আড়ি পাতা কেলেঙ্কারি নিয়ে উত্তাল জার্মানি
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৪ মার্চ ২০২৪, ১৬:০৫
ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে জার্মান বিমানবাহিনীর কর্মকর্তাদের গোপন আলোচনার রেকর্ডিং ফাঁস করে রাশিয়া জার্মানিতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ ঘটনার পরিণতি নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে।
জার্মান বিমানবাহিনীর উচ্চপদস্থ অফিসারদের আলোচনার এক রেকর্ডিং প্রকাশ করে রাশিয়া গুপ্তচরবৃত্তির ক্ষেত্রে সাফল্য দেখাতে পেরেছে। জার্মান সরকার শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনকে শক্তিশালী টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিলে কোনো কোনো বিষয় নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। জার্মান বিমানবাহিনীর প্রধান ও উচ্চপদস্থ অফিসাররা সে বিষয়ে আলোচনা করছিলেন।
শুক্রবার রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমে সেই গোপন কথোপকথন ফাঁস হয়ে যাওয়ায় জার্মানিতে প্রবল তর্কবিতর্ক চলছে। জার্মানির স্থিতিশীলতা বিঘ্নের অভিযোগও উঠছে।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস এমন আড়ি পাতা কেলেঙ্কারির উৎস জানতে দ্রত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস চলতি সপ্তাহের শুরুর দিকেই প্রাথমিক ফলের আশা করছেন। তার মতে, ভুয়া তথ্য প্রচার করার ক্ষেত্রে এটা রাশিয়ার ‘হাইব্রিড’ হামলা। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ পুরো ঘটনার তদন্ত করছে। যে কথোপকথন ফাঁস করা হয়েছে, তার মধ্যেও চালাকি করে কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে কি-না, সেই প্রশ্নও উঠছে। জোট সরকারের নিরাপত্তাবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা আরো বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। এভাবে আরো জোরালভাবে গুপ্তচরবৃত্তি মোকাবিলার ডাক দিচ্ছেন সরকার ও বিরোধী পক্ষের নেতারা।
ওয়েবএক্স নামের সফটওয়্যারের মাধ্যমে সেনা অফিসারদের কনফারেন্স কলে আড়ি পাতার ঘটনা ঠিক কিভাবে ঘটেছে, সেটা এখনো স্পষ্ট নয়। রাশিয়া সরাসরি আড়ি পেতেছে, নাকি জার্মান সেনাবাহিনীতেই ‘সর্ষের মধ্যে ভুত’ রয়েছে, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। তাছাড়া আড়ি পাতার এমন ক্ষমতা থাকলে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এমন আরো আলোচনাও রাশিয়া শুনে থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। সে সব সংলাপ ফাঁস হলে জার্মানির ভাবমূর্তি ও নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে। রাশিয়ার সংবাদমাধ্যম ইতোমধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধে জার্মানির সরাসরি অংশগ্রহণের অভিযোগ তুলছে। টাউরুস প্রয়োগ করে অধিকৃত ক্রাইমার সাথে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সেতু ধ্বংস করার বিষয়ে আলোচনা উদ্ধৃত করে এমন দাবি করা হচ্ছে। চ্যান্সেলর শলৎস বার বার যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়ার বিষয়ে সতর্ক করে দেয়ায় ঘটনাটি বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে।
দেশে-বিদেশে প্রবল চাপ সত্ত্বেও ওলাফ শলৎস এখনো ইউক্রেনকে টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত নন। সরাসরি যুদ্ধে না জড়িয়ে পড়ার কারণ দেখিয়ে তিনি যে সব যুক্তি তুলে ধরেছেন, বিরোধী পক্ষ তা নাকচ করে দিচ্ছে। জোট সরকারের মধ্যেও বিষয়টি নিয়ে মতপার্থক্য রয়েছে।
আড়ি পাতা রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে বিরোধীরা বলছে, টাউরুস ব্যবহার করার জন্য ইউক্রেনে জার্মান সেনাবাহিনীর সদস্য পাঠানোর কোনো প্রয়োজন নেই।
উল্লেখ্য, সেক্ষেত্রে ইউক্রেনের অফিসারদের বেশ কয়েক মাস ধরে জার্মানে প্রশিক্ষণ দিতে হবে বলে সেনা কর্মকর্তাদের আলোচনায় উঠে এসেছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে