রাশিয়া কেন বিজ্ঞানীদের জেলে ভরছে
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১০ জুন ২০২৪, ১১:২১, আপডেট: ১০ জুন ২০২৪, ১১:২৩
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন প্রায়ই গর্বভরে বলেন যে তার দেশ বিশ্বে প্রথম হাইপারসনিক অস্ত্র তৈরিতে কাজ করছে, যা শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ দ্রুত গতিতে যেতে পারবে।
কিন্তু সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই বিজ্ঞান নিয়ে কাজ করা একাধিক রাশিয়ান পদার্থবিজ্ঞানীকে দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং কারারুদ্ধ করা হয়েছে, যা মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো একটি অতি উৎসাহী কঠোর দমনাভিযান হিসেবে দেখছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বেশিরভাগই বয়স্ক এবং এদের মধ্যে তিনজন এখন মৃত। একজনকে ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে থাকা অবস্থায় হাসপাতালের বিছানা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং কিছুক্ষণ পরেই তিনি মারা যান।
আরেকজন হলেন ৬৮ বছর বয়সী ভ্লাদিস্লাভ গালকিন, একজন অ্যাকাডেমিক, এপ্রিলে দক্ষিণ রাশিয়ার তমস্কে তার বাড়িতে ২০২৩ সালে অভিযান চালানো হয়।
একজন আত্মীয় বলেন, কালো মুখোশ পরা সশস্ত্র লোকেরা ভোর ৪টায় এসে আলমারির মধ্যে খোঁজাখুঁজি করে এবং বৈজ্ঞানিক সূত্রসহ কাগজপত্র জব্দ করে।
ভ্লাদিস্লাভ গালকিনের স্ত্রী তাতিয়ানা জানান, তাদের নাতি-নাতনি, যারা তার সাথে দাবা খেলতে পছন্দ করত – তাদের তিনি বলেছেন যে তাদের দাদা একটি ব্যবসায়িক সফরে আছেন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার নিরাপত্তা সংস্থা এফএসবি তাকে তার মামলার বিষয়ে কথা বলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
২০১৫ সাল থেকে এ পর্যন্ত ১২ জন পদার্থবিজ্ঞানী গ্রেফতার হয়েছে, যারা কোনো না কোনোভাবে এই হাইপারসনিক প্রযুক্তি বা এটা নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিল।
তারা প্রত্যেকে ভয়ঙ্কর দেশদ্রোহীতার অভিযোগে অভিযুক্ত, যার মধ্যে আছে রাষ্ট্রীয় গোপন খবর বিদেশী রাষ্ট্রে পাচার করা।
রাশিয়ায় বিশ্বাসঘাতকতার বিচার করা হয় বন্ধ দরজার আড়ালে, তাই তাদের বিরুদ্ধে ঠিক অভিযোগটা কী তা স্পষ্ট নয়।
ক্রেমলিন শুধু জানিয়েছে, ‘অভিযোগগুলো গুরুতর’ এবং যেহেতু বিশেষ বাহিনী এতে যুক্ত তাই এ নিয়ে আর কিছু বলা যাবে না।
কিন্তু তাদের সহকর্মী ও আইনজীবিরা বলছে এই বিজ্ঞানীরা অস্ত্র তৈরির সাথে যুক্ত ছিল না। কিছু মামলা দায়ের হয়েছে তারা যে খোলাখুলিভাবে অন্য দেশের গবেষকদের সাথে মিলে কোনো কাজ করছিল সেটার জন্য।
আর সমালোচকরা মনে করেন, এফএসবি আসলে এরকম একটা ধারণা তৈরি করতে চায় যে বিদেশী স্পাইরা তাদের অস্ত্রের গোপন খবর জানার চেষ্টা করছে।
হাইপারসনিক বলতে এমন মিসাইল বোঝায়, যা অত্যন্ত দ্রুত গতিতে চলতে পারে এবং লক্ষ্যবস্তুর দিকে যাওয়ার সময় বিমান প্রতিরক্ষাকে এড়িয়ে এটি দিক পরিবর্তন করতেও সক্ষম।
রাশিয়া বলছে যে তারা ইউক্রেনের যুদ্ধে দুই ধরনের মিসাইল ব্যবহার করেছে– কিনঝাল, যা বিমান থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় এবং জিরকন ক্রুজ মিসাইল।
তবে, কিয়েভ বলছে যে তাদের বাহিনী কিছু কিনঝাল মিসাইল ভূপাতিত করেছে, যা এই অস্ত্রের সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।
কিন্তু প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সেটা নিয়ে কাজ যেমন চলছে, তেমনি গ্রেফতারও অব্যাহত রয়েছে।
ভ্লাদিস্লাভ গালকিনের গ্রেফতারের কিছুক্ষণ পরেই, তাকে আরেক বিজ্ঞানী ভ্যালেরি জেভেগিন্তসেভের সাথে একইদিনে আদালতে রিমান্ডে পাঠানো হয়েছিল, যার সাথে তিনি বেশ কয়েকটি প্রবন্ধের সহলেখক ছিলেন।
রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা তাস একটি সূত্র উল্লেখ করে বলেছে যে জেভেগিন্তসেভের গ্রেফতার সম্ভবত ২০২১ সালে একটি ইরানি জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
গালকিন এবং জেভেগিন্তসেভ দু’জনের নামই আছে দ্রুত গতির বিমানের জন্য এয়ার ইনটেক প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে এ সম্পর্কিত একটি নিবন্ধে, যা ওই জার্নালে প্রকাশ হয়েছিল।
২০২২ সালের গ্রীষ্মে, এফএসবি জেভেগিন্তসেভের দু’জন সহকর্মী, যার একজন তিনি যেখানে কাজ করতেন সেখানকার পরিচালক এবং দ্রুত গতির এরোডাইনামিক্স ল্যাবরেটরির সাবেক প্রধানকেও গ্রেফ্তার করে।
থিওরেটিক্যাল অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড মেকানিক্স ইনস্টিটিউট (আইটিএএম) এর কর্মচারীরা তাদের তিন গ্রেফতারকৃত সহকর্মীর সমর্থনে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন।
এখন ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইট থেকে সেটি সরিয়ে ফেলা হয়েছে এবং বলা হয়েছে তারা ‘দুর্দান্ত বৈজ্ঞানিক ফলাফল’ এর জন্য পরিচিত এবং তারা দেশের স্বার্থের প্রতি ‘সবসময় অনুগত’ ছিলেন।
এতে বলা হয়, তারা যে কাজটি সবার জন্য প্রকাশ করেছিলেন তা বার বার আইটিএএম-এর বিশেষজ্ঞ কমিশন দ্বারা পরীক্ষা করা হয়েছিল যে এতে কোনো স্পর্শকাতর অপ্রকাশযোগ্য তথ্য আছে কি না। কিন্তু এরকম কিছু পাওয়া যায়নি।
‘হাইপারসনিক এখন এমন একটি বিষয় যে আপনি সেটার জন্য মানুষকে জেলে ভরতে বাধ্য,’ বলছিলেন রাশিয়ার মানবাধিকার ও আইনি সংস্থার প্রথম বিভাগের একজন আইনজীবি ইয়েভজেনি স্মিরনভ।
স্মিরনভ দেশদ্রোহিতার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজ্ঞানী ও অন্যান্যদের হয়ে আদালতে লড়াই করেছেন। কিন্তু তার সেই কাজের পাল্টা প্রতিক্রিয়ার শঙ্কায় তিনি ২০২১ সালে রাশিয়া থেকে প্রাগে চলে যান।
তিনি বলছিলেন, ডজনখানেক বিজ্ঞানীর মধ্যে কেউই প্রতিরক্ষা খাতের সাথে যুক্ত ছিলেন না। কিন্তু হাইপারসনিক গতিতে ধাতুগুলো কেমন রুপ নেয় বা ঝাঁকুনির ফলে কী হয় এমন বৈজ্ঞানিক প্রশ্নগুলো নিয়ে গবেষণা করছিলেন।
‘এটি রকেট তৈরির বিষয়ে নয়, বরং পদার্থবিদ্যার প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা,’ তিনি উল্লেখ করেন যে পরে এই ফলাফলগুলো হয়তো যারা অস্ত্র তৈরির কাজে যুক্ত তাদের দ্বারা ব্যবহার করা হতে পারে।
এই গ্রেফতারগুলো শুরু হয় কয়েক বছর আগে ৮৩ বছল বয়সী ভ্লাদিমির লাপিজিনের গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। তিনি ২০১৬ সালে জেলে যান। কিন্তু চার বছর পরে প্যারোলে মুক্তি পান।
লাপিজিন ৪৬ বছর ধরে রাশিয়ান মহাকাশ সংস্থার প্রধান যে গবেষণা প্রতিষ্ঠান, সেই টিএসএনআইআইমাশের হয়ে কাজ করেছিলেন।
লাপিজিনকে একটি অ্যারোডায়নামিক গণনার সফটওয়্যার চীনে একজনের কাছে পাঠানোর জন্য অভিযুক্ত করা হয়। তিনি বলেন যে তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্পূর্ণ প্যাকেজ বিক্রির আলোচনার অংশ হিসেবেই একটি ডেমো সংস্করণ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি জোর দিয়ে বলেন যে তিনি যে ভার্শনটি পাঠান তাতে কোনো গোপন তথ্য ছিল না, ‘বহুবার বিভিন্ন নিবন্ধে বর্ণনা করা’ বিষয়টির একটি উদাহরণ ছিল মাত্র।
লাপিজিন বিবিসিকে বলেছেন যে হাইপারসনিকের সাথে সম্পর্কিত বলে যারা গ্রেফতার হয়েছিল তারা কেউই ‘অস্ত্র তৈরির সাথে যুক্ত ছিলেন না’।
দিমিত্রি কোলকার অন্য আরেকজন বিজ্ঞানী যিনি সাইবেরিয়ায় লেজার ফিজিক্স প্রতিষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করছিলেন, ২০২২ সালে তিনি যখন গ্রেফতার হন সেই সময় তিনি হাসপাতালে গুরুতর অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের জন্য ভর্তি ছিলেন।
তার পরিবার বলেছিল যে তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো চীনে তিনি যে বক্তৃতাগুলো দিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করে ছিল। কিন্তু সে সমস্ত কিছু এফএসবি দ্বারা অনুমোদিত ছিল এবং একজন অ্যাজেন্টও তার সাথে সেখানে ভ্রমণ করেছিলেন।
কোলকার তার গ্রেফতারের দুই দিন পর ৫৪ বছর বয়সে মারা যান।
‘এখানে এই ব্যবস্থার ভেতরেই একটা গণ্ডগোল আছে,’ বলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গ্রেফতার হওয়া এক বিজ্ঞানীর সহকর্মী।
বিজ্ঞানীরা এখনো আন্তর্জাতিকভাবে তাদের লেখা প্রকাশ করা ও বিদেশী সহকর্মীদের সাথে মিলে কাজ করতে ইচ্ছুক, ‘কিন্তু এদিকে এফএসবি মনে করে বিদেশী বিজ্ঞানীদের সাথে যোগাযোগ ও বিদেশী জার্নালে লেখা প্রকাশ করা মাতৃভূমির সাথে বেইমানির সমান,’ বলেন তারা।
আইটিএএম বৈজ্ঞানিকরা একই মন্তব্য করেন। ‘আমরা কিভাবে আমাদের কাজ চালিয়ে যাবো, তা বুঝতে পারছি না,’ তাদের প্রকাশিত চিঠিতে বলা হয়।
