চাঁদে রুশ পরমাণুকেন্দ্র, কেন ভয় পাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র?
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:৫৮
চাঁদ নিয়ে মানুষের কল্পনার কৌতূহলের অভিযানের শেষ নেই! এবার চাঁদে পরমাণুকেন্দ্র! না, রূপকথা নয়, বাস্তব। রাশিয়া এবং চীন যৌথভাবে এই কেন্দ্রটি গড়ার পরিকল্পনা করেছে। ২০৩৫ সালের মধ্যে এটি তৈরি হবে বলে ধরা হয়েছে। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণার প্রধান এ কথা জানিয়েছেন। রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র রসকসমস-এর প্রধান এ কথা জানিয়েছেন সাংবাদিকদের।
২০৩৫ সালের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রসকসমস-এর প্রধান বরিসভ জানিয়েছেন, তারা চাঁদে একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে চাইছেন। সেখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে। আসলে আগামী দিনে সোলার প্যানেল থেকে যে-পরিমাণ শক্তি পাওয়া যাবে, তা যথেষ্ট হবে না। তাই এখন থেকেই একটা বিকল্প চাইছে তারা।
তবে রাশিয়ার এই উদ্যোগের খবরে পুরোদস্তুর সন্দেহপ্রবণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাদের আশঙ্কা, রাশিয়া আসলে নতুন পদ্ধতির পরমাণু অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছে। এই অস্ত্র স্যাটেলাইট ধ্বংস করার কাজে ব্যবহার করা হবে। বরিসভ যদিও স্পষ্টই জানিয়ে দিয়েছেন, চাঁদে পরমাণু অস্ত্র তৈরির কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই।
হঠাৎ করেই যে চীন-রাশিয়া মিলে এমন একটা প্রকল্প করে ফেলতে চলেছে, তা নয়। রাশিয়া এবং চীনের যৌথ মহাকাশ গবেষণার একটা প্রেক্ষাপট আছে। ২০২১ সালে চীন এবং রাশিয়া একটি চুক্তি করে। সেখানে ঠিক হয়, দুই দেশ পরস্পরকে তাদের মহাকাশ গবেষণায় সাহায্য করবে।
চীন নিজের মহাকাশ গবেষণার কাজ যথারীতি চালিয়ে যাচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা মহাকাশে স্বয়ংক্রিয় যান পাঠাবে। চাঁদের মাটি থেকে পাথরের নমুনা সংগ্রহ করবে এই যান।
মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র 'নাসা'-ও দীর্ঘদিন ধরে চাঁদে পরমাণু শক্তি উৎপাদন নিয়ে পরিকল্পনা করছে। চাঁদে অবতরণের পর একটি পরমাণু জেনারেটর থেকেই সেখানে বিদ্যুৎ তৈরি করা হয়। গবেষণার কাজেও ওই বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। সাধারণত সৌরবিদ্যুতের সাহায্যেই চাঁদে যাবতীয় গবেষণার কাজ হয়। তবে ১৪ দিন সেখানে চন্দ্ররাত থাকে। সে সময়ে সেখানে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। রাশিয়ার বক্তব্য, তাদের পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র সেই সমস্যার সমাধান করবে। 'নাসা'ও এর আগে জানিয়েছিল, ২০২৬ সালের মধ্যে তারা চাঁদে পরমাণুবিদ্যুৎ তৈরির ব্যবস্থা করবে।
ওই পরমাণুবিদ্যুৎ তৈরির কাজেই এবার নামতে চলেছে রাশিয়া। রাশিয়া জানিয়েছে, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় এটা চলবে। কোনো মানুষ দিয়ে চাঁদের মাটিতে শক্তি তৈরির ব্যবস্থা অসম্ভব।
সূত্র : জি নিউজ