জাকা-শাকিরির পাশে সুইস জনগণ
- রফিকুল হায়দার ফরহাদ, রাশিয়া থেকে
- ২৭ জুন ২০১৮, ১৪:৩৭, আপডেট: ২৭ জুন ২০১৮, ১৪:৪৫
সার্বিয়ার বিপক্ষে গোল করে যে স্টাইলে গোল উৎসব করেছেন গ্রান্ট জাকা এবং জারদান শাকিরি তা পছন্দ হয়নি ফিফার। সার্বিয়াও এর আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে। ফলে ফিফা জরিমানা করেছে সুইজারল্যান্ডের এই দুই ফুটবলারকে। সাথে ডিফেন্ডার স্টিফেন লিসেসটেইনারকেও।
গোল দেয়ার পর জাকা-শাকিরি দু'জনই বুকে দুই হাত আড়াআড়ি রেখে আলবেনিয়ার পতাকা সদৃশ্য চিহ্ন বুঝিয়েছেন। এ জন্য ফিফার ডিসিপ্লিনারি কমিটি জাকা ও শাকিরিকের ১০ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক এবং লিসেসটেইনারকে পাঁচ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক জরিমানা করেছে।
এই অর্থ পরিশোধের উদ্যোগ নিয়েছেন সুইজারল্যান্ডের জনগণ। তারা ইতোমধ্যে ১৯ হাজার ডলার সংগ্রহ করে ফেলেছে। তাদের লক্ষ্য ১৮ ঘণ্টার মধ্যে ২৫ হাজার ডলার যোগাড় করা।
জাকা এবং শাকিরি আলবেনিয়ান বংশোদ্ভূত কসোভোর নাগরিক। সার্বিয়া হামলা করেছিল স্বাধীনতা ঘোষণা করা কসোভোর আলবেনিয়ানদের উপর। এর পর দেশ ছাড়া হন হাজার হাজার আলবেনিয়ান মুসলমান। ১৯৯৯ সালে ন্যাটোর হামলায় ক্ষান্ত হয় সার্বিয়ানরা।
তহবিল সংগ্রহ করা সংস্থাটি জানায়, সুইস ফুটবল ফেডারেশন যদি তাদের অর্থ গ্রহণ না করে তা হলে তা দিয়ে দেয়া হবে দাতব্য সংস্থাকে।
আরো পড়ুন : একই দিনে দুই বুড়ো
একই দিনে তিনটি রেকর্ড। এতে বিজয়ের হাসি অস্কার তাবারেজ ও তার দল উরুগুয়ের। কিন্তু রেকর্ড গড়া ম্যাচে দুর্দান্ত খেললেও দলকে জেতাতে পারেননি মিসরের গোলরক্ষক ইশাম এল হাদারে। ১-২ দুই গোলে হেরে একেবারেই খালি হাতে দেশে ফিরতে হলো মিসরকে।
সৌদি আরবের বিপক্ষে ভলগোগার্ডে গত পরশু অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড়ের রেকর্ড গড়লেন এল হাদারে। ৪৩ বছর ১৬১ দিন বয়সে বিশ্বকাপ খেললেন তিনি। এর আগে এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন কলম্বিয়ান গোলরক্ষক ফারেড মনদ্রাগন। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপে লেবানিজ বংশোদ্ভূত এই কিপার ৪৩ বছর ৩ দিন বয়সে ম্যাচ খেলে এত দিন বেশি বয়সী ফুটবলারের রেকর্ডটি ধরে রেখেছিলেন। ব্রাজিল বিশ্বকাপে জাপানের বিপক্ষে ৮৫ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমে রেকর্ডটি করেছিলেন তিনি। এল হাদারের মতে, এই রেকর্ড শুধু আমার একার নয়, মিসরীয়দের। এ জন্য আমি ধন্যবাদ দিচ্ছি মহান আল্লাহ তায়লাকে। বিশ্বকাপের পরই অবসরে চলে যাবো আমি।’ জানান, কঠোর পরিশ্রম ও প্রশিক্ষণে একাগ্রতাই আমাকে রেকর্ড গড়তে সাহায্য করেছে।’
হাদারি তার ক্যারিয়ারে মিসরকে চারবার আফ্রিকান নেশন্সন কাপে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন। ২০১৩ সালে জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও পরে মত পাল্টিয়ে ফেরেন মিসর দলে। পরশু বিদায়ী ম্যাচে তার কাঁধে দেয়া হয় দলের নেতৃত্ব। দারুণ খেলেছেন। সৌদি ফুটবলার ফাওয়াদ আল মুয়াল্লাদের নেয়া পেনাল্টি শট ঠেকিয়েছেন।
পরশু হাদারির মতোই রাশিয়ার বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি বয়সী কোচ হিসেবে মাঠে ছিলেন উরুগুয়ের কোচ অস্কার তাবারেজ। অবশ্য এটা বিশ্বকাপ রেকর্ড নয়। রাশিয়া বিশ্বকাপ রেকর্ড। তার চেয়ে বেশি বয়সী কোনো কোচ এবার চলমান বিশ্বকাপে ডাগ আউটে দাঁড়াননি। বর্তমানে তাবারেজের বয়স ৭১। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি বয়সী কোচের রেকর্ড জার্মানির অট্টো রেহেগেলের দখলে। ২০১০ সালের দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপে গ্রিসের কোচ হিসেবে ৭১ বছর ৩১৭ দিন বয়সে ডাগ আউটে দাঁড়ান তিনি।
পরশু রাশিয়ার বিপক্ষে উরুগুয়ের ৩-০ গোলের জয়ও একটা রেকর্ড। এই প্রথম ১৯৩০ ও ১৯৫০ সালের চ্যাম্পিয়নরা গ্রুপ পর্বে টানা তিন ম্যাচ জিতল। বর্ষিয়ান কোচ অস্কার তাবারেজের সময়ে একের পর এক রেকর্ড করে যাচ্ছে উরুগুয়ে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে উরুগুয়ে গ্রুপ পর্বে জয় পেয়েছিল ২-১-এ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এবং ১-০তে ইতালির বিপক্ষে। ইউরোপের কোনো দেশের বিপক্ষে উরুগুয়ের এই জয় ছিল ৪৪ বছর পর। এবার ‘এ’ গ্রুপে উরুগুয়ে প্রথম দুই খেলায় জয় পায় মিসর ও সৌদি আরবের বিপক্ষে। তাদের প্রথম দুই ম্যাচে এই জয়ও ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের পর।
৪০ বছর পর ২০১০ বিশ্বকাপে এই ল্যাতিন দেশটির সেমিফাইনালে যাওয়া। তাও এই অস্কার তাবারেজের দখলে। ২০১১ তে তিনি উরুগুয়েকে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছেন কোপা আমেরিকায়।