গার্দিওলাকে ১২ মিলিয়ন ডলার প্রস্তাব দিয়েছে আর্জেন্টিনা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৫ জুলাই ২০১৮, ১৭:০৫
রাশিয়া বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ছিটকে পড়া আর্জেন্টিনার হাল ধরবে কে? এই প্রশ্নের জবাব খুঁজতে গিয়ে অনেক গুলো নাম ঘুরেফিরে আসছে। কারণ খেলায় হেরে যাওয়ার পর দলটির কোচ হোর্হে সাম্পাওলির বিদায় যে অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে, সেটা এখন বোঝাই যাচ্ছে। নতুন কোচ হিসেবে আলোচনায় এসেছে বেশ কিছু নাম। এরই মধ্যে দেশটির কিংবদন্তি ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা বিনা পারিশ্রমিকে কোচ হওয়ার আগ্রহ দেখিয়েছেন। অবশ্য এসব আলোচনাকে ছাড়িয়ে নতুন একটি নাম খুবই জোরেশোরে এসেছে। নামটি শুনলে অনেকেই চমকে যেতে পারেন, তিনি হলেন বার্সেলোনার সাবেক কোচ ও বর্তমান ম্যানচেস্টার সিটির কোচ পেপ গার্দিওলা।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, গার্দিওলাকে কোচ হিসেবে চায় আর্জেন্টিনা। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ সামনে রেখে ঘর গোছানোর জন্য আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নাকি তাকে দায়িত্ব দেওয়ার চিন্তা করছে।
এর জন্য নাকি মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিকও দিতে রাজি আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। একটি স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যমের দাবি, বার্ষিক ১২ মিলিয়ন ডলারে ২০২২ বিশ্বকাপ পর্যন্ত গার্দিওলাকে চায় আর্জেন্টিনা।
গার্দিওলা আর্জেন্টিনার প্রস্তাবে রাজি হবেন কি না, সেটাই এখন দেখার। কারণ তিনি ২০২১ সাল পর্যন্ত ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। অবশ্য সাম্পাওলি নাকি এখনই দায়িত্ব ছাড়তে নারাজ। আগামী বছর কোপা আমেরিকা পর্যন্ত দলের কোচ হিসেবে থাকতে চান তিনি।
অবশ্য ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায়, আর্জেন্টিনার বিদেশি কোচ নিয়োগ দেওয়ার খুব একটা নজির নেই। ১৯২৪ সালে ইতালিয়ান ফেলিপ পাসসুসি ছিলেন আর্জেন্টিনার প্রথম বিদেশি কোচ। দ্বিতীয়জনও ইতালির, ১৯৬৮ সালে রেনাতো সেজারিনি ছিলেন দলটির কোচের দায়িত্বে। তিনি অবশ্য ইতালি ও আর্জেন্টিনার দ্বৈত নাগরিক ছিলেন।
এখন গার্দিওলা যদি দায়িত্ব নেন, তিনি হবেন আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিদেশি কোচ। অবশ্য এখনো চূড়ান্ত হয়নি কিছুই। গার্দিওলাও এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেননি।
আরো পড়ুন : জবাবটা সাথে সাথেই পেলেন ম্যারাডোনা
রাশিয়া বিশ্বকাপের নক আউট পর্বের শেষ ম্যাচ নিয়ে 'পুকুর চুরি'র অভিযোগ করেছিলেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। কলম্বিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার সে ম্যাচের রেফারি মার্ক গেইগারের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ করেন তিনি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইংল্যান্ডের পাওয়া পেনাল্টিকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেন ফিফার এই শুভেচ্ছাদূত।
টেলেসুরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা বলেন, ‘রেফারির পেনাল্টি আদেশ সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে। এটি পেনাল্টি ছিল না। নিজের ভুলেই পড়ে গেছেন হ্যারি কেন। কলম্বিয়া আপিল করা সত্ত্বেও রেফারি কেন ভিএআর ব্যবহার করেননি তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এ রকম পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্তের জন্যই ভিএআর প্রযুক্তির সংযোজন ঘটেছে বিশ্বকাপে। কিন্তু রেফারি এড়িয়ে গেলেন। এ ধরনের ঘটনা দেখার পর চুপ থাকলে চলবে না। প্রতিবাদ করতে হবে।’
ম্যাচটি পরিচালনায় আমেরিকান রেফারি নিয়োগ দেয়ার ইস্যুতে কলম্বিয়ানদের ফিফার প্রধান রেফারির কলিনাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানোর আহ্বানও রেখেছেন ম্যারাডোনা। তার বিশ্বাস, ইংল্যান্ডের লিড নেয়ার পেনাল্টিটি ছিল সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
এদিকে এ ঘটনার পর আনুষ্ঠানিক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ম্যারাডোনাকে জবাব দিয়েছে ফিফা। জানিয়েছে, 'কলম্বিয়া ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচটি ছিল খুবই কঠিন ও আবেগপূর্ণ। এমন ম্যাচে রেফারির পারফমেন্স নিয়ে সমালোচনা করা পুরোপুরি অমূলক ও বাহুল্য। যেখানে ফিফা সর্বাত্মক চেষ্টা করছে বিশ্বকাপটি সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে আয়োজন করতে, সেখানে ম্যারাডোনার মতো ইতিহাস সৃষ্টিকারী একজন খেলোয়াড়ের এমন মন্তব্য সত্যিই হতাশাজনক।'
আরো পড়ুন : বোমা ফাটালেন ম্যারাডোনা!
সব সময় মিডিয়ায় আলোচনায় থাকেন তিনি। বলা হচ্ছে আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়োগো ম্যারাডোনার। সর্বশেষ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে আর্জেন্টিনার জয়ের পর তার উল্লাস নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। এরপর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে উঠে ছিলেন শিরোনামে। এবার আর্জেন্টিনার কোনো ম্যাচ নয়, শিরোনামে এসেছেন নক আউটে কলম্বিয়া ও ইংল্যান্ডের ম্যাচটি নিয়ে। এই ম্যাচে কলম্বিয়া 'পুকুর চুরি'র খপ্পরে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। বলেছেন, ডাকাতির শিকার হয়েছে কলম্বিয়া।
এর আগে ম্যাচ শেষে রেফারির বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছিলেন কলম্বিয়ার ডিফেন্ডার রাদামেল ফালকাও। তিনি বলেন, 'রেফারি আমাদের অনেক বিরক্ত করছিল। ৫০-৫০ অবস্থায় সে সবসময় ইংল্যান্ডের পক্ষে বাঁশি বাজাচ্ছিল। এটা আমাদেরকে পেছনে ঠেলে দিচ্ছিল। দুই দলের প্রতি তিনি সমান আচরণ করছিলেন না।'
এরপরই টেলেসুরকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ম্যারাডোনা এই মন্তব্য করেন। তিনি ম্যাচটি পরিচালনায় আমেরিকান রেফারি নিয়োগ দেয়ার ইস্যুতে কলম্বিয়ানদের ফিফার প্রধান রেফারির কলিনাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানোর আহ্বানও রেখেছেন ম্যারাডোনা। তার বিশ্বাস, ইংল্যান্ডের লিড নেয়ার পেনাল্টিটি ছিল সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।
মঙ্গলবার রাশান বিশ্বকাপের রাউন্ড অব সিক্সটিনের সর্বশেষ খেলায় টাইব্রেকারে কলম্বিয়াকে হারিয়ে ইংল্যান্ড নিশ্চিত করেছে কোয়ার্টার ফাইনাল। তবে ম্যাচটিতে তাদের জয় ছাপিয়ে শিরোনামে রেফারির একতরফা সিদ্ধান্ত দেয়ার ঘটনা।
ম্যারাডোনা বলেন, ‘মাঠে আমি পুকুর চুরির ঘটনা দেখেছি। ক্ষমা প্রার্থনা করছি কলম্বিয়ার ভক্তদের কাছে। ফুটবলারদের কোনো দোষ দেখি না। কলিনাকে ভদ্রলোক বলেই জানি। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি ম্যাচে তিনি কিভাবে এ রকম একজন রেফারিকে বেছে নিয়েছেন তা বুঝতে পারছি না।’
দ্বিতীয়ার্ধের সূচনায় হ্যারি কেনের পেনাল্টি গোলে লিড নিলেও জয়ের জন্য টাইব্রেকারের নাটকীয়তা পাড়ি দিতে হয়েছে ইংলিশদের। নির্ধারিত সময়ের ইনজুরি টাইমে কলম্বিয়ানদের খেলায় ফেরান বার্সেলোনা ডিফেন্ডার ইয়েরি মিনা। অতিরিক্ত ৩০ মিনিটের খেলায় কোনো দলটি গোল আদায় করতে পারেনি। ফলে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবারের শুটআউটে ৪-৩ গোলের জয়ে থ্রি লায়ন্স খ্যাত ইংল্যান্ড উঠেছে ফিফার ২১তম মেগা আসরের কোয়ার্টার ফাইনালে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ইংলিশদের পাওয়া পেনাল্টিকে পুরোপুরি অযৌক্তিক বলে আখ্যায়িত করেছেন ম্যারাডোনা। কলম্বিয়ার ফুটবলারদের ভিএআর প্রার্থনা সত্ত্বেও রেফারির প্রত্যাখ্যানের বিষয়টিকে হাস্যকর বলেও অভিমত দেন আর্জেন্টাইন ফুটবলঈশ্বর। তার মতে, নিজের ভুলেই ডি-বক্সের মধ্যে পড়ে গেছেন হ্যারি কেন।
ম্যারাডোনা বলেন, ‘রেফারির পেনাল্টি আদেশ সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে। এটি পেনাল্টি ছিল না। নিজের ভুলেই পড়ে গেছেন কিন। কলম্বিয়ার অলিপ সত্ত্বেও রেফারি কেন ভিএআর ব্যবহার করেননি তা আমার বোধগম্য হচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে সঠিক সিদ্ধান্তের জন্যই ভিএআর প্রযুক্তির সংযোজন ঘটেছে বিশ্বকাপে। কিন্তু রেফারি এড়িয়ে গেলেন। এ ধরনের ঘটনা দেখার পর চুপ থাকলে চলবে না। প্রতিবাদ করতে হবে।’