২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
রুকন সম্মেলনে ডা: শফিকুর রহমান

যৌক্তিক সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে

রুকন সম্মেলনে ডা: শফিকুর রহমান -


বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, গণহত্যাকারীদের এ দেশে রাজনীতি করার কোনো অধিকার থাকতে পারে না। কেননা রাজনীতি হতে হবে দেশের মানুষের আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে তাদের মঙ্গলের জন্য, বাইরের কারো সাহায্য নিয়ে নয়। তিনি রাজনৈতিক দলসহ সব পর্যায়ের স্টেক হোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে সংস্কারের ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়ে সম্মানের সাথে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিদায় নিতে হবে। নির্বাচন দিতে বছরের পর বছর দেরি করলে আগাছা জন্ম নিতে পারে, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে, তৃতীয় শক্তির আবির্ভাব হতে পারে।

ডা: শফিক সংস্কার প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন, শিক্ষা সংস্কার কমিশনে আল্লাহকে স্বীকার করেন না এমন লোকদের বসিয়ে দেয়া হয়েছে। তিনি এ কমিশনে কমপক্ষে একজন আলিয়া ও একজন কওমি নেসাবের আলেমকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেন।
জামায়াতের আমির গতকাল শুক্রবার নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক সোসাইটিতে দলের খুলনা মহানগর ও জেলার রুকনদের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। আরো বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চল পরিচালক মো: মোবারক হোসাইন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন। সম্মেলনে মহানগরী ও জেলা শাখার সেক্রেটারি যথাক্রমে অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলাল ও মুন্সি মিজানুর রহমান স্ব স্ব শাখার রিপোর্ট পড়ে শোনান।

জামায়াতের আমির ডা: শফিক আরো বলেন, গত ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনামলে রাষ্ট্রের কোনো নাগরিকই লুটপাট ও জুলুমের বাইরে ছিল না। হাজারো মানুষের, মা-বোনদের, শিশুর কান্নার রোল আল্লাহর আরশে পৌঁছে যাওয়ার ফলেই জুলাই ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকস সেনাসদস্য হত্যা ছিল দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েমের প্রথম ধাপ। এখন বিডিআর হত্যাসহ দেশের সব হত্যাকাণ্ড এবং এর মাস্টারমাইন্ডদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তা না হলে আবারো ফ্যাসিস্ট জালিমদের পুনরাবির্ভাব হতে পারে।
জামায়াত প্রধান বলেন, এরপর তারা জামায়াতের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে এবং কারাগারে রেখে হত্যা করে জামায়াতকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালানো হয়। যারা সারাজীবন ইসলামের দাওয়াত দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধেই ইসলাম অবমাননার কথিত অভিযোগ আনা হয়। ইতোমধ্যে জামায়াত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগকারীরা গ্রেফতার হতে শুরু করেছে। বর্তমান সরকার ওইসব ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের আওতায় এনে একটি বিচারিক কার্যক্রমের সূচনা করবে বলেও তিনি আশা করেন।

সম্মেলনে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশের দামাল ছেলেদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আমাদের ওপর থেকে ফ্যাসিবাদের জগদ্দল পাথর নেমে গেছে। জাতি ও ইসলামী আন্দোলন জুলুম নিষ্পেষণ থেকে মুক্তি পেয়েছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ১৫ বছর আর মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের দুই বছর মিলিয়ে ১৭ বছরের জুলুম-নির্যাতনের পরও জামায়াতে ইসলামী এ দেশের মানুষের প্রিয় সংগঠনে পরিণত হয়েছে শুধু আল্লাহর ওপর দৃঢ় আস্থার কারণে। ৫ আগস্ট দেশের যে স্বাধীনতা আমরা পেয়েছি এটিকে ধরে রাখতে জামায়াতের প্রতিটি শপথের কর্মীকে ধৈর্য্যরে সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে ।
উল্লেখ্য, পনেরো বছর পর এবারই প্রথম জামায়াতে ইসলামীর রুকনদের সম্মেলন আল ফারুক সোসাইটিতে অনুষ্ঠিত হলো। এতদিন প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা দখল করে রেখেছিল।

 


আরো সংবাদ



premium cement