২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৩ আশ্বিন ১৪৩১, ২৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসন শহীদদের সাথে বেঈমানি : ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য

-


সদ্য সাবেক ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের দোসরদের পুনর্বাসন ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি বলে মন্তব্য করেছেন ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য নামের একটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। জুলাই বিপ্লবে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতেদের চিহ্নিত করে যথাযথ বিচারের দাবি জানান তারা।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি চত্বরের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এ সময়, দেশের প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের চেষ্টাকারীদের হুঁশিয়ারি করেন তারা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জুলাই গণ-অভুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ সরকারের পতন হয়েছে। গত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার প্রশাসন থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গন পর্যন্ত তাদের লোকজন বসিয়েছে। ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিস্ট সরকার হাসিনা পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা থেকে গেছে। জুলাই বিপ্লবে বিরোধিতাকারী চিহ্নিত আওয়ামী দোসরদের পুনর্বাসন দেয়ার চেষ্টা চলছে। সেই অপচেষ্টা রুখে দিতে আমাদের ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য প্রতিষ্ঠা করছি। জুলাই বিপ্লবে শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ নিরীহ সাধারণ মানুষের ওপর হামলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতেদের যথাযথ বিচার করতে হবে।

ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের যুগ্ম আহ্বায়ক তানজীম আহমেদ্ অর্ণব বলেন, আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদ পতনের লক্ষ্যে কিভাবে শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল। আন্দোলন চলাকালীন দেখেছি একজন বৃদ্ধা মহিলা পাঁচ লিটারের পানি বোতলে বইয়ে মানুষকে পানি খাওয়াচ্ছে ; আন্দোলনে তার কোনো স্বার্থ ছিল না। ফ্যাসিবাদের জুলুম থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করার জন্য সর্ব মহলের মানুষও নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে আন্দোলনে শামিল হয়েছিল। আন্দোলনে অনেক শহীদ ভাইবোনদের দেখেছি যাদের বয়স ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসন আমলে অর্ধেক সময়ের সমানও নয়, ফ্যাসিজম পতনে সেসব নিষ্পাপ ছোট্ট ভাইবোনদের জীবন দিতে হয়েছে। আমরা চাই গত ১৫ বছরে যারা জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়েও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন তাদের কণ্ঠস্বরকে একত্রিত করতেই আমাদের এই আয়োজন। সেই সাথে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার ও তার দোসররা গত ১৫ বছরে যত নিরপরাধ মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন করেছে তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে।

সংগঠনের আহ্বায়ক মুহতাসিম ভূঁইয়ার রাফিদ বলেন, গত জুলাই মাস সমগ্র দেশের মানুষের কাছে বিভীষিকাময় এক ক্ষণ। আপনারা দেখেছেন, শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনে কিভাবে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছিল। তৎকালীন ভিসি, প্রোভিসি, প্রক্টর, সমর্থন না করে বরং বিরোধিতা করেছে। পুলিশ ও ছাত্রলীগ, যুবলীগের সন্ত্রাসীরা যৌথ ওপেন ফায়ার করেছে। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে দেশে এত বড় হত্যাযজ্ঞ ঘটেনি। আমাদের নারী শিক্ষার্থীরাও রেহায় পায়নি। ফ্যাসিস্ট পতনের পর গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই বিপ্লবে হামলায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি। আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীর সেভ এক্সিট থেকে কিভাবে ফ্যাসিস্টরা পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় তাদের পুনর্বাসন দেয়ার চেষ্টা করছে। এটা রীতিমতো ২৪ এর গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায়। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, অবিলম্বে ওই হামলার নেতৃত্বদানকারী, সমর্থনকারী সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। ৫ আগস্ট এর আগে যেভাবে আমরা দল-মত নির্বিশেষে ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে লড়েছিলাম ভবিষ্যতেও সেটা প্রতিবাদে কণ্ঠস্বর একত্রিত রাখতে হবে। তাহলে বাংলার মাটিতে আর ফ্যাসিজমের উত্থান ঘটবে না।

 


আরো সংবাদ



premium cement