১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

‘ফাইনাল খেলবে আর্জেন্টিনা- ব্রাজিল’

নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়ামের মিডিয়া সেন্টারে অস্কার রুজেরির সাথে নয়া দিগন্তের রিপোর্টার - ছবি : নয়া দিগন্ত

আইসল্যান্ডের বিপক্ষে নাইজেরিয়ার জয় এখন আত্মব্শ্বিাস এনেছে আর্জেন্টিনা শিবিরে। তাদের চোখ এখন নাইজেরিয়াকে পরের ম্যাচে হারিয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ায়। এই সুযোগে তাদের সাবেক অধিনায়ক ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপ জয়ী দলের ডিফেন্ডার অস্কার রুজেরিতো এখন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফাইনালের স্বপ্ন দেখছেন।

১৯৯৪ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়ক ছিলেন রুজেরি। তা এখন তার মাথায় বড় বড় চুল! বিশাল এক দেহ। রুজেরির মতে, ২০১৪ সালে আমরা প্রত্যাশা করেছিলাম ফাইনাল হবে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের মধ্যে; কিন্তু এই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশের ঐতিহাসিক ফাইনাল হয়নি সেমিতে জার্মানীর কাছে ব্রাজিল ৭-১ গোল পরাজিত হওয়ায়। রুজেরির মতে, এবারের আর্জেন্টিনা দল কমপ্যাক্ট ফুটবল খেলছে। এই দলকে নিয়ে আমি আশাবাদী।
তবে কোনো তুলনায় যেতে চাইলেন না কে সেরা- মেসি না ম্যারাডোনা এই প্রসঙ্গে। এই স্টপার ব্যাকের মতে, ‘আমি ম্যারাডোনার সাথে লম্বা সময় খেলেছি। আর তা তো ২৪ বছর আগের ঘটনা। এখন তো ওই সময়ের সাথে অনেক গ্যাপ। তাই আমি এ নিয়ে কোনো মন্তব্যই করবো না।’ মেসির অনুজ্জ্বল পারফরম্যান্সে বেশ বিপদে পড়ে যায় আর্জেন্টিনা। তাহলে কি আর্জেন্টিনা ওয়ান ম্যান শো? এই প্রশ্নে একটু বিরক্তই হলেন তিনি। মুখ ঘুরিয়ে দিলেন। কোনো উত্তর বের হলো না তার মুখ থেকে।

এরপর ফিরে গেলেন ১৯৮৬ সালের সেই মেক্সিকো বিশ্বকাপের ফাইনালে। বললেন আমরা ২-০ তে এগিয়ে যাওয়ার পর জার্মানি স্কোর লাইন ২-২ করে ফেলে। দুই কর্নার থেকে। তা আমাদের রক্ষণভাগের ভুলে। এরপর বুরুচাগার গোলে আমাদের বিশ্বকাপ জেতা নিশ্চিত হলো।
ফুটবল খেলা ছেড়ে কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বেশ কিছু দিন। এখন তিনি টেলিভিশন ধারাভাষ্যকার। তবে ইংরেজী জানেন না মোটেই। এক স্প্যানিশ সংবাদ কর্মীর সহায়তায় অস্কার রুজেরির সাথে এই কথোপকথন। এই আর্জেন্টাইন আরো কথা বলতেন; কিন্তু ওই স্প্যানিশ সাংবাদিকের ব্যস্ততার কারণে সম্ভব হয়নি। তিনি আর সময় দিতে পারবেন না। তাই ইতি টানতে হলো পর্বের। নেয়া গেল না আরো কিছু বক্তব্য।

তবুও তারকা নন আহমেদ মুসা
আহমেদ মুসা এখন শুধু নাইজেরিয়া বা আফ্রিকান আলোচনার মধ্যমনিই নন। তাকে বিশেষভাবে স্মরণ করছে আর্জেন্টাইনরা। তার জোড়া গোলেই আইসল্যান্ডের বিপক্ষে জয় নাইজেরিয়ার। প্রথম ম্যাচে হেরে পিছিয়ে পড়া দলটির প্রেরণা এখন মুসা। আর আর্জেন্টাইনরা তার প্রতি কৃতজ্ঞ, এই মুসাই যে তাদের শেষ আশা বাঁচিয়ে রেখেছে দারুনভাবে। সে সাথে সারা বিশ্বে থাকা তাদের শত কোটি সমর্থকও। মুসার জোড়া গোল তার এখন নিজ দেশ, আইসল্যান্ড এবং আর্জেন্টিনা সবার সম্ভাবনাই জিইয়ে রেখেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার। এক মুসাই পাল্টে দিয়েছে ‘ডি’ গ্রুপের হিসেব।

শুধু এটাই নয়। মুসা এখন বিশ্বকাপ ফুটবলে নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ গোলদাতা। ২০১৪ এবং ২০১৮ বিশ্বকাপ মিলে চার গোল তার। তিনিই প্রথম নাইজেরিয়ান যার পরপর দুই বিশ্বকাপ আসরে গোল আছে। একজন ফুটবলারের তারকা হওয়ার জন্য আর কি চাই? অথচ এরপরও আহমেদ মুসা তারকা ফুটবলার নন ১৯৯৪ সাল থেকে বিশ্বকাপ খেলা দেশটির। বরং তাকে ছাড়িয়ে দেশটির বর্তমান স্টার ফুটবলার হলেন ভিক্টর মোসেজ। এমন তথ্য দিলেন নাইজেরিয়া থেকে বিশ্বকাপ কাভার করতে রাশিয়ায় আসা ‘ডেইলি ইন্ডিপেন্ডন্ট’ পত্রিকার সাংবাদিক ইদিমা পিটার তাইয়ো ও ‘দি সান’ এর জন জোসা। আগে ছিলেন বর্তমান অধিনায়ক জন আবি মিকেল। তাদের মতে, ভিক্টোর মোসেজ ৫ বছর ধরে চেলসিতে খেলেন। তার পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা রয়েছে; কিন্তু আহমেদ মুসা তা নন। এক ম্যাচে দূর্দান্ত তো পরের ম্যাচেই ছন্দপতন। ভিক্টোর মোসেজের তারকা খ্যাতির আরেকটি কারণ ২০১৩ সালে আফ্রিকান নেশন্স কাপে নাইজেরিয়ার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নেপথ্য এই মোসেজ।

