদেশী নাগরিকদের ভিসা দিয়ে আসছে। গত বছর বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্যে কমপক্ষে ১৬ লাখ ভিসা ইস্যু করা হয়েছে। ১৬ লাখ ভিসার মধ্যে সাড়ে চার লাখ ছিল মেডিক্যাল ভিসা। একইভাবে, চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ভারত দুই লাখ মেডিক্যাল ভিসাসহ বাংলাদেশী নাগরিকদের ৮ লাখ ভিসা দিয়েছে। ভারত বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য ১৫টি ক্যাটাগরির ভিসা দিয়ে থাকে।
সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রিন্ট বলছে গত ৫ আগস্ট থেকে ভিসা ইস্যু করা বন্ধ রয়েছে। কর্মী স্বল্পতার পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে ভিসা না দেয়ার সচেতন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। শুধু কিছু জরুরি ক্ষেত্রে যেমন চিকিৎসা, ভারতে শিক্ষা কোর্সে যোগদানকারীদের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা এবং কিছু ক্ষেত্রে তৃতীয় দেশের ভিসার জন্য আবেদন করতে ভারতে আসতে হয় এমন লোকদের জন্য ডবল এন্ট্রি ভিসার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
ওই সূত্রটি আরো জানায়, যেহেতু বাংলাদেশে ইউরোপের কয়েকটি দেশের কূটনৈতিক মিশন নেই, সেহেতু বাংলাদেশী নাগরিকরা ভারত থেকে ভিসার জন্য আবেদন করে সেসব দেশে ভ্রমণ করতে চায়। তাদের বেশির ভাগই ব্যবসার জন্য ভ্রমণ করতে হয়। এ ধরনের জরুরি আবেদনের জন্য এই অনুরোধগুলোর কিছু বিবেচনা করা হচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে অমীমাংসিত পাসপোর্টগুলো ফেরত দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া দুর্গাপূজার উৎসবকে কেন্দ্র করে ভিসার জন্য অনুরোধে একটি বাড়তি আবেদন পড়ছে। দুর্গাপূজা ঘনিয়ে আসায় অনেক বাংলাদেশী নাগরিক এর জন্য পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ করেন। তাই, অনেক অনুরোধ আসছে। কিন্তু এ প্রেক্ষাপটে ভিসা প্রদান স্থগিত হয়ে পড়ায় কলকাতার বাজারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারণ লোকেদের পশ্চিমবঙ্গে ভ্রমণ করা বন্ধ রয়েছে।
জরুরি ভিসার অপব্যবহার হচ্ছে এমন অভিযোগও রয়েছে। এ ক্ষেত্রে উদাহারণ টেনে বলা হয়েছে, ‘টাইগার রবি, যিনি বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচে একজন পরিচিত মুখ এবং প্রায়ই তার দলকে উৎসাহিত করার জন্য বাঘের পোশাক পরেন, তিনি মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে এসেছিলেন এবং কানপুরের গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে (গত সপ্তাহে) দেখা গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, ভারতীয় মিডিয়ায় টাইগার রবি খেলার মাঠে আক্রমণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এমন প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। আবার দেখা যায় বাংলাদেশ থেকে কোনো ব্যক্তি চিকিৎসা ভিসায় ভারতে যান; কিন্তু তিনি চিকিৎসার জন্যে ভ্রমণ করেন না। এ কারণে ভারতীয় হাইকমিশন অতিরিক্ত সতর্ক হচ্ছে। তবে ভারত প্রতি বছর লাখ লাখ বাংলাদেশী নাগরিকদের ভিসা দেয় এবং বাংলাদেশে ‘হঠাৎ ক্ষমতার পরিবর্তন’ এর কারণে প্রক্রিয়াটি ব্যাহত হয়, যার ফলে বাংলাদেশীদের মধ্যে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা