কাউন্টার অ্যাটাকে ভয়ঙ্কর ফ্রান্স
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ জুন ২০১৮, ২০:৫৮
পুরো প্রথমার্ধে বল দখলে এগিয়ে ছিলো লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। কিন্তু শতকরা ৬৪ ভাগ বল দখলে ছিলো মেসিদের; কিন্তু তারা কার্যকর আক্রমণ করতে পেরেছেন খুবই কম। বরং উল্টো বেশ কয়েকটি কাউন্টার অ্যাটাক করে আর্জেন্টিনা শিবিরে ভীতি ছড়িয়েছে ফ্রান্স।
আর্জেন্টাইনরা নিজেদের অর্ধে বল পেয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে আক্রমণে যায় বারবার; কিন্তু ফ্রান্সের দুর্ভেদ্য রক্ষণ ভেঙে তারা ডি-বক্সে ঢুকতে পেরেছে খুব কমই। আক্রমণে আর্জেন্টিনা কতটা পিছিয়ে ছিলো তার প্রমাণ ৪১ মিনিটে ডি মারিয়া যে গোল করেছেন, সেটিই ছিলো বারপোস্ট লক্ষ্য করে আর্জেন্টিনার প্রথম শট। তাও বক্সের অনেক বাইরে থেকে দুরপাল্লার শটে।
কিন্তু ফ্রান্স বেশ কয়েকবার ভয়ঙ্কর সব কাউন্টার অ্যাটাক করেছেন। নিজেদের সীমান্তে বল পেলেও তারা দ্রুত লম্বা পাস দিয়েছেন স্ট্রাইকার এমবাপ্পে বা গ্রিয়েজম্যানকে। দ্রুত গতির এই দুই তারকার সাথে কুলিয়ে উঠতে পারছেনা আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডাররা। ১১ মিনিটে এমনি একটি আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে এমবাপ্পেকে ফাউল করেন মার্কোস রোহো। পেনাল্টি পায় এবং গোল করে এগিয়ে যায় ফ্রান্স। পুরো প্রথমার্ধে ফ্রান্স একটি মাত্র গোছানো আক্রমণ করেছে(৩৯ মিনিটে)।
ফ্রান্সের ফরোয়ার্ডদের গতির কাছে আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডারদের অসহায় মনে হয়েছে প্রথমার্ধে। ১-১ গোলে সমতা নিয়ে উভয় দল বিরতীতে গেছে।
বিরতির সময় মাঠে নামবে আর্জেন্টিনার সেই গোলরক্ষক
কিভাবে তিনি আর্জেন্টিনার মতো দলের গোলরক্ষক হলেন সেটা নিয়ে যখন মোটা দাগের প্রশ্ন? তখন সেই লোকের উপরই বিশ্বাস রাখছেন দেশটির কোচ। এমনিতেই বিশ্বকাপের নকআউট রাউন্ড অন্যরকম উত্তেজনা। আর সে উত্তেজনায় নতুন মাত্রা যোগ করে পেনাল্টি শুটআউট। প্রত্যেকবারেই পেনাল্টি শুটআউটে কপাল পুড়ে বিদায় নেয় অনেকে আবার এখানেই দক্ষতা দেখিয়ে চলে যায় পরের রাউন্ডে।
বিশ্বকাপে পেনাল্টি শুটআউট ভাগ্য অন্য দলগুলোর থেকে একটু বেশিই ভালো আর্জেন্টিনার। সেক্ষেত্রে হয়তো শেষ সময়ে মাঠে দেখা যাতে পারে বিশ্বকাপের বিতর্কিত গোলরক্ষক উইলি কাবায়েরোকে।
গত বিশ্বকাপে কোস্টা রিকার বিপক্ষে নেদারল্যান্ডসের গোলরক্ষক টিম ক্রুলের শেষ সময়ে নেমে পেনাল্টি শুটআউটে দলকে জেতানোর স্মৃতি এখনো জ্বলজ্বল সবার কাছে। সেই রকম কিছুই এবার হতে পারে ফ্রান্সের বিপক্ষে যদি ম্যাচটি অতিরিক্ত সময়ে গড়ায়।
বিশ্ব মঞ্চে মোট পাঁচবার পেনাল্টি শুট আউটে গিয়ে চারবারই শেষ হাসি হেসেছে আর্জেন্টিনা। যা অন্য সব দলের থেকে বেশি। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে শিশুসুলভ ভুল করে দলকে হারালেও কাবায়েরোর পেনাল্টি শুট আউটের দক্ষতা আর্জেন্টিনার বর্তমান গোলরক্ষকদের চেয়ে একটু বেশিই ভালো।
ফুটবল ক্যারিয়ারে নেইমার, রোনালদো, এডিন হ্যাজার্ড, অস্কার, কৌতিনহো, ফ্যালকাও, রিয়াদ মাহরেজের মোট ফুটবলারদের পেনাল্টি সেভ করেছেন তিনি। লিভারপুলের বিপক্ষে লিগ কাপের বিপক্ষে টানা তিনটি পেনাল্টি সেভ করে দলকে শিরোপাও এনে দেন তিনি। এখন পর্যন্ত ক্লাব পর্যায়ে ম্যাচের ভেতর ২৭টি পেনাল্টির মুখোমুখি হয়ে ১১টিই সেভ করেছেন কাবায়েরো।
হোর্হে সাম্পাওলির পরিকল্পনাতেও কাবায়েরো যে বেশ ভালোভাবেই রয়েছেন সেটা বোঝা গেছে গতকাল তাকে দিয়ে পেনাল্টির অনুশীলন করানোর জন্য। অনুশীলনে ২টি পেনাল্টি সেভ করেন কাবায়েরো, যেখানে আরমানি একটিও রুখতে পারেননি। আর এবারের বিশ্বকাপের নতুন নিয়ম অনুযায়ী অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটের মধ্যে একজন খেলোয়াড় বদলি করার নিয়ম চালু করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে এই ম্যাচে হয়তো শেষ সময়ে দেখা যেতে পারে কাবায়েরোকে।