সুইস-সুইডের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ জুলাই ২০১৮, ১২:২০
মহাদেশীয় ফুটবলে পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বি সুইডেন-সুইজারল্যান্ড। প্রায় সম পর্যায়ের দল হিসেবে তাদের মধ্যকার দ্বৈরথ সর্বদা উত্তেজনার পসরা সাজিয়ে উপস্থিত হয়। পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যানেও দল দুটির কেউ কম যায় না। ২৭ ম্যাচের মধ্যে দুই দলই জয়োৎসব করেছে ১০ বার। ড্র হয়েছে অন্য ৭ লড়াই। বিশ্বকাপের খেলায়ও তাদের মধ্যকার মাঠের ফুটবলে জন্ম দিয়েছে চরম প্রতিদ্বন্দ্বিতার ইতিহাস। সর্বশেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জয় সুইডেনের। অবশিষ্ট দুই খেলায় জিতেছে সুইজারল্যান্ড। চির-প্রতিদ্বন্দ্বি দল দুটির সামনে নতুন সুযোগ উদ্ভাসিত পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা ঝালিয়ে নেয়ার। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ সাফল্যের অতীত টপকে যাওয়ার মিশনে রাউন্ড অব সিক্সটিনের লড়াইয়ে মুখোমুখি সুইডেন-সুইজারল্যান্ড। বাড়তি উত্তেজনার মোড়কে দল দুটি আজ ফিফার ২১তম বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উন্নীতের খেলায় মাঠে নামছে। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে।
পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে রুখে দেয়ার পর সুইসরা অপরাজিতভাবেই পা রেখেছে নকআউটে। ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের দলটি কোনো হার ছাড়াই টপকে গেছে প্রাথমিক রাউন্ড। তাদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যানও অত্যন্ত ঈর্ষণীয়। শেষ ২৫ ম্যাচে দলটির হার মাত্র একবার। গত বছরের অক্টোবরের পর থেকে মাঠের ফুটবলে অপরাজিত দল সুইজারল্যান্ড।
দারুণ ছন্দের মধ্যে থাকা সুইসরা বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খরা পেছনে ফেলার টার্গেটেই আজ পা রাখবে রাশান মেগা আসরের শেষ ষোলোর খেলায়। ৬৪ বছর রাউন্ড অব সিক্সটিনেই সমাপ্তি তাদের বিশ্বকাপ সাফল্য।
১৯৫৪ সালের আয়োজক হিসেবে সর্বশেষ ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরের শেষ আটে উঠেছিল সুইজারল্যান্ড। পুরনো ওই কৃতিত্বের পাশে নিজেদের অধিষ্ঠিত করতে মরিয়া সমকালীন জেনারেশনের সুইস ফুটবলারেরা। নিজেদের উজাড় করে দেয়ার মিশনে তারা প্রত্যেকেই প্রস্তুত। তবে তাদের স্বপ্ন পূরণের উৎসব নির্ভর করছে মাঠে পারফরম করার ওপর। দ্বিতীয় রাউন্ডের গুরুত্বপূর্ণ খেলায় রক্ষণভাগের প্রথম পছন্দের দুই ফুটবলারকে পাচ্ছে না সুইসরা। সাসপেনশন খাড়ায় আজ দর্শক সারিতেই কাটবে ফ্যাবিয়ান ও নিয়মিত অধিনায়ক লিখস্টেইনারের। সেরা একাদশ বেছে নেয়ার প্রশ্নে সুইডেনও রয়েছে বিপাকে। ইনজুরির কারণে তারা আজ পাচ্ছে না মধ্যমাঠের প্রাণভোমরা সেবাস্তিয়ান লারসেনকে।
মহাদেশীয় প্লে-অফে সুইডেনের উজ্জীবিত নৈপুণ্যে ফাঁদে আটকা চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইতালির রাশান বিশ্বকাপে অংশগ্রহণের স্বপ্ন। ইউরোপের জায়ান্টদের দুঃস্বপ্নের সাগরে ফেলে ফিফার ২১তম মেগা আসরে শুভসূচনা সুইডদের। দ্বিতীয় খেলায় জার্মানদের কাছে ধাক্কা খেলেও গ্রুপের শেষ ম্যাচে স্বমহিমায় দলটির ফুটবলারেরা। মেক্সিকানদের ৩-০ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নকআউটে সুইডেন।
বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ সাফল্য ১৯৯৪ সালের সেমিফাইনালে প্রতিনিধিত্বের অর্জন পিছনে ফেলার লক্ষ্যেই রাশান টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় রাউন্ডের লড়াইয়ে মাঠে পা রাখবেন সুইড ফুটবলারেরা। শক্তি ও দলীয় ভারসাম্য বিচারে কিছুটা হলেও সুইডরা এগিয়ে শেষ ষোলোর প্রতিপক্ষের চেয়ে। ১৯৯০ সালের পর প্রতিটি বিশ্বকাপের নকআউটে ওঠার ধারাবাহিক সাফল্য বাড়তি প্রেরণা জোগাচ্ছে দলটির আত্মবিশ্বাসী পারফরম্যান্স প্রদর্শনে। প্রতিপক্ষের জালে বল প্রবেশ করানোর ক্ষেত্রেও সুইডদের সাম্প্রতিক সাফল্য টেনশনে রাখবে সুইসদের। বিশ্বকাপের শেষ সাত ম্যাচের ছয়টিতেই গোল করার কৃতিত্ব রয়েছে সুইডেনের। ডিফেন্ডার গ্রানকুইস্ট মেক্সিকোর বিপক্ষে ডাবল আদায় করেন কিংবদন্তি হেনরিক লারসনের পর প্রথম সুইড ফুটবলার হিসেবে।