পদত্যাগ নিয়ে যা বললেন জার্মান কোচ
- গোল ডট কম
- ২৮ জুন ২০১৮, ১৮:৩৮
বিশ্বকাপের কয়েকদিন আগেও সম্ভাব্য চ্যাম্পিয়নের ছোট্ট তালিকায় যাদের নাম সবার উপরে ছিলো, সেই জার্মানি বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে গ্রুপ পর্বে। এবারের বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় অঘটন সম্ভবত এটিই। আর এই পরিণতির পর জার্মানি দলে যে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, সেটিও আলোচনা শুরু হয়েছে গেছে। গুঞ্জন উঠেছে কোচ জোয়াকিম লো’র পদত্যাগ নিয়ে।
দীর্ঘ ১২ বছর ধরে দলটির সাথে আছেন লো। তার হাত ধরেই গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী দল পেয়েছে জার্মানি। এই দল নিয়েই গত বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছেন তিনি। কিন্তু এই অঘটনরে পর হয়তো তাকে ইতি টানতে হবে জার্মান ফুটবল দলের সাথে এক যুগের সম্পর্কের।
পদত্যাগ নিয়ে যে কথা উঠেছে সেটি কানে গেছে স্বয়ং লো’রও। বিষয়টি তাই কথা বলেছেন তিনিও। ম্যাচের পর জো জানিয়েছেন এ বিষয়ে তার বক্তব্য। সেখানে পদত্যাগের আভাস দিয়েছেন জার্মান কোচ। তবে সঠিক দিনক্ষণ কিছুই বলেননি। লো সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি চাকুরি ছাড়বো কি না সেই প্রশ্নে জবাব এত তাড়াতাড়ি দেয়া যাবে না। এখনো হতাশা কাটিয়ে উঠতে পারিনি। জার্মান কোচ বলেন, ‘এমন হবে চিন্তাও করতে পারিনি। আমি আশাবাদী ছিলাম। (ভবিষ্যত) চিন্তা করার জন্য আমার সময় দরকার। আগামীকাল আমি এ বিষয়ে কথা বলবো।’
অবশ্য দলের এই ভরাডুবির জন্য কোন অজুহাত দাড় করাতে চাননি জার্মান কোচ। জোয়াকিম লো বলেন, ‘এই মূহুর্তে বলা কঠিন কেন আমরা বিদায় নিলাম। তবে আমরা ব্যাপক হতাশ। আমরা আবার বিশ্বকাপ জয়ের যোগ্য ছিলাম না, এমনকি শেষ ষোলয় যাওয়ারও যোগ্য দল নই’।
আরো পড়ুন : সার্বিয়ার কোচের চোখে আধুনিক ফুটবলের পরাশক্তি ব্রাজিল
সার্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে ব্রাজিলকে অনেক হিসাব-নিকাশ করতে হয়েছিল। কেননা কোন কারণে ম্যাচটিতে হেরে গেলে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার আশঙ্কা ছিল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ানদের। কিন্তু বুধবার দিবাগত রাতে মাঠে নামার পর একবারের জন্যও ব্রাজিলের বুকে কাঁপুনি তুলতে পারেনি সার্বিয়ানরা। বরং দুর্দান্ত খেলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান হয়ে ব্রাজিল বিদায় জানিয়েছে সার্বিয়াকে।
এই হারের পর, প্রতিপক্ষ ব্রাজিল বলে নিয়তিটা মেনেই নিয়েছেন সার্বিয়া কোচ ম্লাদেন ক্রাস্তাইচ। স্বীকার করে নিয়েছেন ‘আধুনিক ফুটবলের পরাশক্তি’ ব্রাজিলের সাথে তাদের ব্যবধান অনেক।
বুধবার ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে মস্কোর স্পার্তাক স্টেডিয়ামে ব্রাজিলের কাছে ২-০ গোলে হেরে রাশিয়ার আসর থেকে ছিটকে যায় সার্বিয়া। নকআউট পর্বে উঠতে হলে জিততে হতো সার্বিয়াকে। কিন্তু পাউলিনিয়ো ও চিয়াগো সিলভার গোলে সে আশা গুঁড়িয়ে যায়। ম্যাচ শেষে ব্রাজিলের সাথে সার্বিয়ার ব্যবধান তুলে ধরেন ক্রাস্তাইচ।
‘ব্রাজিলের গোল করার মুহূর্তটি ছাড়া প্রথমার্ধে আমরা এগিয়ে ছিলাম। এ মুহূর্তগুলোতেই খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত নৈপুণ্যটা বেরিয়ে আসে।’
‘আমরা একটা আধুনিক ফুটবলের পরাশক্তির বিপক্ষে জয়ের জন্য নেমেছিলাম এবং আমরা সেটা পারিনি। তবে আমি আমাদের খেলোয়াড়দের তাদের সাহসী প্রচেষ্টা, সার্বিয়ার ব্যাজ এবং জার্সির প্রতি তাদের মনোভাবের জন্য অভিনন্দন জানাই।’
‘আমরা ওপরে উঠে খেলেছি এবং দ্বিতীয়ার্ধে ঝুঁকি নেওয়ার চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ব্রাজিলের মতো ফুটবল পরাশক্তিদের বিপক্ষে এমন একটি ম্যাচ খেলা খুবই কঠিন।’
‘ফুটবলে এটাই হয়। আমাদেরকে নিজেদের খেলার মান ওপরে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আরও বেশি ঝুঁকি নিয়েছিলাম। আমরা আমাদের সুযোগ পেলাম কিন্তু আমরা শাস্তি পেলাম।’
ম্যাচের ৬৮তম মিনিটে নেইমারের কর্নারে সিলভা ব্যবধান দ্বিগুণ করার আগ মুহূর্তে ব্রাজিলকে ভীষণ চাপে রেখেছিল সার্বিয়া। কিন্তু ওই গোলের পর সার্বিয়াকে কোণঠাসা করে ফেলে তিতের দল। ক্রাস্তাইচ ব্রাজিলের রক্ষণের প্রশংসাও করেছেন। ‘যখন আপনি রক্ষণ সামলাবেন, আপনাকে শৃঙ্খল হতে হবে। এবং এটা শুধু দেখিয়েছে আসলেই ব্রাজিল কতটা শক্তিশালী।’
গত অক্টোবরে দায়িত্ব পাওয়া ম্লাদেনের অধীনে রাশিয়ার আসরে খেলতে আসা সার্বিয়া গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের দুটিতে হেরেছে; একটিতে জিতেছে। ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থেকে ছিটকে গেছে। তবে কোচের দাবি, দল তাদের সবটুকুই দিয়েছে।
‘ছেলেরা তাদের সবটুকু দিয়েছিল। আট বছর বড় টুর্নামেন্টে খেলতে না পারার পর বিশ্বকাপে এসে আমরা আমাদের সত্যিকারের জাতটা দেখাতে চেয়েছিলাম। আমাদের পারফরম্যান্সে আমরা তৃপ্ত হতে পারি।’ ‘আমরা জানি ব্রাজিল কঠিন প্রতিপক্ষ ছিল। যা হয়েছে, হয়ে গেছে। আমরা ২-০ গোলে হেরেছি। এটাই জীবন।’