সন্ত্রাসবাদের কালো তালিকা থেকে তালেবানের নাম বাদ দিতে পারে রাশিয়া
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:০৮, আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৮:১৬
রাশিয়া মঙ্গলবার জানিয়েছে যে তারা আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবানের সাথে ‘সক্রিয় সংলাপে’ সম্পৃক্ত রয়েছে এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর যে তালিকা মস্কোর রয়েছে সেখান থেকে তালেবানের নাম সরিয়ে ফেলার জন্য কাজ করছে।
রাশিয়ার বার্তা সংস্থা তাস’র খবর অনুযায়ী ক্রেমলিনের মুখপাত্র দ্যমিত্রি পেসকভ সংবাদদাতাদের বলেন বাস্তবতা হচ্ছে এরা হচ্ছে আমাদের প্রতিবেশী দেশ। এক ভাবে হোক বা অন্যভাবে, আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলি।
পেসকভ বলেন, আমাদেরকে বিষয়গুলো নিয়ে চাপ দিতে হবে, তার জন্যও সংলাপের প্রয়োজন। বস্তুত আমরা তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছি যেমন করি অন্যদের সাথেও। তারই তো বস্তুত আফগানিস্তানের ক্ষমতায় রয়েছে।
তিনি বিস্তারিত আর কিছু বলেননি কিন্তু তার এই বিবৃতিটি এমন এক সময়ে আসলো যার কয়েকদিন আগেই রাশিয়ার রাজধানীর অদূরে একটি কনসার্ট হলে প্রবেশ করে অন্তত ১৪৪ জনকে হত্যা করে। এটি ছিল সে দেশে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণনাশী সন্ত্রাসী হামলা।
ইসলামিক স্টেটের উগ্রবাদীরা এই রক্তপাতের দায় স্বীকার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, এর পেছনে ছিল ওই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটির আফগান শাখা, আই এস– খোরাসান।
রাশিযার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন দ্রুতই এই হামলার সাথে ইউক্রেনের সংশ্লিষ্টতার কথা দাবি করেন তবে ওই প্রতিবেশী রাষ্ট্রটি এবং যুক্তরাষ্ট্র এই দাবিটি কড়া ভাষায় নাকচ করে দেয়।
তালেবানকে সন্ত্রাসের কালো তালিকা থেকে বাদ দেয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কে সোমবার রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এমন বিবৃতির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে পেসকভ বলেন, আপনিতো নিজেই বললেন যে এই বিকল্পটি বিবেনায় রয়েছে। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া অবধি অপেক্ষা করা যাক।
তালেবান মস্কোতে ওই হামলাকে ‘সকল মানবিক মানের নির্লজ্জ্ব লঙ্ঘন’ বলে এর নিন্দা করেছে এবং এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত,স্পষ্ট ও দৃঢ় অবস্থান গ্রহণের জন্য আঞ্চলিক দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
আই এস খোরাসানের আদ্যাক্ষর দায়েশ উল্লেখ করে তালেবানের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বলেছে , আফগানিস্তান এবং বিশ্বের অন্যান্য স্থানেও অসামরিক লোকজনকে লক্ষ্য করে যারা আক্রমণ চালিয়েছে, সেই দায়েশ এই সব ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণ করেছে যে তারা এমন সব গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে যাদের লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামকে বদনাম করা এবং গোটা অঞ্চলকে হুমকির সম্মুখীন করা।
কোনো বিদেশী রাষ্ট্রই আনুষ্ঠানিকভাবে কাবুল সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি- এই অভিযোগে যে তারা রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিমূলক নয় এবং আফগান নারীদের শিক্ষা ও কর্ম থেকে বঞ্চিত করতে ঢালাও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে।
আফগানিস্তান বিষয়ক রুশ প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত জামির কাবুলভ এ সপ্তাহের গোড়ার দিকে তাসকে বলেন যে মস্কো, ‘রাশিয়া ইসলামিক ওয়ার্ল্ড: কাজান ফোরাম’ শীর্ষক একটি অর্থনৈতিক ফোরামে অংশ নিতে তালেবান প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক ও প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে রাশিয়ার অন্যতম যারা তালিবানের ক্ষমতা গ্রহণের পরও সে দেশে তাদের কূটনৈতিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রধানত পশ্চিমি দেশগুলো তখন থেকে আফগান কূটনৈতিক মিশনগুলো কাতারে সরিয়ে নিয়েছে। সূত্র : ভয়েজ অব আমেরিকা