১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বিশ্বকাপের আগে ওমরা করেছিলেন ফ্রান্সের পগবা

বিশ্বকাপের আগে ওমরা করেছিলেন ফ্রান্সের পগবা - সংগৃহীত

বিশ্বকাপ উপলক্ষে ফ্রান্স খেলোয়াড়দের নিয়ে ক্যাম্প তৈরী করেছিল পবিত্র রমজান মাসের আগে থেকে। দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই যখন খ্রিষ্ট্রান তাই এ নিয়ে আলাদাভাবে কোন চিন্তা করতে হয়নি। কিন্তু এই দলেরই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পগবাকে নিয়ে হয়েছিল সমস্যা। কারণ রমজান মাসে রোজা রেখেই তিনি অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দিয়েছিলেন। আর ফ্রান্সের রোজা প্রায় ১৫ ঘাণ্টার, এই অবস্থায় রোজা রাখাটা আরো কঠিন। তবে পগবার কাছে এসব পাত্তা পায়নি। তিনি রোজা রেখেই নিয়মিত অনুশীলন করেছেন। চূড়ান্ত পর্যায়ের অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে সৌদি আরব গিয়ে ওমরাও পালন করে এসেছেন।

পবিত্র কাবা শরিফকে সামনে নিয়ে ভিডিওটি ধারণ করেছেন এই ফরাসি তারকা। এ সম্পর্কে পগবা বলেন, ‘নিজের আমল ঠিক রাখার জন্যই মানুষ এখানে আসেন। এটি একটি চমৎকার জায়গা। সুন্দর সুন্দর সুন্দর- আর এর অনুভূতি আমি বুঝিয়ে বলতে পারবো না।’

তার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল উইরোপের বড় ক্লাব ম্যানচেষ্টার ইউনাইটেডে । কিন্তু সেখানে নিজের প্রতিভা ঠিকভাবে মেলে ধরতে পারেননি এবং ওল্ড ট্রাফোর্ড এর ক্লাবটিও তাকে নিয়ে খুব একটা সন্তুষ্ট ছিল না। ফলে পগবা ইতালির সিরি এ’তে ।

সেখানে জুভেন্টাসের হয়ে নিজেকে পরিপূর্ণভাবে বিকশিত করলেন এবং তুরিনের ওল্ড লেডিদের হয়ে স্কুডেটো সহ লীগ কাপ এবং আরো দু-একটি শিরোপা জয় করলেন। এতেই সোনাকে কাচঁ ভেবে অবহেলা করার গ্লানি মনে জন্ম নিল ম্যান ইউ এর মনে।

তাই সেসময়ের সবচেয়ে বেশী ট্রান্সফার ফি দিয়ে তাকে আবার দলে ভেড়াল জোসে মরিনহোর ক্লাব। কিন্তু এখানে এসে আবার যেন কেমন হয়ে গেলেন পগবা। জুভেন্টাসে যে স্ফুলিঙ্গ তার মাঝে দেখা গিয়েছিল সেটা বিস্ফোরিত হল না বরং মনে হলো বুঝি নিভেই গিয়েছে এবং একটি তারকা ফুটবলার অন্ধকারে হারিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি একটু একটু করে নিজেকে ফিরে পেলেন পগবা ক্লাব তাতে যেমন উপকৃত হলো কিন্তু সবচেয়ে বেশী উপকৃত হলো তার দেশ ফ্রান্স।

রাশিয়া বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে দারুন খেলে বেলজিয়ামের বিপক্ষে দলকে নিয়ে গেছেন বিশ্বফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগীতামুলক আসরের ফাইনালে। মাঝমাঠের এই তারকা পুরো মাঠ জুড়ে খেলেছেন। ৬ নম্বর জার্সি গায়ে ফ্রান্সের প্রতিটা খেলায়ই উজ্জল ছিলেন এই মুসলিম তারকা।

কোথায় ছিলেন না তিনি রক্ষনভাগে সতীর্থ খেলোয়াড় ভুল করে জায়গা ছেড়ে দিলে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে সামলেছেন তিনি বেশ ভালোভাবে। মাঝমাঠ দখলে রেখে পুরো খেলাটাই এমবাপ্পে এবং গ্রীজম্যান ও জিরুদের জন্য গড়ে দিয়েছেন পগবা। তারা সেটা না পারলে আক্রমনের দায়িত্ব নিজের কাঁধেই নিয়ে নিয়েছেন। বেলজিয়ামের বিপক্ষে সেরা খেলোয়াড় যে তিনিই।

কিন্তু এই ফ্রেঞ্চ তারকা এটা জানেন বেশ ভালো করেই যে, তাদের মিশন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। ফাইনালে বিশ্বকাপের শিরোপা নিয়ে উৎসব করতে না পারলে যে সবকিছুই বৃথা হবে এটা তার ভালো করেই জানা। কারণ দ্বিতীয় সেরাকে কেউ মনে রাখেনা। সকল সম্মান এবং বাহবা প্রথম স্থান অধিকারীর জন্যই।

রাশিয়া বিশ্বকাপের শিরোপা যেমন এবার তিনি হারাতে চান না তেমনি এর জন্য সতীর্থ খেলোয়াড়দেরকেও অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছেন। বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে গিয়ে আরো একটি সুবর্ণ সুযোগের সামনে দাড়িয়ে ফ্রান্স।

১৯৯৮ সালে শিরোপা এসেছিল কিন্তু ২০০৬ সালে ইতালিকে উৎসব করতে দেখা নিজেদের সামনে। কিন্তু এবার সেটি আর দেখতে চান না পগবা। ম্যান ইউ এর এই মাঝমাঠের তারকা বলেন, ‘এটি চমৎকার , এটি ভালো কিন্তু আমাদেরকে আরো একটি ধাপ পেরুতে হবে।’

তিনি আরো যোগ করেন, ‘এটি খুবই অসাধারণ জয়। আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে যেন এবার বিশ্বকাপ শিরোপা যেন জয় করতে পারি। ইউরোর অভিজ্ঞতা যেন না হয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘ এটা ভেবে আমার খুশি লাগছে যে ভক্ত-সমর্থকরা খুশি। কিন্তু আমি তাদেরকে আরো খুশি দেখতে চাই ১৫ জুলাই।’

 


আরো সংবাদ



premium cement