কোয়ার্টার ফাইনালের দলগুলোর কিছু রেকর্ড
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ, রাশিয়া থেকে
- ০৬ জুলাই ২০১৮, ১৩:৫৮
কাল থেকে মাঠে গড়াচ্ছে রাশিয়া বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল। আরো চার দলের বিদায় হবে আগামী দুই দিনে। এই শেষ আটের ম্যাচে কিছু রেকর্ড আছে। রয়েছে কিছু চমৎকার কাকতালীয় বিষয়ও। নিচে তা দেয়া হলো :
১৯৭৮ সালের পর থেকে আজ পর্যন্ত কোনো দক্ষিণ আমেরিকান দলের কাছে হারেনি ফ্রান্স। ’৭৮এর আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে ফরাসীদের হারের স্বাদ দিয়েছিল স্বাগতিকরা। ওই আসরে চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। ফরাসীরা এর পরের ৯ ম্যাচের ৫টিতে জয় তুলে নিয়েছে। ড্র করেছে ৪টিতে।
ফ্রান্সের বিপক্ষে আজ বিশ্বকাপের ২০তম ম্যাচ কোচ অস্কার তাবারেজের। উরুগুয়ের এই কোচ এর মাধ্যমে সমকক্ষতা অর্জন করবেন যুগোস্লাভিয়ার বোরা মিলুটিনোভিচ এবং ব্রাজিলের মারিও জাগালোর। তারা হলের চার নাম্বারে। যাদের আছে ২০টি বিশ্বকাপের ম্যাচে ডাগ আউটে দাঁড়ানোর কৃতিত্ব।
ব্রাজিলের বিপক্ষে পঞ্চম ম্যাচ খেলতে নামছে বেলজিয়াম। তবে বিশ্বকাপে দ্বিতীয়। ২০০২ সালে তাদেরকে ২-০তে বিদায় করেছিল এই ল্যাতিন দেশটি। সেই ম্যাচে গোলদাতা ছিলেন রোনালদো এবং রিভালদো।
এবারের বিশ্বকাপে টানা তিন ম্যাচে কোনো গোল হজম করেনি ব্রাজিল। সুইজারল্যান্ড তাদের বিপক্ষে প্রথম খেলায় গোল করার পর কোস্টারিকা, সার্বিয়া এবং মেক্সিকো বল পাঠাতে পারেনি তাদের জালে। ফলে ৩১০ মিনিট ধরে অক্ষত সেলেকাওদের গোল পোস্ট।
এবারের বিশ্বকাপে একই সাথে কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়া এবং উরুগুয়ে। রাশিয়া এর আগে ১৯৭০ সালে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছিল উরুগুয়েকে হারিয়ে। মেক্সিকো বিশ্বকাপের ঘটনা সেটি।
এই নিয়ে তিনবার স্বাগতিকের বিপক্ষে ম্যাচ খেলছে ক্রোয়েশিয়া। ১৯৯৮ সালে তারা সেমিতে হেরেছিল আয়োজক ফ্রান্সের কাছে। ২০১৪ তে উদ্বোধনী খেলায় তাদেরকে পরাজিত করে ব্রাজিল। এবার কি তাহলে তাদের তৃতীয় হারের মুখে ক্রোয়েটরা?
এই নিয়ে তৃতীয় বারের মতো বিশ্বকাপে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে সুইডেন এবং ইংল্যান্ড। তাদের আগের দুই ম্যাচই ড্র হয়েছিল। ২০০২ সালে ১-১ এবং ২০০৬ সালে ২-২ এ শেষ হয় খেলা। দুই বারেই ইংল্যান্ডের কোচ ছিলেন সুইডেনের সোভেন গোরান এরিকসন।
এই প্রথম বিশ্বকাপে টাইব্রেকারে জয় পেল ইংল্যান্ড। যা তাদের নিয়ে এসেছে শেষ আটে। কলম্বিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয়ের আগে তারা ১৯৯০ সালে পশ্চিম জার্মানীর কাছে, ১৯৯৮ তে আর্জেন্টিনার কাছে এবং ২০০৬ সালে পর্তুগালের কাছে পরাজিত হয়েছিল এই পেনাল্টি শ্যুট আউটে।
আরো পড়ুন :
আবার অধিনায়ক বদল ব্রাজিলের
এটাই অভ্যাস কোচ তিতের। একেক দিন তিনি একেকজনকে দলের নেতৃত্ব দেন। এবারের বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে ব্রাজিলের ক্যাপ্টেন ছিলেন মার্সেলো। ম্যাচের ফলাফল ১-১-এ ড্র। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে এই ম্যাচের পর কোস্টারিকার বিপক্ষে নেতৃত্বে রদবদল। এবার অধিনায়ক করা হয় গত বিশ্বকাপের দলপতি থিয়েগো সিলভাকে। খেলায় ব্রাজিলের জয় ২-০তে। গ্রুপের তৃতীয় ম্যাচে আগের দুই ক্যাপ্টেনের কারো হাতেই নেই অধিনায়কত্বের আর্ম ব্যান্ড। অবশ্য মার্সেলো সে ম্যাচেই মাঠ ছাড়েন ইনজুরিতে পড়ে। সে খেলায় দল মাঠে নেমেছে মিরান্ডার পেছন পেছন।
মেক্সিকোর বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে নেতৃত্বে নিয়ে আসা হয় থিয়েগো সিলাভাকে। দলের জয় যথারীতি ২-০তে । তবে আজ আবার নেতৃত্ব হারালেন থিয়েগো সিলভা। বেলজিয়ামের বিপক্ষে কোর্য়াটার ফাইনালের এই ম্যাচে অধিনায়ক করা হয়েছে ডিফেন্ডার মিরান্ডাকে।
বারবার নেতৃত্বে বদলটা কোচ তিতের জন্য নতুন কিছু নয়। ব্রাজিলের ক্লাব দলের দায়িত্বে থাকার সময় এক মওসুমে ১৭ জনকে অধিনায়কত্বের আর্ম ব্যান্ড পরিয়েছিলেন তিনি। অবশ্য ব্রাজিল কখনই একাধিক ক্যাপ্টেনের অধীনে বিশ্বকাপ জিতেনি। তাদের বিশ্বকাপ জয়ের আসরে একজনই ছিলেন নেতৃত্বে।
নেই কাসিমিরো আতঙ্ক ছড়াতে পারেন লুকাকু
দুই হলুদ কার্ডের জন্য আজকের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলতে পারছেন না কাসিমিরো। রিয়াল মাদ্রিদের এই মিডফিল্ডারের অনুপস্থিতি ভোগাতে পারে ব্রাজিল দলকে। কাসিমিরো শুধু আক্রমণেই ভূমিকা রাখেন না, বিপক্ষ দলের আক্রমণ ঠেকাতেও সমান দক্ষ তিনি। তিনি না থাকায় বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন বেলজিয়ামের স্ট্রাইকার লুকাকু। এবারের বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত চার গোল করেছেন রোমেলো লুকাকু। বিশাল দেহের এই ফুটবলার যেমন শক্তিশালী তেমনি হেড ওয়ার্কেও দক্ষ। ১১ আন্তর্জাতিক ম্যাচে তার গোল সংখ্যা ১৩টি। এর অধিকাংশই হেডে। ফলে আজ তাকে ঠেকাতে বেগ পেতে হবে থিয়েগো সিলভা এবং মিরান্ডাদের। সত্যিকার চ্যালেঞ্জ আজ ব্রাজিল ডিফেন্ডারদের সামনে। এই আসরে তারা এখন পর্যন্ত মাত্র একটি গোল হজম করেছে। তা সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে। মিরান্ডার ফাউল থেকে পেনাল্টি এবং গোল।
লুকাকু ছাড়াও বেলজিয়ামের আক্রমণভাগে আছেন হেজার্ড এবং মেরটনেস। এই আসরে বেলজিয়াম চার ম্যাচে ১২ গোল করেছে। অর্থ্যাৎ ম্যাচ প্রতি গড়ে তিন করে। তাই কাসিমিরোর অনুপস্থিতি বিপদে ফেলতে পারে তিতে বাহিনীকে। অবশ্য তিতে জানান, তার রক্ষণ কাজ শুরু হয় ফরোয়ার্ড লাইন থেকে। উপরে নেইমার যদি বল রুখে দিতে পারেন তাহলে সেখানেই কো ডিফেন্ডিংয়ের কাজ হয়ে গেল।