ব্রাজিলকে হারিয়ে কাড়িকাড়ি টাকা পাচ্ছে রেড ডেভিলসরা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৯ জুলাই ২০১৮, ১১:২০, আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৮, ১১:২৯
২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপটি স্বপ্নের মতো কাটছে বেলজিয়ামের। জয় ও পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে সফল দল তারাই। পাঁচ ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে রেড ডেভিলসরা। পাঁচ ম্যাচে জিতেছে ক্রোয়েশিয়াও। তবে ক্রোটদের পাঁচ জয়ের দুটি টাইব্রেকারে। অথচ বেলজিয়ামের পাঁচটি জয়ই মাঠের খেলায়। অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সের সুবাদে বেলজিয়াম শুধু সেমিফাইনাইলে ওঠেনি, তাদের খেলোয়াড়দের মূল্যও বেড়েছে অনেক। গত শুক্রবার ব্রাজিলের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে শুরুতে যে একাদশ নামিয়েছিলেন বেলজিয়ান কোচ রবার্তো মার্টিনেজ, সেই ১১ জনের মূল্য এখন প্রায় ৫৪৭ মিলিয়ন ইউরো।
এর ভেতরেও রয়েছে চমক। বেলজিয়ামকে সেমিফাইনালে তুলতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন মিডফিল্ডার কেভিন ডি ব্রুইন, অধিনায়ক এডেন হ্যাজার্ড, ফরোয়ার্ড রোমেলু লুকাকু ও গোলরক্ষক থিবো কুর্তোইস। বর্তমানে এই চারজনেরই মূল্য প্রায় ৪১০ মিলিয়ন ইউরো।
বাকি সাতজনের মূল্য প্রায় ১৩৭ মিলিয়ন ইউরো। ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডারের মূল্য বেড়ে এখন ১৫০ মিলিয়ন ইউরো। এ ছাড়া এডেন হ্যাজার্ডের মূল্য প্রায় ১১০ মিলিয়ন ইউরো, রোমেয়ু লুকাকুর মূল্য ৯০ মিলিয়ন ইউরো ও থিবো কুর্তোইসের মূল্য ৬০ মিলিয়ন ইউরো।
বেলজিয়ামের শুরুর একাদশের আনুমানিক মূল্য : গোলরক্ষক থিবো কুর্তোইস ৬০ মিলিয়ন, টবি অ্যালডারউইয়ার্ল্ড ৪০ মিলিয়ন, ভিনসেন্ট কোম্পানি ১০ মিলিয়ন, ইয়ান ভারটোঙ্গেন ৩২ মিলিয়ন, টমাস মুনিয়ের ১৫ মিলিয়ন, চাডলি ১০ মিলিয়ন, অ্যাক্সেল উইটসেল ১৮ মিলিয়ন, মারুয়ানে ফেলাইনি ১২ মিলিয়ন, কেভিন ডি ব্রুইন ১৫০ মিলিয়ন, এডেন হ্যাজার্ড ১১০ মিলিয়ন, রোমেয়ু লুকাকু ৯০ মিলিয়ন ইউরো। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় থেকে আর মাত্র দুটি দূরে বেলজিয়াম। যদি জিততে পারে বিশ্বকাপ, বেলজিয়ান খেলোয়াড়দের মূল্য বেড়ে যে আকাশে গিয়ে ঠেকবে। সেটি অনুমিতই।
আরো পড়ুন : বিদায়বেলা মনের কথা গেলেন নেইমার...
কানে হেডফোন। পিঠে স্বর্ণে মোড়ানো ব্যাগ। এভাবেই রাশিয়ায় পা রেখেছিলেন বিশ্বজয়ের লক্ষ্যে। রাশিয়া ছাড়লেনও একই ভঙ্গিতে। কিন্তু বদলে গেছে মেজাজটা। চোখে মুখে হতাশার ছাপ স্পষ্ট। কারণ এবারও খালি হাতেই দেশে ফিরতে হচ্ছে নেইমারকে।
গত বিশ্বকাপের তুলনায় এবারের দল অনেক বেশি শক্তিশালী ছিল। সে কথা মেনে নিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরাও। তিতে জমানায় দুর্দান্ত ফর্মে ছিল পেলের দেশ। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সব রসদই ছিল এই দলটার মধ্যে। কিন্তু অঘটনের বিশ্বকাপে সবই উলটপালট হয়ে গেছে।
সেমিফাইনালের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছে লাতিন আমেরিকার সব দেশ। যাদের মধ্যে সর্বশেষ ছিল ব্রাজিল। ১৬ বছরের খরা এবারও কাটল না। আর তাই মর্মাহত দলের স্তম্ভ নেইমার। বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। সেই সাথে জানালেন নিজের মনের কথা।
নেইমার লিখেছেন, এটাই তার ফুটবল জীবনের সবচেয়ে দুঃখের মুহূর্ত। ইনস্টাগ্রামের পোস্টে তিনি লেখেন, “ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। কারণ আমরা জানতাম এই দল ইতিহাস তৈরি করতে পারত। কিন্তু এবার তা হলো না। নতুন করে ফুটবল খেলার শক্তিটাই আর পাচ্ছি না। তবে আমার বিশ্বাস, ঈশ্বর যে কোনো পরিস্থিতি থেকে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি দেবেন। তাই এই পরাজয়ের মুহূর্তেও তাকে ধন্যবাদ জানাই৷”
তিনি আরো লিখেছেন, “৬ষ্ঠ বিশ্বকাপ ঘরে তোলার পথে ধাক্কা খেলাম। কিন্তু মাথায় ও মনে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খিদে রয়েই গেলো।”
অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্বর্ণে মোড়ানো ব্যাগ নিয়ে রাশিয়া এসেছিলেন নেইমার
গত বিশ্বকাপে চোটের জন্য অনেকগুলো ম্যাচ রিজার্ভ বেঞ্চেই বসে কাটিয়েছিলেন নেইমার। এবার তাই জয়ের তাগিদটা বেশি ছিল। কিন্তু লক্ষ্যপূরণ হলো না।
চলতি বিশ্বকাপে তার প্লে-অ্যাক্টিংই ছিল আলোচনার কেন্দ্রে। মাঠে তার চোট পাওয়া নিয়ে তৈরি হয়েছে নানা মিম। নেটদুনিয়ায় হাসি-ঠাট্টা চলেছে লাগাতার। যা দেখে শেষমেশ মুখ খুলেছিলেন ২৬ বছরের স্ট্রাইকার। বলেছিলেন, “সবার যন্ত্রণা ক্ষমতা একরকম হয় না। ব্যথা লাগলে কী করব?”
তবে ভুললে চলবে না, এই নেইমারের পা থেকে এসেছে দুটি গোলও। একাধিক গোলের নেপথ্যেও ছিলেন এই পিএসজি তারকা। কিন্তু বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে তার প্রদর্শন প্রশংসনীয় ছিল না। আর সেই ম্যাচেই ছিটকে যেতে হয়েছে ব্রাজিলকে। দলের মিডফিল্ডার ফার্নান্দিনহোও আন্দাজ করতে পেরেছেন, যেভাবে তার আত্মঘাতী গোল দলকে বিপাকে ফেলেছিল, তারপর দেশবাসী হাসি মুখে তাকে বরণ করবেন না। তাই জানিয়েছিলেন, সবরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে প্রস্তুত তারা।