স্পেনের হয়ে আর খেলবেন না ইনিয়েস্তা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ জুলাই ২০১৮, ০১:২১
আগের রাতে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলেছেন আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার হাভিয়ের মাসচেরানো। আর রোববার বললেন স্পেনের কিংবদন্তী মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। দুজনেরই বয়স হয়েছে, তাই বিশ্বকাপের পর অবসরে যাওয়াটা অনুমেয়ই ছিলো; কিন্তু যেভাবে গেলেন সেটি তাদের ক্যারিয়ারের সাথে মোটেই মানানসই নয়।
স্পেন জাতীয় দলের হয়ে আর না খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির কিংবদন্তী মিডফিল্ডার আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। রোববার দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে রাশিয়ায় কাছে হেরে বিদায় নিয়েছে স্পেন। এই ম্যাচের পরই জাতীয় দল থেকে অবসর ঘোষণা করেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা।
ঘোষণাটা যে আসবে তা জানাই ছিলো। নিজেও আভাস দিয়েছিলেন বিশ্বকাপের আগে। রাশিয়ার বিপক্ষে হারের পর সেটাই জানিয়ে দিলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁকে আর দেখা যাবে না। এ মৌসুমেই দীর্ঘ দিনের ক্লাব বার্সেলোনা থেকেও অবসর নিয়েছেন। আর দু’একটি মৌসুম খেলবেন জাপানের ঘরোয়া ফুটবল লিগে।
স্পেনের জার্সিতে ১৩১ ম্যাচ খেলা কিংবদন্তি এই মিডফিল্ডার দেশের হয়ে জিতেছেন একটি বিশ্বকাপ ও দুটো ইউরো শিরোপা। বিদায় বেলা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘স্পেনের জার্সিতে এটাই আমার শেষ ম্যাচ। অসাধারণ এক অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো। যেভাবে শেষ করার স্বপ্ন দেখেন অনেক সময় তা নাও হতে পারে।’
২০০৬ সালে স্পেনের জার্সিতে অভিষেকের পর এই এক যুগে ইনিয়েস্তা অনেক কিছুই জিতেছেন। ২০১০ বিশ্বকাপ ফাইনালে তার গোলেই শিরোপা জিতেছে স্পেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেই বিশ্বকাপের আগে ২০০৮ সালে ও পরে ২০১২ সালে দুটি ইউরো জয়েও দারুণ ভূমিকা রেখেছিলেন গত এক যুগের অন্যতম সেরা এই মিডফিল্ডার। কিন্তু বিদায়টা তার সুখকর হলো না। স্পেনের মতো দলের কাছে দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে বিদায় নেয়াটা অপ্রত্যাশিতই।
রাশিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর এই ম্যাচে ইনিয়েস্তাকে প্রথম একাদশে খেলাননি স্পেন কোচ ফার্নান্দো হিয়েরো। তাঁকে মাঠে নামিয়েছেন ৬৫ মিনিটের পর। এরপর স্পেনের খেলার ধারও বেড়েছে। কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি ৩৪ বছর বয়সী এই মিডফিল্ডার। তবে ইনিয়েস্তার প্রথম একাদশে সুযোগ না পাওয়ার সিদ্ধান্তটা মেনে নিতে পারেননি তাঁরই জাতীয় দল সতীর্থ সেস ফ্যাব্রেগাস। ফ্যাব্রেগাস বলেছেন, ‘এভাবে বিদায়টা তাঁর প্রাপ্য ছিল না। আমি অবশ্যই মনে করি তাঁকে শুরু থেকে খেলানো যেত।’
আরো পড়ুন : আর্জেন্টাইনদের ধুয়ে দিলেন ম্যারাডোনা
আগেই বলেছিলেন, এই দল প্রথম রাউন্ডের গণ্ডি পার হতে পারবে না। অবশ্য শেষ পর্যন্ত ‘মরতে মরতে বেঁচে গেছে’ লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা; কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়েই দেখা গেছে তাদের আসল চেহারা। তাইতো ডিয়াগো ম্যারাডোন এবার রীতিমতো ধুয়ে দিলেন আর্জেন্টিনা দলকে।
শনিবার ফ্রান্সের কাছে ৪-৩ গোলে পরাজিত হওয়ার পর শেষ হয়ে হয়েছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্বপ্ন। দেশটির ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক ফুটবল ঈশ্বর খ্যাত ডিয়াগো ম্যারাডোনা বলেছেন, ‘লিওনেল মেসিকে ছাড়া এই দলটা আর্জেন্টিনাই নয়, (যেন অন্য কোন সাধারণ টিম)।
এর আগেও সাম্পাওলির দলের খেলোয়াড়দের সামর্থ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ম্যারাডোনা। বারবারই বলেছন, এই দলে মেসি ছাড়া অন্যদের ওপর তেমন ভরসা রাখতে পারছেন না তিনি। কাজানে ফ্রান্সের কাছে হারার পর টেলেসার টিভি চ্যানেলকে ম্যারাডোনা বলেন, চমকে দেয়ার মতো কিছুই দেখা যায়নি এই ম্যাচে। তিনি বলেন, মাঠে নয়, আমরা যেন সিনেমা দেখতে এসেছি। যেখানে মৃত্যুর ঘোষণা পাঠ করা হবে এবং তাই ঘটেছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ফ্রান্স মেসিকে ও আর্জেন্টিনার মাঝমাঠকে বোতলবন্দী দকরে রেখেছে। তাই সে তাদের কাছ থেকে সাপোর্ট পায়নি। মেসিকে ছাড়া এই দলটা যেন আর্জেন্টিনাই নয়। আমরা যা আশঙ্কা করেছিলাম তাই ঘটেছে। আমরা যা ভাবতাই তাই হয়েছে।
ম্যারাডোনা আর্জেন্টিনার শিরোপা খরা নিয়ে বলেন, ‘আরো একটি বিশ্বকাপ শেষ হলো এবং আমরা খালি হাতে বিদায় নিলাম। এটা খুবই খারাপ কথা যে, আর্জেন্টিনা সুসংহত দল হয়ে খেলতে পারলো না।
সাম্পাওলি খেলার কৌশলের ধরণ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, আমরা দেখেছি পাভোন, মেসি ও ডি মারিয়াকে আক্রমণে রাখা হয়েছে। তারা হয়তো ভালো প্লেমেকার কিন্তু তারা প্রকৃত স্ট্রাইকার নয়’।