অবশ্য এখন কেউ কি আর তারকা না বলে পারবে আহমেদ মুসাকে। তার দুই গোলেই দল প্রাণ ফিরে পেয়েছে। এবার তার গোল সমশক্তির আইসল্যান্ডের বিপক্ষে; কিন্তু চার বছর আগে তো কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিলেন আর্জেন্টিনা শিবিরে। ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপে পোর্তো আলেগ্রেতে দুইবার তিনি বল পাঠিয়েছিলেন আর্জেন্টিনার জালে। তার দূর্দান্ত স্কিলের কাছে কি নাস্তানাবুদই না হয়েছিল মেসিদের রক্ষণভাগ। পরশু ভলগোগ্রাদেও তার পায়ের কাজে পরাস্ত আইিসল্যান্ডের রক্ষণপ্রাচীর।

৪৯ মিনিটে প্রথম গোল করলেন চমৎকারভাবে ডান পায়ে শূণ্যে ভাসা বল নামিয়ে তারপর তীব্র শটে। তার বল রিসিভের সময়ই বোকা বনে যান আইসল্যান্ডের রক্ষণকর্মী।৭৫ মিনিটে মুসার দ্বিতীয় গোল তো আরো অসাধারন। ডিফেন্স থেকে আসা লব ধরে এরপর গতিতে এক ডিফেন্ডারকে পরাস্ত করেন । পরবর্তীতে কাটান আগুয়ান গোলরক্ষককে। তখন পোস্টের নীচে গোল লাইনের উপর দাঁড়িয়ে দুই আইসল্যান্ডিক ডিফেন্ডার। এই দুই ডিফেন্ডারের বাধা ডিঙ্গিয়ে তিনি শট নেন একেবারেই ঠাণ্ডা মাথায়। যা সাধারণত আফ্রিকানদের কাছে প্রত্যাশিত নয়। কপাল ভালো থাকেল আইসল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকও পেয়ে যেতেন; কিন্তু তার একটি শট ক্রসবারে লাগায় হলো না তা।

মুসাকে ঘিরে আর্জেন্টিনা এখন বেশ খুশিই । তবে ২৬ জুন তিনি হবেন ভঙ্গুর আর্জেন্টিনার রক্ষণ প্রাচীরের জন্য আতঙ্কের নাম। যা তিনি চার বছর আগে দেখিয়েছিলেন। ক্রোয়েশিয়ান ফরোয়ার্ডরা গত ম্যাচে নাকানি চোবনি খাইয়েছিল তাদের। আইসল্যান্ডও তাদের বিট করছিল বারবার। এবার তো মুসার পালা।

মুসার যে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পারফরম্যান্সে ধারাবাহিকতা নেই এর প্রমাণ তার করা গোলসংখ্যাই। ২০১০ সাল থেকে নাইজেরিয়া জাতীয় দলের হয়ে ৭৪ ম্যাচে গোল করেছেন মাত্র ১৫টি। ২০১১ সালে নাইজেরিয়ান লিগে সর্বোচ্চ ২০ গোল করেন মুসা। যা এখনও রেকর্ড। এখন তিনি রাশিয়ার ঘরের ছেলে হয়ে গেছেন। ২০১২ সাল থেকে খেলছেন সিএসকেএ মস্কো ক্লাবে। চার বছরে ১২৫ ম্যাচে গোল করেছেন ৪৫টি। এরপর ২০১৬তে ইংলিশ লিগের ক্লাব লিস্টার সিটিতে যোগ দিয়ে হতাশ করেছেন। ২১ ম্যাচে মাত্র দুই গোল । ফলে এ বছর ধারে খেলতে আবার ফিরে এসেছেন সিএসকেএ মস্কোতে। ফর্মও ভালো তার। ১০ খেলায় গোল সংখ্যা ৬।


আরো সংবাদ



premium cement
গাজায় নিহত প্রকাশিত সংখ্যার চেয়ে ৪০ শতাংশ বেশি : ল্যানচেট টেকনাফ মহাসড়কে মিনিট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে ১ যুবক নিহত, আহত ৩ হানিফ সংকেতের ‘ইত্যাদি’ অনুষ্ঠানে ভাঙচুর-মারামারি সমাজে ইনসাফ ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করাই জামায়াতের উদ্দেশ্য : রফিকুল ইসলাম দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তা প্রধানের পদত্যাগ এমন একটি ছবি শুধু ভাবায় না, কাঁদায়ও : মুশফিকুল ফজল আনসারী শ্রীলঙ্কাকে চতুর্থবার হোয়াইটওয়াশের মিশন নিউজিল্যান্ডের কুষ্টিয়ায় টংঘর থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করল বিজিবি খুলনার প্রথম হার, জয়ের ধারায় ফিরল রাজশাহী গজারিয়ায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার সব ধরনের ক্রিকেটকে বিদায় বললেন ভারতীয় পেসার বরুন

সকল