'ফাইনালে খেলবে ফ্রান্স'
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৩:৩৭, আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৮, ১৩:৪১
ফ্রান্স আর্জেন্টিনার বিপক্ষে রাউন্ড অব সিক্সটিনে জয়লাভ করার পর লেস ব্লুসদের জীবন্ত কিংবদন্তি প্যাটট্রিক ভিয়েরা মনে করেন দিদিয়ের দেশমের দল এবার রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনালে যাবে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়টিকে ভিয়েরা ‘বেশ চমৎকার খেলা’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই জয় থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস ফ্রান্সকে ফাইনালে নিয়ে যাবে এমন ধারণাই করছেন আর্সেনাল ও ফ্রান্সের এই সাবেক তারকা ফুটবলার।
নক আউটের আগে গ্রুপ পর্বে নিজেদের তেমনভাবে মেলে ধরতে পারেনি ফ্রান্স। কিন্তু শেষ ষোলর লড়াইয়ে দিদিয়ের দেশমের দল মেসির আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ৪-৩ গোলের অসাধারণ এক জয় পায়। বিশেষ করে লেস ব্লুসদের আক্রমণভাগের তারকা কিলিয়েন এমবাপ্পের খেলা আর্জেন্টিনার বিপক্ষে চোখ জুড়িয়ে দেয়ার মতো ছিল। টিনএজার এই ফুটবল তারকার গতির সাথে কোনোভাবেই পেরে উঠেনি আর্জেন্টিনা। এমবাপ্পে ম্যাচে একটি পেনাল্টি আদায় করে নেন এবং স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি গ্রিজম্যান। এছাড়া নিজেও দুটি গোল করেন এই পিএসজির স্টার জর্জি সাম্পাওলির দলের বিপক্ষে।
কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স আরেক দক্ষিণ আমেরিকার জায়ান্ট উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে। বার্সা এবং পিএসজির তারকা যথাক্রমে লুইস সুয়ারেজ এবং এডিসন কাভানির উরুগুয়ে রাউন্ড সিক্সটিনে রাশিয়া বিশ্বকাপের আরেক নক্ষত্র ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগালকে পরাজিত করে শেষ আটে জায়গা করে নিয়েছে। চলতি বিশ্বকাপে দুইবারের শিরোপাজয়ীদের ফর্মও বেশ ভালো মনে হচ্ছে।
১৯৯৮ বিশ্বকাপের শিরোপাজয়ে ভূমিকা ছিল ভিয়েরার এবং ইউরো ২০০০ জয়ী দলের সদস্যও ছিলেন। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে তাদের এরকমই একটি জয়ের প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন তিনি।
গ্রুপ পর্বে ফ্রান্স নিজেদের খুঁজে পাচ্ছিল না কিন্তু আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয়টি তাদেরকে অবিশ্বাস এনে দিয়েছে এবং তারা ফাইনালেও যেতে পারেন বলে মনে করেন ভিয়েরা। বর্তমানে ফ্রেঞ্চ লিগ ওয়ানে নিসের কোচ ভিয়েরা বলেন, ‘আমি অন্যদের মতোই ফ্রান্সের গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্স নিয়ে ভিন্নভাবে কথা বলেছি। গ্রুপ পর্বে আমি তাদের থেকে আরো বেশি আশা করেছিলাম। মানুষজন একটু বেশি কর্কশ ও রুঢ়ই ছিল আমাদের জাতীয় দলের প্রতি। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে জয় দিয়ে দেশমের দল সেসব সমালোচনার জবাব দিয়েছে। আমার মনে হয় আমাদের ফ্রান্সকে এখন হারানো কঠিন।’
বিশ্বকাপ জয় প্রসঙ্গে ভিয়েরা বলেন, ‘আমি মন থেকে আশা করি তারা যেন রাশিয়া বিশ্বকাপ জয় করে। মেসির দলের বিপক্ষে তারা বেশ স্বাধীনতা নিয়ে খেলেছে। গ্রুপ পর্বে যা তাদের খেলায় ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ খেলাটি থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসই আমাদের দলকে ফাইনালে নিয়ে যাবে বলে মনে করি’। তবে লেস ব্লুসদের পথটা ফাইনালে যাওয়ার আগে আরো কঠিন হয়ে যাবে। কারণ তারা কোয়ার্টার ফাইনালে উরুগুয়ের বিপক্ষে জয়ী হলে সেমিফাইনালে ব্রাজিল বনাম বেলজিয়ামের ম্যাচের মধ্যকার জয়ী দল তাদের মুখোমুখি হবে।’
আরো পড়ুন : কাতার বিশ্বকাপ খেলবো : রামোস
রাশিয়া বিশ্বকাপের নক আউপ পর্ব থেকে প্রথম ম্যাচেই বিদায় কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না স্প্যানিশ অধিনায়ক সার্জিও রামোস। আর সেই হতাশা থেকেই রামোস বলেছেন, ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ পর্যন্ত তিনি জাতীয় দলে থাকতে চান। তখন বয়স ৩৬ বছর হলেও মুখে সাদা দাড়ি নিয়েই তিনি খেলতে নামবেন।
২০১০ সালে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা (৩৪) ও জেরার্ড পিকেকে (৩১) সাথে নিয়ে বিশ^কাপ জিতেছিলেন রামোস। এরপর টানা দু’টি বিশ^কাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পরে ইতোমধ্যেই ইনিয়েস্তা ও পিকে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। তাদের পথ ধরে স্পেনের স্বর্ণযুগের আরো সদস্য ডেভিড সিলভা (৩২), পেপে রাইনাদের (৩৫) যাওয়াও প্রায় নিশ্চিত।
তবে ৩২ বছর বয়সী রামোস বলেছেন, জাতীয় দলের হয়ে ১৫৬টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাকে তিনি আরো বাড়াতে চান। একই সাথে তিনি আরো বলেছেন তরুণ খেলোয়াড়রা যাতে উঠে আসে সেইজন্য তিনি সবসময়ই ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন। রামোস বলেন, ‘আমি কখনই খুব বেশি পরিবর্তনের পে নই। এটা পুরো দলের শেষ হয়ে যাওয়ার সময় নয়। পিকে, ইনিয়েস্তা আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। কিন্তু তাদের পেছনে অনেক খেলোয়াড়ই দারুণভাবে উঠে এসেছে। দলে দারুণ একটি তরুণ পদ্ধতি আছে। তরুণরা নিজেদের যোগ্যতা দিয়েই এখানে টিকে আছে। আমি আরো কয়েক বছর খেলতে চাই। তবে অত্যন্ত দুঃখ নিয়ে রাশিয়া থেকে চলে যাচ্ছি। কাতারে আবারো খেলার ল্য নিয়েই বাড়ি ফিরছি।’
উয়েফা নেশন্স লিগকে সামনে রেখে ফার্নান্দো হিয়েরো হয়তো আর জাতীয় দলের কোচ হিসেবে থাকছেন না। কিন্তু স্পেন ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক এই খেলোয়াড়ের প্রশংসাই করেছেন রামোস। টুর্নামেন্ট শুরুর মাত্র একদিন আগে আকস্মিকভাবে দলের দায়িত্ব পেয়ে তিনি যেভাবে স্পেনকে সামলেছেন তা অনেকের পইে হয়তো সম্ভব ছিল না। রামোস বলেন, আমরা কোচকে নিয়ে গর্বিত। যে সাহসিকতার সাথে তিনি দলকে সামলেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। এই ফলাফল সত্ত্বেও তিনি তার সেরাটা দিয়েছেন। সাবেক খেলোয়াড় হওয়াতে ফার্নান্দোর সাথে আমরা খুবই স্বাচ্ছন্দ্যে ছিলাম। এটা আমাদের ওপর নির্ভর করে না, কিন্তু ফার্নান্দো যদি দায়িত্বে থাকেন তবে খুব একটা খারাপ হবে না। অধিনায়ক হিসেবে স্প্যানিশ ফুটবলের জন্য যা ভালো সেটাই আমি চাইবো।