১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফরাসিদের সুখবর দিলেন কাভানি!

ফরাসিদের সুখবর দিলেন কাভানি! - ছবি : সংগৃহীত

সময় মতোই জ্বলে উঠলেন এডিনসন কাভানি। তার জোড়া গোলেই দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় পর্তুগালের। আর ল্যাতিন দেশ উরুগুয়ে পৌঁছে গেল শেষ আটে। অবশ্য দ্বিতীয় রাউন্ডের ওই ম্যাচেই ইনজুরিতে পড়েন কাভানি। মাঠ ছাড়তে হয় থাকে। লুইস সুয়ারেজের সাথে জুটি গড়ে প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্ক ছিলেন এই প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের স্ট্রাইকার। এ গ্রুপ থেকে টানা তিন জয় নিয়ে দলটির গ্রুপ সেরা হওয়ার নেপথ্য ছিলেন এই দুই ফরোয়ার্ড। অথচ কোয়ার্টার ফাইনালে কাভানিকে সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন না সুয়ারেজ। সাথে উরুগুয়েও। ফলে নিজনি নবগরড স্টেডিয়ামের এই ম্যাচে শিরোপার প্রত্যাশী ফ্রান্সের বিপক্ষে দুর্বল হয়ে গেল অস্কার তাবারেজের অ্যাটাকিং লাইন। বিকল্প হিসেবে স্প্যানিশ লিগের দল জেরেনাতে খেলা ক্রিস্টিয়ান স্টুয়ানিই এখন ভরসা ২০১০ এর সেমি ফাইনালিস্টদের। অবশ্য কাভানি না থাকলেও এই দক্ষিণ আামেরিকান দল আজ ভাঙ্গতে পারবে ফরাসি ডিফেন্স লাইন এমন আশাবাদ দলের সংশ্লিষ্টদের।

পর্তুগালের বিপক্ষে ইনজরুড় কাভানি মাঠ ত্যাগের পর মাঠে নেমেছিলেন স্টুয়ানি। ততক্ষণে কাজ যা করে দিয়ে গিয়েছিলেন কাভানি। যা বিদায় পর্বের জন্য যথেষ্ট ছিল ক্রিষ্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালের। উরুগুয়ের অনুশীলনে দেখা যায়নি কাভানিকে। এটাই কাভানির না খেলার বিষয়ে সন্দেহের জন্ম দিচ্ছে। তার বাম পায়ে চোট।

কাভানির এই ইনজুরি সুখের বার্তা বয়ে এনেছে ফরাসি শিবিরে। কাভানি না থাকায় তাদের রক্ষনভাগও কিছুটা টেনশন মুক্ত। ফ্রান্সের ডিফেন্ডার আদিল রামির মতে, ‘এক দলের দূর্ভাগ্য সুসংবাদ বয়ে আনে অন্য দলের জন্য। যেমনটা কাভানির উরুগুয়ে এবং আমাদের ফ্রান্সের ক্ষেত্রে। সে আহত এটা আমাদের জন্য তো খারাপ খবর নয়।’ অলিম্পিক মার্শেই এর এই ফুটবলার অবশ্য এখনো মনে করেন মাঠে দেখা যাবে কাভানিকে।

পিএসজিতে কাভানির টিমমটে ব্লেইসি মাতুডি। কাভানিকে নিয়ে তার মন্তব্য, এই উরুগুয়ান একজন ম্যাচ উইনার। সে যতক্ষণ মাঠে থাকে গোল পাওয়ার চেষ্টা চালায়।

রাশিয়া বিশ্বকাপে তিন গোল করেছেন কাভানি। পর্তুগালের আগে তার গোল ছিল স্বাগতিকদের বিপক্ষে। জাতীয় দলের হয়ে তার গোল ১০৫ ম্যাচ ৪৫টি। ২০১০ বিশ্বকাপে তার গোল ছিল জার্মানির বিপক্ষে। যদিও সে ম্যাচে ৩-২ গোলে হার তাদের। প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের হয়ে ক্লাব ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। এ পর্যন্ত করেছেন ১৫৭ গোল।

নেইমারের সমালোচনা করায় ক্ষেপলেন রোনাল্ডো

মাঠের ভেতর ব্যাথা পাওয়ার অভিনয় করে এখন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম শিরোনাম ব্রাজিলের অধিনায়ক নেইমার। চলতি বিশ্বকাপ ফুটবলে মাঠের ভেতর প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়দের ফাউলে ব্যাথা পেয়ে যেভাবে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন নেইমার, সেটিকে অভিনয় বলছেন প্রতিপক্ষের খেলোয়া-কোচ, সাবেক খেলোয়াড়রাসহ আরও অনেকে। তবে এই সমালোচনায় কান দিতে রাজি নন নেইমার, তা আগেই জানিয়েছেন। এবার নেইমারের পক্ষ নিয়ে কথা বললেন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার রোনাল্ডো। তিনি বলেন, ‘নেমারকে নিয়ে যা বলা হচ্ছে সবই ভুল। তাকে ইচ্ছাকৃত ফাউল করা হচ্ছে, যাতে সে সেরা পারফরমেন্স করতে না পারে। তারপরও তাকে আটকে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। নেইমারের সমালোচনা করে তাকে আটকে রাখা যাবে না।’

মাঠের ভেতর প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের ফাউলে ব্যাথা পেয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নেইমার। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এমন আচরন করেন, যাতে অন-ফিল্ড রেফারি প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে কার্ড দেখাতে বাধ্য হন বা ব্রাজিলের পক্ষে পেনাল্টি-ফ্রি কিক দিয়ে দেন।

তেমনই একটি ঘটনা চলতি বিশ্বকাপের শুরুতে। গত ২২ জুন সেন্ট পিটার্সবুর্গে মুখোমুখি হয়েছিলো ব্রাজিল-কোস্টা রিকা। ঐ ম্যাচের ৭৯ মিনিটে বল নিয়ে কোস্ট রিকার ডি-বক্সের ভেতর ঢুকে যান ব্রাজিলের অধিনায়ক নেইমার। এসময় তাকে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করেন কোস্টা রিকার ডিফেন্ডার জিয়ানকার্লো গঞ্জালেজ। ফলে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নেইমার। সাথে সাথে ফাউলের কারনে পেনাল্টির নির্দেশ দেন ঐ ম্যাচের অন-ফিল্ড রেফারি।
রেফারির এই সিদ্বান্তের প্রতিবাদ করে কোস্টা রিকার খেলোয়াড়। ফলে মাঠের ভেতর থাকা টিভিতে ভিডিও রেফারির সহায়তা নিয়ে পেনাল্টি বাতিল করে দেন অন-ফিল্ড রেফারি। টিভি রিপ্লেতে দেখা গেছে, কোস্টা রিকার গঞ্জালেজ বাঁধা দেয়ার সময় নেইমারের গায়ে স্পর্শই করেননি। অভিনয়ের ভান করে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন নেইমার। যাতে পেনাল্টির পাওয়া যায়। পেনাল্টি ঠিকই পেয়েছিলেন নেইমার। কিন্তু ভিডিও রেফারির সহায়তায় সেই পেনাল্টি বাতিল হয়।

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই রিও ডি জেনিরিও’তে সার্বিয়ার বিপক্ষেও ম্যাচের আগে ব্রাজিলের একটি রেস্টুরেন্ট মজার ঘোষণা দেয়। তাহ’ল- সার্বিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে নেইমার যতবার মাঠে লুটিয়ে পড়বেন ততবার সেদেশের ক্রেতাদের ফ্রি বিয়ার দেয়া হবে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, সাবেক খেলোয়াড়-কোচ ও বর্তমান কোচরা নেইমারের কর্মকান্ডে বেশ ক্ষিপ্ত। নেইমারকে পাক্কা অভিনেতা হিসেবে অভিহিত করছেন তারা। এসব অভিমতের সাথে একমত নন রোনাল্ডো। ক্ষিপ্ত হয়ে সংবাদ মাধ্যমেরও এক হাত নিলেন রোনাল্ডো, ‘নেইমারকে নিয়ে এইসব সমালোচনার কোনও ভিত্তি নেই। রেফারি নেইমারকে রক্ষা করতে পারছেন না। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়রা ইচ্ছাকৃতভাবে ফাউল করছে নেইমারকে। টিভির অনুষ্ঠানে সময় পূর্ণ করতে বা খবরের কাগজের শিরোনাম আর্কষনীয় করতেই এই সমালোচনা। তবে এসব সমালোচনা আমলে নিচ্ছেন না নেইমার। ঠিকই নিজের সেরা পারফরমেন্স করছে সে।’

নেইমারের বুদ্ধিমত্তার কারনে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা তাকে আটকে রাখতে পারছে না। নয়তো বড় ধরনের ইনজুরিতে নেইমার পড়তো বলে মনে করেন রোনাল্ডো। তিনি বলেন, ‘নেইমার একজন বুদ্ধিমান ও চৌকুস ফুটবলার। বল নিয়ে এগিয়ে যাবার সময় কী-ভাবে বিপক্ষের খেলোয়াড়দের ট্যাকল থেকে নিজেকে বাঁচাতে হয়, এ ব্যাপারে ভালো জানে নেইমার। নয়তো অনেক আগেই বড় ধরনের ইনজুরিতে পড়তে পারতো সে। নেইমারের মত অন্যান্য দলের খেলোয়াড়দের সাথে এমন আচরণ করে না প্রতিপক্ষে খেলোয়াড়রা।’


আরো সংবাদ



premium cement