২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইউরোপের নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কড়া শরণার্থী নীতি!

ইউরোপের নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে কড়া শরণার্থী নীতি! - সংগৃহীত

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বেআইনি বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের যে উদ্যোগ চূড়ান্ত করল, তার ফলে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টার দক্ষিণপন্থী শিবিরের প্রতি সমর্থন কমবে বলে আশা করছে অন্যান্য দল।

আসন্ন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচনের ঠিক আগে ইইউর সদস্য দেশগুলো বহিরাগতদের রাজনৈতিক আশ্রয়-সংক্রান্ত নীতির ব্যাপক সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

মঙ্গলবার ইইউ অভিবাসন ও রাজনৈতিক আশ্রয়-সংক্রান্ত নতুন বোঝাপোড়ার অংশ হিসেবে ১০টি আইন অনুমোদন করেছে। সেই একক ইউরোপীয় নীতির আওতায় অবৈধ বহিরাগতদের ঢল সামলাতে এক গুচ্ছ পদক্ষেপ স্থির করা হয়েছে।

দীর্ঘদিনের আপত্তির কারণে হাঙ্গেরি ও পোল্যান্ড এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে ভোট দিলেও সেটি থামাতে ব্যর্থ হয়েছে। নতুন সংস্কারের ফলে শুধু ইইউর সীমান্তবর্তী দেশগুলোকে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বোঝা সামলাতে হবে না, বাকিদেরও সংহতি দেখাতে হবে। কোনো সদস্য দেশ তাদের আশ্রয় দিতে না চাইলে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

ইউরোপের মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের ঠিক আগে অভিবাসন ও আশ্রয়-সংক্রান্ত কড়া পদক্ষেপ নিয়ে ভোটারদের মন জয় করার আশা করছে। কট্টর দক্ষিণপন্থী ও পপুলিস্ট দলগুলো এতকাল মানুষের মনে বহিরাগতদের ঢল-সংক্রান্ত উদ্বেগ কাজে লাগিয়ে সমর্থন আদায়ের যে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল, ইউরোপীয় স্তরে নতুন সমাধানসূত্র সেই হাতিয়ার কিছুটা হলেও ভোঁতা করে দেবে বলে অন্যান্য রাজনৈতিক শিবির মনে করছে।

বিশেষ করে ২০১৫ সালে সিরিয়া ও ইরাকের যুদ্ধের কারণে প্রায় এক কোটি বহিরাগত ইইউতে প্রবেশ করার পর জনসংখ্যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশের মনে বিষয়টি নিয়ে কড়া মনোভাব দেখা যাচ্ছে।

আগামী ৬ থেকে ৯ জুন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন জনমত সমীক্ষায় কট্টর দক্ষিণপন্থী ও পপুলিস্ট দলগুলোর প্রতি যথেষ্ট সমর্থন দেখা যাচ্ছে। মঙ্গলবারের সিদ্ধান্তের পর বাকি দলগুলো নির্বাচনী প্রচারে বিষয়টি তুলে ধরে কতটা সমর্থন ফিরে পেতে পারে, নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই তা জানা যাবে।

তবে মনে রাখতে হবে, ইইউর এই সংস্কারের উদ্যোগ ২০২৬ সাল থেকে কার্যকর হবে। ভোটারদের মনে এতটা ধৈর্য আছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়। ২০২৩ সালে প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ আইনি পথে ইউরোপে প্রবেশ করেছে। অন্যদিকে প্রায় ১০ লাখ মানুষ অনুমতি ছাড়াই ইইউ দেশগুলোতে বাস করছে। তার মধ্যে বৈধ ভিসা নিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করে থেকে যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে নতুন সংস্কারের উদ্যোগ কার্যকর হবে না। অর্থাৎ গত বছর যে প্রায় তিন লাখ মানুষ বিনা অনুমতিতে ইউরোপে প্রবেশ করেছে, শুধু তাদের মতো অভিবাসন ও আশ্রয়প্রত্যাশীদের ক্ষেত্রেই নতুন নিয়ম প্রয়োগ করা হবে।

ইউরোপের মানুষের উদ্বেগ কাটাতে বহিরাগতদের ঢল সামালানোর কড়া উদ্যোগ সম্পর্কে সমালোচনাও কম নয়। বহির্সীমানায় আটক অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আটক করা, এমনকি শিশুদেরও আঙুলের ছাপ নথিভুক্ত করার মতো ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক দূর হয়নি। আশ্রয়প্রার্থীদের ইউরোপ থেকে দূরে রাখতে এবং তাদের আশ্রয় অধিকার খর্ব করতে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলোর সাথে ইইউর বোঝাপড়ার বিরুদ্ধেও সমালোচনা শোনা যাচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement