এবার পূজার সাজে শাড়ির সাথে থাকবে চুড়ি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২০ অক্টোবর ২০২০, ১৯:৪৯
করোনাভাইরাসের কারণে এবার পূজার সাজ নিয়ে এবার চলছে বেশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা। মুখ যেহেতু ঢাকা থাকছে মাস্কে, চুল আর চোখের সাজ পাবে গুরুত্ব। কাজল আর মাসকারায় টানা কিংবা আইশ্যাডোতে উজ্জ্বল চোখ। চুল বাঁধা নিয়ে করা যেতে পারে নানা রকম কারসাজি। পূজার পোশাকের কাজ জমকালো না হলেও, কাট-ছাঁটে দেখা যাবে ভিন্নতা। তবে সবকিছু মিলিয়ে পূজার সাজে এবার প্রাধান্য পাবে রঙিন আভা। আর সেখানে অবশ্যই এবার শাড়ির সাথে প্রাধান্য পাবে চুড়ি।
বাঙালি নারীর সাজসজ্জার দুনিয়ায় চুড়ির আবেদন অনেক প্রাচীন। অবশ্য শত শত বছর ধরে চুড়িতে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। সাবেক কালের চুড়িতেই আর এখন আবদ্ধ নেই নারীর সাজ। সোনা আর রুপার চুড়ির সাথে এসেছে কাচের চুড়ি, কাঠের চুড়ি এবং চাইলে এখন পছন্দমতো বিভিন্ন জিনিসেই তৈরি করে নেওয়া যায় রংবেরঙের চুড়ি।
সাজ ছাড়া উৎসব জমে না। আর পূজা মানে হরেক রঙের মেলা। নতুন জামাকাপড় আর শাড়ির সঙ্গে রঙিন চুড়ির মেলবন্ধন না হলে খুলবে কি পূজার রং? এই পূজায় নিজেকে রাঙাতে নতুন পোশাকের সাথে পরুন বাহারি চুড়ি।
নতুন নকশার চুড়ি পাওয়া যাবে ফ্যাশন হাউসসহ যেকোনো শহরের মনিহারি দোকানে। পাবেন কাচের চুড়ি, প্লাস্টিকের চুড়ি, কাঠের চুড়ি, জ্যামিতিক নকশার কাপড়ে তৈরি রঙিন চুড়ি। সেগুলো যেমন ঐতিহ্যবাহী নকশার পাওয়া যায়, তেমনি পাওয়া যায় একেবারে নতুন নতুন নকশার। পাবেন সুতা, কড়ি, পুঁতি ও বাহারি হাতের কাজ করা চুড়ি। আপনার মনের মতো সব রঙের চুড়ি পাবেন একটু খুঁজলেই।
উপকরণের অদলবদল হলেও চুড়ির ধরন বা ব্যবহারের ধরনে কোনো পার্থক্য বা বদল আসেনি আজও। এখন এমন কিছু চুড়ি পাওয়া যায়, যেগুলো দেখে মনে হবে তিন বা চারটি চুড়ি আলাদা আলাদা; কিন্তু আসলে তা একসাথে জোড়া দেয়া।
পূজার সকালে পছন্দের পোশাকের সাথে সাথে কাচের চুড়িটাই সবাই বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু দুপুরের পরেই বদলে যাবে সাজ। তখন হাতে একটা গাছার বদলে একটি চুড়ি পরলেও সুন্দর দেখাবে।
পূজার উৎসবে একটু বাড়তি রং থাকে। এখন লাল পেড়ে সাদা শাড়িই শুধু চলে না পূজায়। উৎসবকে রঙিন করার জন্য উজ্জ্বল রঙের পোশাক ব্যবহারের প্রচলন হয়েছে। সালোয়ার-কামিজের কাটে যতই সাবেকিয়ানা থাক, রং তার উজ্জ্বল হতে হবে। এসব উজ্জ্বল রঙের সাথে পরার জন্য এখন কড়ি বা ফিতা দিয়ে তৈরি করা বালা, পুঁতির চুড়ি, ধাতবের মোটা বালার মতো আধুনিক উপকরণ বেশি দেখা যাচ্ছে।
পূজায় যেহেতু সবারই প্রায় নতুন পোশাক থাকে, তাই নতুন পোশাকের সাথে মিল রেখে বিভিন্ন অনুষঙ্গ ব্যবহারের একটা স্বাভাবিক প্রবণতা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে দেশীয় উপকরণে চুড়ির চাহিদা বেশি থাকে। ফতুয়া বা টপের সাথে এক হাতে বালা পরতে পারেন আর অন্য হাত খালি রাখতে পারেন। পূজায় ফতুয়ার সাথে টিপ মানাবে কপালে, সাথে ফতুয়ার রঙের কনট্রাস্ট যেকোনো রঙের চুড়ি পরুন হাতে। শুধু ফতুয়াই নয়, যেকোনো পোশাকের রঙের সাথে মানানসই রঙের চুড়ি পরলে সৌন্দর্যে আসবে নতুনত্ব।
সুতি শাড়ির সাথে দেশি চুড়ি আর সিল্কের শাড়িতে বেছে নেয়া যেতে পারে ধাতব চুড়ি। গয়নাকেই যদি সাজের মূল আকর্ষণ রাখতে চান, তাহলে বিভিন্ন রঙের রঙিন চুড়ি বেছে নিতে পারেন। সেসব চুড়ি একই আকারের না হয়ে বরং ভিন্ন ভিন্ন আকার হতে পারে। পুঁতি, কড়ি, সুতা বা মাটি দিয়ে বানানো চুড়ি বেছে নিতে পারেন পূজার যেকোনো দিন।
অবশ্য ডিজাইনাররা মনে করেন, কেমন চুড়ি পরবেন বা কতটা চুড়ি পরবেন না, সেটা পুরোপুরি নির্ভর করবে আপনার ওপরই। কাচের চুড়ির পাশাপাশি অক্সিডাইজড ও রুপার গয়নারও বেশ চাহিদা থাকে অনেকের কাছে। পূজায় বেশির ভাগ নারী সুতি শাড়ি পরতে ভালোবাসেন। তাতে যদি সোনালি জরির কাজ থাকে, তাহলে সোনার প্রলেপ দেওয়া (গোল্ড প্লেটেড) গয়না পরেন অনেকে। তা ছাড়া কাপড় দিয়ে বানানো, তুলি দিয়ে আঁকা, নারকেলের খোসা দিয়ে বানানো, কড়ি দিয়ে তৈরি চুড়িও আছে।
গয়নাকে সব সময় প্রভাবিত করে পোশাক। পূজা হয় বর্ণিল, বহু রঙের ব্যবহার থাকে পোশাকে। সবাই ভাবনায় রাখেন, যেন এ উৎসবের দিন ছাড়াও গয়নাগুলো ব্যবহার করা যায় অন্য সময়ে। তাই চুড়িতেও তেমন ভাবনা যুক্ত হতে পারে। পোশাকে যে রংটা বেশি, সেই রঙের চুড়ি বেছে নিতে পারেন এই পূজায়। তবে হাত ভরে চুড়ি পরবেন নাকি অল্প খানিকটা, অথবা এক হাতে চুড়ি পরে অন্য হাতে শখের ঘড়ি, তা নির্ভর করবে পুরোপুরি আপনার ওপর।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা