১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১, ৯ রজব ১৪৪৬
`

কে এই আহমদ মুসা

যেন হাওয়ায় উড়ছেন আহমদ মুসা - ছবি : এএফপি

নাইজেরিয়ার হয়ে জোড়া গোল করে শুক্রবার আইসল্যান্ডকে প্রায় একাই পরাজিত করেছেন মোহাম্মাদ মুসা। ৪৯ ও ৭৫ মিনিটে দুর্দান্ত দুটি গোল করে দলকে টিকিয়ে রেখেছেন এই নাইজেরিয়া ফরোয়ার্ড। শুধু তাই নয়, এই জয়ের ফলে আর্জেন্টিনা ও আইসল্যান্ডকে পেছনে ফেলে ডি গ্রুপের দ্বিতীয় অবস্থানে আছে আফ্রিকার সুপার ইগলরা। পরের ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে পরাজিত করতে পারলেই তারা পেয়ে যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডের টিকিট।

শুক্রবারের ম্যাচে আহমদ মুসার জোড় গোলই শুধু নয়, তার পুরো খেলাই নজর কেড়েছে ফুটবল বিশেষজ্ঞদের। গতি, ড্রিবলিং, নিখুত ফিনিশিংসহ অনেক কিছু দিয়েই তিনি চিনিয়েছেন নিজেকে। ম্যাচের পরই বিশ্ব মিডিয়া নড়েচড়ে বসেছে। সাবার প্রশ্ন কে এই মুসা? অবশ্য খুঁজে পেতে খুব বেশি সময় লাগেনি। ২০১৪ বিশ্বকাপেও যে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে জোড়া গোলের নজির রয়েছে তার।

প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার কাছে ২-০ গোলে পরাজিত হওয়া নাইজেরিয়ার কাছে শুক্রবারের ম্যাচটি ছিলো ‘ডু অর ডাই’। হারলেই শেষ হয়ে যেত বিশ্বকাপ মিশন। এমন ম্যাচে শুরু থেকে প্রভাব বিস্তার করে খেললেও গোল পায়নি দলটি। দ্বিতীয়ার্ধে দেখা মেলে গোলের। ৪৯ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় নাইজেরিয়া। ডান দিকের কর্নার ফ্ল্যাগের কাছ থেকে বক্সের মধ্যে ক্রসে বল ফেলেন ভিক্টর মোজেস। দৌড়ে বক্সে ঢুকে পা উঁচু করে বলটি মাটিতে নামান মুসা। বল মাটিতে পড়ে আবার উঠতে শুরু করার সাথে সাথেই হাফ ভলি শটে জালে জড়ান বল। আইসল্যান্ডের দুই ডিফেন্ডারের চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিলো না।

দ্বিতীয় গোলটি তো আরো নান্দনিক। ৭৫ মিনিটে বাম প্রান্ত দিয়ে ক্ষিপ্র গতিতে আইসল্যান্ডের ডিফেন্ডারকে হারিয়ে ঢুকে পড়লেন বক্সে। গোলরক্ষক ও দুই ডিফেন্ডারও বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেননি মুসার সামনে। আবারো গোল।

নাইজেরিয়ার হয়ে মুসাই প্রথম খেলোয়াড় যিনি বিশ্বকাপে এক ম্যাচে জোড়া গোল করলেন। তবে পাঠক, সেটি শুক্রবারের ম্যাচে নয়। ২০১৪ সালে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেছিলেন মুসা। সেই ম্যাচেই বিশ্ব ফুটবল চিনেছিলো মুসা নামে এক ফুটবলারকে। তখন মুসার বয়স ছিলো মাত্র ২১ বছর। সেই ম্যাচে আর্জেন্টিনার হয়ে মেসির জোড়া গোলের গোলের জবাবে জোড়া গোল করেছিলেন আহমদ মুসা। ৩ মিনিটে মেসি গোল করে এগিয়ে দেন আর্জেন্টিনাকে। চতুর্থ মিনিটে গোল শোধ করেন মুসা। আবার প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে(৪৫+১) মেসির গোলের জবাবে পরের মিনিটেই(৪৫+২) গোল করেছিলেন মুসা। অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধে মার্কোস রোহোর গোলে জয় তুলে নিয়েছিলো মেসিদের দল।

২০১১ সালে নাইজেরিয়ান প্রিমিয়ার লিগের এক মৌসুমে রেকর্ড ২০ গোল করে আলোচনায় আসেন মুসা। বর্তমানে খেলছেন রাশিয়ান ক্লাব সিএসকেএ মস্কোর হয়ে। অবশ্য তিনি ইংলিশ ক্লাব লিস্টার সিটির চুক্তিভূক্ত খেলোয়াড়। ২০১২ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত খেলেছেন সিএসকেএ মস্কোর হয়ে। এরপর সেই বছরই সাড়ে ১৬ মিলিয়ন পাউন্ডের ট্রান্সফার ফিতে যোগ দেন লিস্টার সিটিতে। লিস্টারে দুই মৌসুম খেলার পর চলতি বছর জানুয়ারিতে মুসাকে ধারে খেলতে নেয় পুরনো ক্লাব সিএসকেএ মস্কো। রাশিয়ায় দীর্ঘদিন খেলার কারণে দেশটির আলো বাতাসের সাথে ভালোই পরিচয় আছে মুসার। তাই তো মাঠে নেমেই নিজের জাত চিনিয়েছেন তিনি। এখন স্বপ্ন দেখছেন দলকে দ্বিতীয় রাউন্ডে নেয়ার।

নাইজেরিয়ার হয়ে ২০১০ সালে অভিষেক মুসার। সে বছরই ওয়েস্ট-আফ্রিকান নেশনস কাপ জয়ী দলের সদস্য ছিলেন তিনি। খেলেছেন বয়সভিত্তিক দলেও। জাতীয় দলের হয়ে এখন পর্যন্ত ৭৪টি ম্যাচ খেলেছেন মুসা, গোল পেয়েছেন ১৫টি।


আরো সংবাদ



premium cement