২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১, ২৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
স্বাস্থ্য উপ-কমিটির প্রাথমিক তালিকা

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ১৫৮১, আহত ৩১ সহস্রাধিক

-

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মে শুরু হয় সফল এক আন্দোলন। শুরুতে ছাত্র আন্দোলন থাকলেও পরে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণে সেটা রূপ নেয় সরকার পতনের গণ-আন্দোলনে। কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনে পতিত আ’লীগ সরকারের নির্দেশে পুলিশবাহিনী ও ছাত্রলীগ হামলা করলে জনমানুষের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। পরে শিক্ষক-শিল্পী থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। একটা সময়ে সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয়। কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৫৮১ জন নিহতের তথ্য সংগ্রহ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি। যদিও বলা হচ্ছে এটি প্রাথমিক তথ্য; পরে এ তথ্যের পরিবর্তন আসতে পারে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৩১ হাজারের বেশি। নিহতদের বেশির ভাগই তরুণ ও দরিদ্র পরিবারের। যাদের বয়স ১৮ থেকে ৩০ বছর।

গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) অডিটোরিয়ামে স্বাস্থ্য উপ-কমিটি, নাগরিক কমিটিসহ অংশীজনদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যবিষয়ক উপকমিটির সদস্যসচিব তারেক রেজা বলেন, আমাদের প্রাথমিক তালিকায় মোট ১,৫৮১ জন নিহত ব্যক্তির তথ্য অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তালিকা প্রণয়নের কাজে আমাদের সহায়তা প্রদান করেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাইসহ অন্যান্য বেশ কয়েকটি সংস্থা। পাশাপাশি, বিভিন্ন স্থানীয় পর্যায়ের ব্যক্তিরাও তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা করেছেন, যা এই তালিকা প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমাদের প্রাথমিক তালিকাটির তথ্য যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রতিটি জেলায় জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে গঠিত কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এই কমিটি তথ্য যাচাই-বাছাই করার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে চূড়ান্ত তালিকা প্রদান করবে।

প্রাথমিকভাবে সংগৃহীত এ তথ্য চূড়ান্ত নয় উল্লেখ করে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা যে তালিকাটি তৈরি করেছি, এটি চূড়ান্ত নয়। এখনো অনেক ব্যক্তি রয়েছেন যারা শহীদ হয়েছেন কিন্তু তাদের নাম এই তালিকায় আসেনি। আমরা জেলা কমিটিগুলোর মাধ্যমে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি যেন প্রতিটি নাম ও তথ্যগুলো ভেরিফাই হয়ে আমাদের হাতে পৌঁছায়, সেইসব তথ্য হাতে পেলে হয়তো পরিবর্তন আসবে এ সংখ্যাটির।
স্বাস্থ্য উপকমিটির সদস্যসচিব তারেকুল ইসলাম জানান, শহীদদের এই প্রাথমিক তালিকা যাচাই করতে প্রতিটি জেলায় গঠিত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে তারা প্রতিটি পরিবারের কাছে গিয়ে তথ্যের সত্যতা পূর্ণাঙ্গ যাচাই করবেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য উপ-কমিটির আহ্বায়ক নাহিদা বুশরা, আইটি টিমের ফরহাদ আলম ভূঁইয়া, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি, রেড জুলাইয়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে ১৭ সদস্যের স্বাস্থ্যবিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটি গঠিত হয়। এই কমিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের তালিকা প্রণয়ন ও সার্বিক সহযোগিতায় নিয়োজিত থাকবে বলে সেসময় জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement