১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফাঁকা মাঠে এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল!

ফাঁকা মাঠে এগিয়ে যাচ্ছে ব্রাজিল! - ছবি : সংগৃহীত

এক প্রতিদ্বন্ধী আগেই ছিটকে পড়েছিল। এবারের বিশ্বকাপে কোয়ালিফাইই করতে পারেনি ইতালি। ঘাড়ের ওপর গরম নিঃশ্বাস ফেলা জার্মানিকে বিদায় করেছে মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়া মিলে। ফলে রেকর্ড গড়ার কাজে এখন ফাঁকা মাঠ ব্রাজিলের সামনে। মেক্সিকোকে দ্বিতীয় রাউন্ডে হারিয়ে তারা এখন আজ শেষ আটের ম্যাচ বেলজিয়ামের সামনে। এই দলের বিপক্ষে তাদের সর্বশেষ ম্যাচ ২০০২ সালে। যেখানে রোনালদো ও রোনালদিনহোদের জয় ছিল ২-০-এ।

মেক্সিকোকে ২-০-এ হারিয়ে ব্রাজিল এখন সব বিশ্বকাপ মিলে ২২৮ গোলের মালিক। ২২৬ গোল আছে জার্মানির। এবার রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত ৭ গোল করেছে ব্রাজিল। শুক্রবার বেলজিয়ামের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে জার্মানির খেলা ১০৯ বিশ্বকাপ ম্যাচের সমকক্ষ হবে ব্রাজিল। এবারের আসরের আগ পর্যন্ত জার্মানি ১০৬ ও ব্রাজিল ১০৪টি ম্যাচ খেলেছিল বিশ্বকাপে।

ফুটবরের সর্ববৃহৎ আসরে ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে সবার উপরে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। তারা জিতেছে ৭৩টি ম্যাচ। যা জার্মানদের চেয়ে ৬ বেশি। জার্মানির বিদায় হয়েছে এবারের প্রথম রাউন্ডে। ইতালী রাশিয়ায় আসার টিকিটই পায়নি। ফলে ২০২২ সাল পর্যন্ত এই রেকর্ডে এগিয়ে থাকবে পেলে -রোনালদো , নেইমারের দেশই। এবার যদি ব্রাজিল বিশ্বকাপ নাও জিততে পারে তবুও এবার তাদের পাঁচবারের ট্রফি জয়ের রেকর্ড কেউ ছুতে পারবেনা। চার বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও জার্মানি এবার রেসের বাইরে।

চলমান বিশ্বকাপে ব্রাজিলের জালে মাত্র একটিবার বল গেছে। তা তাদের মতো অপর ল্যাতিন দেশ উরুগুয়ের মতোই। মেক্সির্কো বিপক্ষে জয়ের মাধ্যমে গত ২৮ বছরের রেকর্ড অব্যাহত রাখলো ব্রাজিল। ১৯৯০ সালের পর থেকে তারা কখনো বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে হারেনি। ৯-এ তাদেরকে এই রাউন্ড থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছিল ম্যারাডোনা ও ক্যানিজিয়ার আর্জেন্টিনা। ওই খেলায় ম্যারাডোনার পাসে জয় সূচক গোল করেছিলেন ক্যানিজিয়া।

তিতে বাহিনীর আজকের প্রতিপক্ষ বেলজিয়াম ১৯৮৬ সালের পর আর কোয়ার্টার ফাইনলের ম্যাচ জিততে পারেনি। সেবার মেক্সিকোতে তাদের সেমিতে হারের স্বাদ আর্জেন্টিনা। ম্যারাডোনার জোড়া গোলে তাদের শেষ হয়েছিল তাদের ৮৬ এর বিশ্বকাপ মিশন।

শুক্রবার কোচ তিতের ২৬ তম ম্যাচ। আগের ২৫ খেলায় তারা ২০টিতে জিতেছিল। ড্র চারটিতে। হেরেছে মাত্র এক খেলায়।


ব্রাজিলের সম্ভাবনা দেখছেন রোনালদো

এবারের বিশ্বকাপ যাবে ব্রাজিলের ঘরে। এমনটা মনে করছেন দুইবারের ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য তারকা ফুটবলার রোনালদো নাজারিও। শুধু নেইমার ও কোতিনহোর পারফরম্যান্সই নয় পুরো দলের খেলাই মুগ্ধ করেছে তাকে। গ্রুপ পর্বে সুইজারল্যান্ড, কোস্টারিকা, সার্বিয়া এবং দ্বিতীয় রাউন্ডে মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচ পারফরম্যান্স পাশ মার্ক পেয়েছে সাবেক ক্রুজেইরো, করিন্থিয়ান্স, বার্সেলোনা, মরিয়াল মাদ্রিদ, ইন্টার মিলানের এই ফুটবলারের। মস্কোতে আয়োজিত ফিফার দ্য বেস্ট অনুষ্ঠান শেষে নিজ দেশকে নিয়ে এই আশাবাদ ১৯৯৪ এবং ২০০২ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই খেলোয়াড়ের। জানান, ব্রাজিলের উজ্জ্বল সম্ভাবনা আছে এবারের ট্রফি জয়ের।

আয়োজন স্থলের মিক্সড জোনে রোনালদোর জানান, ‘ব্রাজিল ক্রমান্বয়েই ভালো ম্যাচ উপহার দিচ্ছে। তবে এখনও সেই আসল রুপে দেখা যায়নি। যা আমরা বাছাইপর্বে প্রদর্শন করেছিলাম। তবে আমার আশাবাদ ব্রাজিল আরো ভালো করবে এবং ট্রফি জিতেই দেশে ফিরবে। এখন পর্যন্ত ঠিকই আছে, পাঁচবারের বিশ্বকাপ জয়ীদের ৬ষ্ঠ ট্রফি জয়ের জন্য তিনি আরো বেটার কিছু চান নেইমারের কাছ থেকে। যে পারফরম্যান্স তাকে নিযে যাবে লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সমপর্যায়ে। সিনিয়র রোনালদোর মতে, তিন মাস মাঠের বাইরে থাকার পর এখন চমৎকার করছে নেইমার। ধীরে ধীরে উন্নতি করছে। আমার মতে এবারের বিশ্বকাপের হাইলাইটসটা এখন নেইমারের উপরই।

একই সাথে ফিলিপ কোতিনহোরও ভূয়সী প্রশংসা রোনালদোর মুখে। তার বক্তব্য, তারকা এখন কোটিনহোই। দু’টি গোল করেছে সে। সে ব্রাজিল দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফুটবলার। বার্সেলোনা এবং তিতে তাকে দলে টেনে সঠিক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করেছে। আমার মতে, শুরু হলো কোতিনহোর যুগ। শুক্রবার বেলজিয়ামের বিপক্ষেও সে জ্বলে উঠবে এটা আমার প্রত্যাশা।

৯ নং জার্সি পরেই বিশ্বকাপ মাতিয়েছিলেন রোনালদো। এখন বিশ্বকাপে সেই ৯ নং জার্সি গায়ে গ্যাব্রিয়েল জেসুস। অথচ চার ম্যাচে গোলশূন্য এই ম্যানচেষ্টার সিটির ফরোয়ার্ড। যা ব্রাজিলের মতো দলে নিতান্তই বেমানান। তাই তার বদলে ফিরমিনহোকে খেলানোর দাবি উঠেছে। এ ক্ষেত্রে জেসুসের পাশে দাঁড়ালেন রোনালদো। বললেন, আসলেই দূর্ভাগ্য জেসুসের। ট্যাকটিক্যালি সে খুবই গুরুত্বপূর্ন খেলোয়াড়। দায়িত্ব পালনও করে সঠিকভাবে। কোচ তিতের পূর্ণ আস্থা রয়েছে জেসুসের ওপর।’ এরপর ফিরমিনহোকে নিয়ে বললেন, খেলা পাল্টে দেয়ার মতো যোগ্যতাসম্পন্ন ফুটবলার ফিরমিনহো। এটা ব্রাজিল দলের ভাগ্য যে একই মানের দু'জন ফুটবলার আছে দলে। কোচকে এদের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করতে হয় একাদশের খেলাতে।

কোচ তিতেকে বিশ্বের সেরা কোচ হিসেবে অভিহিত করলেন রোনালদো। জানান, আমি আমার ক্যারিয়ারের শেষ সময় তাকে কোচ হিসেবে পেয়েছিলাম করিন্থিয়ান্স ক্লাবে। তিতে একজন যোগ্য কোচ ও দক্ষ প্রেরণাদাতাও। তিনি শুধু আক্রমণাত্মকই নন । রক্ষণাত্মক কোচও।


আরো সংবাদ



premium cement