‘যে কাজে আমরা আজ পুরস্কৃত হচ্ছি...সেই একই কাজে কাল বিচারের মুখোমুখি হচ্ছি।’
তারা সতর্ক করেন যে, বিজ্ঞানীরা গবেষণার কিছু ক্ষেত্রে যুক্ত হতে ভয় পাচ্ছেন, এমনকি দক্ষ তরুণরা বিজ্ঞান থেকেই সরে যাচ্ছে।
এই চিঠি জনগণের সমর্থন পাওয়ার একটি বিরল উদাহরণ ছিল।
গ্রেফতার হওয়া অন্য বিজ্ঞানীরা যেখানে কাজ করতেন সেসব প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করেনি।
অন্যান্য ঘটনার ক্ষেত্রেও এমন আন্তর্জাতিক যোগাযোগকেই কারণ হিসেবে দেখা যায়।
আরো দু’জন বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে যে তদন্ত চলছিল, তাতে দেখা যায় তারা হাইপারসনিক বেসামরিক বিমান তৈরির জন্য হেক্সাফ্লাই নামে একটি ইউরোপিয়ান প্রজেক্টের সাথে যুক্ত ছিল, বিষয়টি জানান তাদের মামলা নিয়ে কাজ করা স্মিরনভ।
সেই প্রকল্পটি ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান স্পেস অ্যাজেন্সির নেতৃত্বে শুরু হয়, যা সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
সংস্থাটি বিবিসিকে জানায়, ‘সবরকম কারিগরি অবদান ও আদান প্রদান আগে থেকে পারস্পরিক সম্মতি ও পর্যবেক্ষণের’ ভিত্তিতেই হয়েছে যেটাতে রাশিয়ান এবং ইউরোপীয়ান দুই পক্ষের মধ্যে একটি সহযোগিতার চুক্তি হয়েছিল।
পাশাপাশি, গত বছর দু’জন বিজ্ঞানীকে ১২ বছরের জন্য কারাগারে পাঠানোর শাস্তি দেয়া হয়, যদিও রাশিয়ার সুপ্রীম কোর্ট তাদের একজনের পুর্নবিচারের নির্দেশ দিয়েছে।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো এটার একটা ধরন দেখতে পেয়েছে।
স্মিরনভ বলেন, ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় এফএসবি কর্মকর্তারা তার কাছে স্বীকার করেন যে হাইপারসনিক সম্পর্কিত গোপনীয় বিষয় প্রকাশের অভিযোগে যেসব মামলা তা আসলে ‘ওপর মহলের সন্তুষ্টির জন্য করা হয়েছে।’
তার বিশ্বাস এফএসবি এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে চায় যে গোয়েন্দারা রাশিয়ান মিসাইল রহস্যভেদ করে পুতিনের ‘অহমে আঘাত দিতে চায়’।
যখন দেশদ্রোহীতার মামলার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে তখনো এই মামলাগুলো আসতে থাকে।
মেমোরিয়াল মানবাধিকার কেন্দ্রে রাশিয়ান রাজনৈতিক বন্দীদের সমর্থনে কাজ করা সের্গেই ডেভিডিস, ‘একটি স্পাই ম্যানিয়া ও বিচ্ছিন্নতার পরিবেশ’ তৈরি হয়েছে বলে জানান, বিশেষ করে রাশিয়া পুরো মাত্রায় ইউক্রেন অভিযান শুরুর পরে।
রাশিয়ায় তার সংগঠন নিষিদ্ধ হওয়ার পর সেখান থেকে লিথুয়ানিয়ায় সরে যাওয়া ডেভিডিস বলেন তার বিশ্বাস এফএসবি যে কাজ করছে সেটা দেখানোর জন্যই তারা ‘বিভিন্ন মামলা সাজিয়ে সমৃদ্ধ পরিসংখ্যান হাজির করছে।’
তবে তিনি মনে করেন বৈজ্ঞানিকদের গ্রেফতারির পেছনে অন্যান্য কারণও থাকতে পারে, যেমন রাষ্ট্রীয় চুক্তিসমূহের প্রতিযোগিতা, অথবা হাইপারসোনিকসে জড়িত বৈজ্ঞানিকদের প্রতি ক্রেমলিনের কোনো অসন্তুষ্টির বার্তা।
স্মিরনোভ বলেন, এফএসবি কখনো নামমাত্র সাজাও দেয়, যদি সন্দেহভাজন তার অপরাধ স্বীকার করে এবং অন্যদের নাম বলে দেয়।
ভন কারমান ইনস্টিটিউটে একটি গোলাকার কোণাকৃতির কিছু দেখে সেটাকে যুদ্ধাস্ত্র মনে করে হানা দেয় এফএসবি তদন্তকারী দল এবং সেখান থেকে বিজ্ঞানী ভিক্টর কুদরাভতসেভকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান এখন তার বিধবা হওয়া স্ত্রী ওলগা।
তিনি জানান কুদরাভতসেভকে চাপ দেয়া হয়েছিল যাতে তিনি তার অপরাধ স্বীকার করে নেন ও অন্য কাউকে দোষী ঘোষণা করেন।
তিনি সেটা করতে অস্বীকৃতি জানান এবং বিচারের মুখোমুখি হবার আগেই ২০২১ সালে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৭৭ বছর বয়সে মারা যান।
অবসরে যাওয়া এফএসবি জেনারেল আলেকজান্ডার মিখাইলভ বলেন যে এফএসবিতে তাদের সামরিক প্রযুক্তির ‘গোপনীয়তা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’
তিনি বলেন যে ‘নিঃসন্দেহে’ বিভিন্ন সাজার পেছনে ‘পর্যাপ্ত কারণ’ ছিল। যেমন গত মে মাসে আইটিএমের সাজাপ্রাপ্ত তিন বিজ্ঞানীর একজন আনাতোলি মাসলোভকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জেনারেল মিখাইলভ বলেন যে নব্বইয়ের দশক থেকে দেশে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের প্রসারের ফলেই এখন দেশদ্রোহীতা বাড়ছে।
তিনি বলেন, যাদের হাতে রাষ্ট্রের গোপন নথি আছে সেগুলো ‘সম্পূর্ণ যাচাই করার ও এটা প্রকাশ করার দায়িত্বশীলতাও’ থাকতে হবে তাদের।
‘কিছু মানুষ অতিরিক্ত কথা বলছিলেন এবং গোপন তথ্য সামনে চলে আসে’।
গালকিনের জন্য তার সামনে মুখোশ পরা অ্যাজেন্ট আসার এক বছরের বেশি হয়ে গিয়েছে। তার আত্মীয়রা জানান প্রথম তিন মাস তার একাকী কারাবাস ছিল।
তার স্ত্রী তাতিয়ানা জানান তিনি এখন কাঁচ দিয়ে ভাগ করা অংশের একপাশ থেকে তার সাথে ফোনে কথা বলতে পারেন। এমনকি তিনি সম্প্রতি এমনটাও ভেবেছিলেন যে তাকেও গ্রেফতারের অনুরোধ জানাবেন ‘কারণ সে শুধু দিনের পর দিন সেখানে বসে থাকে।’
‘আমি তাদের বলতে পারি যে আমাকেও যাতে ওই বিচারপূর্ব আটককেন্দ্রে রাখা হয়। কারণ এটা খুবই সহজ – আপনাকে শুধু যেকোনো কিছু নিয়ে যে কাউকে সন্দেহ হলেই হলো।’
রাশিয়ায় আটক হওয়া অন্যান্য বিজ্ঞানী
* আলেকজান্ডার শিপলুক, ৫৭, আইটিএম পরিচালক, ২০২২ সালে গ্রেফতার হয়ে বিচারের অপেক্ষায়
* আলেকজান্ডার কুরানোভ, পিটার্সবার্গ সায়েন্টিফিক রিসার্চ এন্টারপ্রাইজ ফর হাইপারসনিক সিস্টেমের সাবেক পরিচালক, ২০২১ সালে গ্রেফতার হন, ২০২৪ সালের এপ্রিলে তাকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়
*রোমান কোভালিয়ভ, কুদরাভতসেভের সহকর্মী, ২০২০ সালে সাত বছরের সাজা হয়, ২০২২ সালে মারা যান।
সূত্র : বিবিসি
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা