১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

ব্রাজিলের জন্য দুঃসংবাদ

ব্রাজিল, বিশ্বকাপ
নেইমারের সাথে কস্তার গোল উদযাপন - সংগৃহীত

বিপদ আরো বাড়ল ব্রাজিলের। হ্যামস্ট্রিংয়ে চোটের কারণে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে নাকি খেলতে পারবেন না ডগলাস কস্তা। ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম গ্লোবা এস্পোর্তো জানিয়েছে, পুরো সুস্থ হয়ে উঠতে দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগতে পারে ডগলাস কস্তার। আর সেটা যদি ঠিক হয়, তাহলে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের হয়ে মাঠে নামার আর কোনো সুযোগ পাবেন না জুভেন্তাসের এই উইঙ্গার। কারণ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে ১৫ জুলাই। আপাতত বেস ক্যাম্পে রেখেই ডগলাসকে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা চলছে। তাই সোচি থেকে গ্রুপের শেষ ম্যাচ খেলতে মস্কোয় নিয়ে যাওয়া হয়নি তাকে। চোট রয়েছে ড্যানিলোরও। তিনিও হয়তো সার্বিয়ার বিরুদ্ধে খেলতে পারবেন না। তবে ব্রাজিলের চিকিৎসক জানিয়েছেন, ড্যানিলোর চোট ততটা গুরুতর নয়।

হতে পারে সুইজারল্যান্ড ও কোস্টারিকার বিরুদ্ধে প্রথম একাদশে জায়গা পাননি ডগলাস কস্তা। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে বদলি হিসাবে মাঠে নেমে দুর্দান্ত ফুটবল খেলেছিলেন জুভেন্তাসের উইঙ্গারটি। ডানপ্রান্ত দিয়ে একের পর এক আক্রমণ শানিয়ে বিপক্ষ দলের ডিফেন্সকে ছারখার করে দিতে সফল হয়েছিলেন ডগলাস। চোট না পেলে গ্রুপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে সার্বিয়ার বিরুদ্ধে তিনি সম্ভবত শুরু থেকেই মাঠে নামার সুযোগ পেতেন।

তার চোটের ব্যাপারে ব্রাজিল দলের চিকিৎসক রডরিগো লাসরাম জানিয়েছেন, ডগলাস কস্তা ডান পায়ের হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়েছেন। তার সারতে সময় লাগবে।

লাসরাম নির্দিষ্ট করে কিছু না বললেও, ব্রাজিলের এক সংবাদপত্র দাবি করেছে, কস্তার সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে কমপক্ষে ১৫-২০ দিন সময় লাগবে। আর সেটা যদি সত্যি হয়, তাহলে কস্তাকে ভুলেই রণকৌশল সাজাতে হবে ব্রাজিলের কোচ তিতেকে।

ব্রাজিলের সাবেক ফুটবলার রিভাল্ডো বলেছেন, ‘কস্তার গুরুত্ব কতটা সেটা আমরা কোস্টারিকা ম্যাচেই বুঝে গেছি। দ্বিতীয়ার্ধে উইলিয়ানের বিকল্প হিসাবে মাঠে নেমেই ও জাত চিনিয়েছিল। আমার মনে হয় বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার ভয়েই হয়তো কস্তা চোটের কথা চেপে গিয়েছিল। সেটা ও ঠিক করেনি।’

 

আরো পড়ুন : শুধু নেইমার নন, এমন নাটক আরো অনেকেই করেছেন

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে ২-০ গোলে জিতেছে ব্রাজিল। এই ম্যাচে জয়ের ফলে শেষ ১৬'র দৌড়ে এগিয়ে আছে তারা। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আলোচনায় নেইমারের পড়ে যাওয়ার নাটক।

ঘটনাটি ঘটে ম্যাচের ৭৮ মিনিটে। কোস্টারিকার ডি বক্সে রক্ষণভাগের খেলোয়াড় গঞ্জালেজের সাথে কোনো সংঘর্ষ না হওয়ার পরও মাটিতে পড়ে যান নেইমার, যেন বড় ধরণের কিছু একটা হয়েছে। রেফারিও বুঝতে পারেননি যে এটি ছিল নেইমারের অভিনয় মাত্র, ফলে বাঁশিও বাজান তিনি। কিন্তু কোস্টারিকার খেলোয়াড়দের তীব্র প্রতিবাদে ভিএআরের সহায়তা নেন রেফারি। আর রিপ্লেতে দেখা গেলো রীতিমত নাটক করেই পড়ে গেছেন নেইমার। তখন বাতিল হয়ে যায় পেনাল্টির সুযোগ। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠে নেট দুনিয়ায়।

তবে এই ঘটনা এবারই প্রথম নয়। একমাত্র নেইমারই এমন কাণ্ড করেননি, এই তালিকায় আছে আরো অনেকে। জানুন-

ঈশ্বরের হাত : এই তালিকায় প্রথমই আছেন আর্জেন্টিনার কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপে তার অসাধারণ পারফরমেন্সে শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। তবে কোয়াটার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দেয়া ম্যারাডোনার গোলটি ছিল বিতর্কিত। পেনাল্টি এরিয়ায় বাম হাতের ছোঁয়ায় গোল করেছিলেন ম্যারাডোনা! 'গোলটি পরবর্তী সময়ে ‘ঈশ্বরের হাতে গোল’ নামে পরিচিতি লাভ করে।

সুয়ারেজের নাটক : লুইস সুয়ারেজ। গত বিশ্বকাপে কামড়ের জন্য কুখ্যাত ছিলেন তিনি। তবে তার আগের বিশ্বকাপে ভিলেন হিসেবে পরিচিত ছিলেন উরুগুয়ের এই তারকা ফুটবলার। ২০১০ সালের বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিল ঘানা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ঘানার স্ট্রাইকার আসামোয়া গিয়ানের সাথে চ্যালেঞ্জে সুয়ারেজের হাতে আঘাত পাওয়ার নাটকে পেনাল্টি পায় উরুগুয়ে। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোল করে সেমিফাইনালে পৌছে উরুগুয়ে। পরে অবশ্য সুয়ারেজকে আঘাত পাওয়া হাতে জয়োল্লাস করতে দেখা যায়।

বল লেগেছিল হাটুতে, ব্যাথা মুখে : ২০০২ সালের বিশ্বকাপে ব্রাজিলের রিভাল্ডোর কাণ্ড ধরা পড়েছিল রিপ্লেতে। তুরস্কের বিপক্ষে ম্যাচে স্ট্রাইকার হাকান উনসালকে তার কারণে লাল কার্ড দেখানো হয়। কী করেছিলেন তিনি? কিছুই না। পুরো নাটক করেছিলেন রিভাল্ডো। কর্নার কিক নিতে যাচ্ছিলেন রিভাল্ডো। বলটি কিক করে তার দিকে দিচ্ছিলেন উনসাল। তার ছোড়া বলে আঘাত পাওয়ার নাটক করেন রিভাল্ডো। মুখ চেপে পড়ে যান। সাথে সাথেই তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। পরে ভিডিও রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি আসলে লেগেছিল রিভাল্ডোর হাঁটুতে, মুখে নয়! এই ঘটনার জন্য জরিমানার মুখে পড়তে হয় রিভাল্ডোকে।

ক্লিন্সম্যানের ডাইভ : সর্বকালের সেরা স্ট্রাইকারদের একজন পশ্চিম জার্মানির জার্গেন ক্লিন্সম্যান। ১৯৯০ সালের বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে নাটক করেন তিনিও। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার পেদ্রো মোনজোনের সাথে চ্যালেঞ্জে শূন্যে লাফিয়ে উঠে মাটিতে মুখ থুবড়ে পড়েন তিনি। তার এই নাটক এতোটাই সত্যি মনে হয়েছিল যে রেফারি সাথে সাথেই মোনজোনকে লাল কার্ড দেখিয়ে দেন। বিশ্বকাপে সেইবার প্রথম কোনো ফাইনাল ম্যাচে লাল কার্ড দেখানো হয়েছিল। পরে পেনাল্টি থেকে পাওয়া একমাত্র গোলে শিরোপা জিতে পশ্চিম র্জামানি।

রোনালদোর চোখের ইশারা : ২০০৬ সালের বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল ম্যাচে পর্তুগালের প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। সেই ম্যাচ ৬২ মিনিট পর্যন্ত গোলশূন্য ছিল। তখন রেফারি হোরাসিয়া ইলজোন্দোকে পটানোর চেষ্টা করেছিলেন রোনালদো। কেন করেছিলেন? তিনি রেফারিকে ওয়েন রুনিকে সরিয়ে দেয়ার জন্য পটিয়েছিলেন। কারণ এই ইংলিশ স্ট্রাইকার পর্তুগালের রিকার্দো কারভোলোর সামনেই দাড়িয়ে ছিলেন। এরপর রেফারি রুনিকে সরিয়েও দিয়েছিলেন। পরে রোনালদো চোখ মেরে কোচ লুইস স্কোলারিয়াকে সেটি বুঝিয়ে দেন। ওই ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করে জয়লাভ করে পর্তুগাল। কিন্তু পরে টিভি ক্যামেরায় সে ঘটনা ধরা পড়লে সমালোচনার মুখে পড়েন রোনালদো।


আরো সংবাদ



premium cement