৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাখমুত দখল করতে পারেনি রাশিয়া : জেলেনস্কি

বাখমুত দখল করতে পারেনি রাশিয়া : জেলেনস্কি। - ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেনের শহর বাখমুত রাশিয়া সমর্থিত সৈন্যরা এখনো দখল করতে পারেনি বলে জোর গলায় দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এর আগে রাশিয়ার ভাড়াটে আধাসামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ দাবি করেছিল, তারা বাখমুত শহর দখল করে নিয়েছে।

দলটির কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন বাখমুত দখলের দাবি করলেও ইউক্রেনের সামরিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, এখনো শহরের উপকণ্ঠে বেশ কিছু ভবন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

তবে জাপানে জি-৭ সম্মেলনে হিরোশিমা শহর সফরের সময় একটি সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি বলেছেন, গত আগস্ট মাসের পর থেকে কোনো শহর দখলের জন্য সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে চলা আর রক্তক্ষয়ী এ লড়াইয়ের পরেও এখন পর্যন্ত শহরটি রাশিয়া দখল করতে পারেনি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় আণবিক বোমা হামলার শিকার হিরোশিমা শহরের সাথে বাখমুতকে তুলনা করে জেলেনস্কি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হিরোশিমার মতো করেই তার দেশ পুনর্গঠন করা হবে।

এর আগে জেলেনস্কির মন্তব্যের কারণে বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, ‘বাখমুত আজ শুধুমাত্র আমাদের হৃদয়ে রয়েছে।’

জেলেনস্কির কার্যালয় অবশ্য পরে এ বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছে, শহরটির পতন হয়েছে, এমন কিছু তিনি বলেননি।

তবে বাখমুতের বেশিরভাগ এলাকা এখন রাশিয়ার সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।

জাপানে হিরোশিমার সাথে বাখমুতের আরো কিছু তুলনা তুলে ধরে জেলেনস্কি বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তোলা হিরোশিমা শহরের ছবি দেখে তার বাখমুতের বর্তমান অবস্থার কথা মনে পড়ছে।

তিনি বলেন, ‘এখন হিরোশিমা তাদের শহর আবার গড়ে তুলেছে, আমরাও আমাদের শহরগুলো গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখছি।’

ইউক্রেনের একজন জেনারেল বলেছেন, তাদের সৈন্যরা বাখমুতের উপকণ্ঠে ভালো অবস্থান তৈরি করছে এবং শহরটি আস্তে আস্তে ঘিরে ফেলার চেষ্টা করছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, কৌশলগত দিক থেকে রাশিয়ার কাছে বাখমুতের গুরুত্ব সামান্য। কিন্তু ইউক্রেনে এই লম্বা যুদ্ধে এই শহরের দখল তাদের জন্য একটি বিজয়ের একটি প্রতীক হিসেবে তারা দেখছে।

গত গ্রীষ্মের সময় রাশিয়া যখন কঠোর লড়াই করে সেভেরোদনেৎস্ক ও লাইসেচাস্ক দখল করেছিল, ইউক্রেন ওই সময় অন্য দিকে অনেক এলাকা পুনরুদ্ধার করেছে। এ বছরেও ওই একই কৌশল অনুসরণ করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

জাপানে তিন দিনের জি-৭ সম্মেলনেও ইউক্রেনের যুদ্ধ বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। বিশ্বের বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতার সাথে আলাদা করে বৈঠক করেছেন জেলেনস্কি।

সম্মেলনেই যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তাদের মিত্র দেশগুলো যদি ইউক্রেনকে সর্বাধুনিক যুদ্ধ বিমান সরবরাহ করে, তারা ওই পদক্ষেপকে সমর্থন দেবে। এর মধ্যে আমেরিকান এফ-১৬ যুদ্ধবিমানও রয়েছে।

যদিও এখনো কোনো দেশ ইউক্রেনকে যুদ্ধবিমান সরবরাহ করার ঘোষণা দেয়নি।

এফ-১৬ যুদ্ধ বিমান পাওয়ার ব্যাপারে ইউক্রেন কতটা আশাবাদী, এমন এক প্রশ্নের জবাবে জেলেনস্কি বলেছেন, ‘আমরা এ নিয়ে কাজ করছি, আমি নিশ্চিত ... আমি আপনাকে বলতে পারব না যে কতগুলো বিমান আমরা পাবো- এটা গোপন কিছু না, আমরা আসলে এখনো জানি না।’

ইউক্রেন কবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করবে, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পাল্টা হামলা শুরু করব, রাশিয়া সেটা টের পাবে।’
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement