কী ধরণের খাবার খান বিশ্বকাপ তারকারা?
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ জুন ২০১৮, ১৬:০৭, আপডেট: ২৮ জুন ২০১৮, ১৬:২৬
জনি মার্শ বিশ্বের বেশ কয়েকজন শীর্ষ ফুটবলারের ব্যক্তিগত শেফ। ওই ফুটবলারদের বাড়িতে গিয়ে তিনি রেঁধে দিয়ে আসেন। এদের মধ্যে রয়েছেন ইংল্যান্ড দলের ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার এবং গোলকিপার জর্ডান পিকফোর্ড।
মার্শের কাস্টমারের তালিকায় একইসাথে রয়েছেন বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রাইনা এবং মারওয়ান ফেলাইনি। এরা দু'জনেই ইংলিশ প্রিমিয়ারশিপেরও তারকা।
বিশ্বকাপের এই তারকাদের জন্য কী কী রাঁধেন জনি মার্শ?
কাইল ওয়াকারের পছন্দ স্প্যাগাতি-বোলোনেজ
রাশিয়ায় প্রতিটি দলের নিজস্ব শেফের টিম রয়েছে। টুর্নামেন্ট চলাকালে খেলোয়াড়রা কী খাবেন সে সিদ্ধান্ত অনেকটাই নেন টিম ম্যানেজার।
"গ্যারেথ সাউথগেট আমাকে ডাকবেন বলে এখনও আমি আশা করছি, কিন্তু আমি জানি মাঠে ফুটবলাররা কতটা পারফর্ম করবেন, তার পাঁচ থেকে ১০ শতাংশ নির্ভর করে তারা ম্যাচের আগে কী খাচ্ছেন তার ওপর।''
একেক ফুটবলারের পছন্দ একেক-রকম। কিন্তু ইংলিশ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার ম্যাচের আগে চান স্প্যাগেতি বোলোনেজ। এটি একটি ইটালিয়ান খাবার। গরুর কিমা এবং টম্যাটো দিয়ে সস বানিয়ে সিদ্ধ স্প্যাগেতি বা পাস্তার সাথে পরিবেশন করা হয়।
তবে ওয়াকার একটু ভিন্নভাবে খাবারটি চান। তার পাস্তা সিদ্ধ করা হয় বিটরুটের রসে যাতে ওই পাস্তা বিটরুটের আয়রন এবং নাইট্রেট শুষে নিতে পারে। এই দুই খনিজ দ্রব্য মাঠে তাকে বাড়তি শক্তি দেয়।
কেভিন দ্য ব্রাইনা চান প্রচুর শর্করা
"আমার ক্লায়েন্টদের নিয়ে আমি অত্যন্ত খুশি, কারণ তারা খুঁতখুঁতে নন। তারা চান সাদাসিধে খাবার, কিন্তু তাতে থাকতে হবে পুষ্টি।"
যেমন, বেলজিয়াম এবং ম্যানচেস্টার সিটি ক্লাবের তারকা কেভিন ডি ব্রাইনা চান ম্যাচের আগে তার খাবারে যেন যথেষ্ট শর্করা থাকে, তবে খুব ভারি যেন না হয়। আর ম্যাচের পর তিনি চান আমিষ - মাংস।
শেষবার তার ম্যাচের আগে শেফ জনি কেভিনের জন্য তৈরি করেছিলেন, বার-বি-কিউ চিকেন টাকো। একটি মোটা রুটির ভেতর বার-বি-কিউ করার মুরগির মাংসের টুকরো ঢুকিয়ে তার সাথে লেটুস পাতা, টম্যাটো এবং অ্যাভোকাডো ফলের ফালি দিয়ে রোল করে বানানো হয় মেক্সিকান ঘরানার এই সহজ খাবারটি। সাথে কেভিনকে তিনি দিয়েছিলেন গাজর এবং বাঁধাকপির সালাদ।
খুবই মজার!
গোলকিপারদের খাবারের পছন্দ ভিন্ন
ইংল্যান্ড দলের গোলকিপার জর্ডান পিকপোর্ড ম্যাচের আগে খুব বেশি খেতে চান না। দরকারও নেই, কারণ অন্য ১০ জন খেলোয়াড়ের চেয়ে গোলকিপারকে ছুটতে হয় কম। ফলে তার শক্তি খরচও হয় কম।
মাঝে মধ্যে ফুটবলাররা রুটিনের বাইরে বেরুতে চান। ফাস্ট ফুড খেতেও চান।
"তারা যদি বার্গার এবং ফ্রাই চান, আমি তাদের জন্য মসলাদার টার্কি বার্গার করে দিই, খেয়াল রাখি বেশি যেন তেল-চর্বি ব্যবহার না হয়।"
"মিষ্টি খাওয়ার ওপর অনেক বিধিনিষেধ রয়েছে। কিন্তু অনেকেই মিষ্টি পাগল। বিশেষ করে ম্যাচের পর তারা পুডিং দাবি করেন...আমি আমার ক্লায়েন্টদের "অ্যাভোকাডো-চকলেট মুস" তৈরি করে দেই, সাথে কিছু প্রোটিন যোগ করে দেই, যাতে দ্রুত তাদের ক্লান্তি কাটে।"
ইলকে গুনদোগান চান তুর্কি খাবার
জার্মানি এবং ম্যানচেস্টার সিটির ইলকে গুনদোগান জার্মান। কিন্তু তিনি তুর্কি বংশোদ্ভূত।
"সুতরাং তার জন্য খাবার তৈরির সময় আমি চেষ্টা করি যেন তার মা-বাবার দেশের (তুরস্কের) খাবারের স্বাদ-গন্ধ যতটা সম্ভব রাখতে পারি।''
"অধিকাংশ সন্ধ্যায় আমি খাবার রেঁধে কেভিনের বাড়িতে পৌঁছে দিই, তারপর ইলকের বাড়িতে গিয়ে রান্না করি...অনেক সময় তার সাথে বসে ডিনার খাই।"
স্বপ্নের ক্লায়েন্ট...
তবে জনি মার্শের স্বপ্নের ক্লায়েন্ট অবশ্যই ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো।
"আমি তাকে ভীষণ পছন্দ করি। আমি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফ্যান, সে আমার হিরো।"
রোনালদো এবং ফ্রান্সের পল পগবার জন্যও রাঁধতে চান ম্যানচেস্টারের এই ইংলিশ শেফ। আশা করছেন সে সুযোগ তার হবে।
আরো পড়ুন : দ. কোরিয়া-মেক্সিকো ভাই ভাই
এবার বিশ্বকাপে মেক্সিকো সমর্থকরা আরেকটি দেশকে প্রাণখুলে অভিনন্দিত করেছে, সেটি হলো দক্ষিণ কোরিয়া। বুধবার জার্মানির বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়া ২-০ গোলে জয় পাওয়ার ফলে সুইডেনের কাছে বড় ব্যবধানে হারলেও পরের পর্ব নিশ্চিত করে মেক্সিকো।
ম্যাচ শেষে মেক্সিকো সিটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার দূতাবাসে বিপুল সংখ্যক মানুষ মেক্সিকোর পরের রাউন্ডে উত্তরণ উদযাপন করে। সেখানে জড়ো হওয়া মানুষ কোরিয়ানদের 'ভাই' বলে শ্লোগান দেয়।
দক্ষিণ কোরিয়া আর মেক্সিকোর মিশ্র পতাকা, বন্ধুত্ব ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে পোস্ট আর টুইট, এমনকি কোরিয়ান পপ সঙ্গীত বা কে-পপ শোনার প্রতিজ্ঞা করেও অনলাইনে পোস্ট দেন মেক্সিকানরা।
মেক্সিকোর একটি পানশালায় ২২ বছর বয়সী সেসিলিয়া গঞ্জালেজ সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, "ধন্যবাদ কোরিয়া। আমি জানিও না দেশটি কোথায় কিন্তু তোমাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।"
রাশিয়ার একটি বিশ্বকাপ পার্কে সুইডেন আর মেক্সিকোর সমর্থকরা একসাথে 'বিদায় জার্মানি' স্লোগান দিয়ে তাঁদের দলের পরের পর্বে যাওয়া উদযাপন করেন।
দক্ষিণ কোরিয়া আর মেক্সিকোর মিশ্র একটি পতাকার ছবি বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে সামাজিক মাধ্যমে।
জার্মানিকে হারানোয় অনেক দক্ষিণ কোরিয়ানও ইন্টারনেটে তাদের আনন্দ প্রকাশ করেন।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে দক্ষিণ কোরিয়া খালি হাতে বিদায় নিলেও, রাশিয়ায় খেলা দেখতে যাওয়া দক্ষিণ কোরিয়ান সমর্থকরা হয়তো দেশে ফেরার আগে পাবেন বেশকিছু মেক্সিকান বন্ধু।