২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`
বাড়তি ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার বিবেচনা

আইএমএফ মিশন ঢাকায়

-

বাংলাদেশকে বাড়তি ৩০০ কোটি ডলার ঋণ দেয়া যায় কি না তা খতিয়ে দেখতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পাঁচ সদস্যের একটি মিশন এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। আইএমএফের গবেষণা শাখার উন্নয়ন সামষ্টিক অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ক্রিস পাপার্জিওর এই মিশনের নেতৃত্বে রয়েছেন। সংস্থাটির কর্মকর্তারা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ অবস্থান করবেন।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সাথে আজ সকালে সচিবালয়ে সৌজন্য সাক্ষাতের মাধ্যমে আইএমএফ মিশনটি কাজ শুরু করবে বলে জানা গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, আইএমএফের বিদ্যমান ঋণ কর্মসূচির আওতায় ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর নতুন করে সংস্থাটির কাছে আরো ৩ বিলিয়ন ডলার চাওয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কী ধরনের শর্ত ও সংস্কার বাস্তবায়ন করতে হবে সেটি নিয়েই মূলত আলোচনা করবে আইএমএফের এই মিশন। নতুন ঋণ পাওয়ার কিছু শর্তও জুড়ে দেবে আইএমএফ। আইএমএফের সাথে এবারের বৈঠকে কর আদায় বৃদ্ধি, সরকারের ঋণ গ্রহণ হ্রাস ও ভর্তুকি কমানো, গ্যাস, বিদ্যুৎ, জ্বালানি তেল ও সারের মূল্যবৃদ্ধির শর্ত দিতে পারে।
মূল বৈঠক শুরুর আগে গত রোববার ঢাকায় সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদের সাথে বৈঠক করে গেছেন বাংলাদেশে আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে। বৈঠক শেষে অর্থ উপদেষ্টা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আইএমএফ আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। বড় বাজেট সহায়তা দেয় তারা। তাদের একটি মিশন আসছে, যাদের সাথে বসব।’

জানা গেছে, ঢাকায় অবস্থানকালে আইএমএফের প্রতিনিধিরা মূলত বৈঠক করবেন অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সাথে। চলমান ঋণ কর্মসূচির শর্তগুলো কতটুকু পূরণ হয়েছে এবং সংস্কার কাজে অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করা হবে। আলোচনায় থাকবে অভ্যন্তরীণ ঋণ, বিদেশী ঋণ, ঋণের বিপরীতে সরকারি গ্যারান্টি (নিশ্চয়তা), মধ্যমেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনার কৌশলপত্র বাস্তবায়ন ইত্যাদি।
আগামী ২১ থেকে ২৬ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত হবে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম)। ওই সভায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ বাংলাদেশের একটি দল যোগ দেয়ার কথা। জানা গেছে, বহু জাতিক সংস্থাটির ওই সভার ফাঁকে ফাঁকে আইএমএফের সাথে সাইডলাইন বৈঠকে ঋণ কর্মসূচির আকার বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে। পরের মাসে, অর্থাৎ নভেম্বরে বাংলাদেশ আইএমএফের আরেকটি দল আসবে। তবে সেটি আসবে চলমান ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় পর্যালোচনা বৈঠক করতে।
উল্লেখ্য, আইএমএফ ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। এর দুই দিন পরই ঋণের প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তিতে আসে ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। চলতি বছরের জুনে তৃতীয় কিস্তিতে ছাড় হয় ১১৫ কোটি ডলার। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিশ্রুত ঋণের মধ্যে আর বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার, যা ২০২৬ সালের মধ্যে পাওয়ার কথা রয়েছে।

 

 

 


আরো সংবাদ



premium cement