২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

ইউক্রেনে অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক পাঠাল জার্মানি

লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক। - ছবি : নয়া দিগন্ত

জার্মানি থেকে লিওপার্ড টু ট্যাঙ্কের প্রথম চালান ইউক্রেনে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

ইউক্রেন ক্রুদের প্রশিক্ষণ দেয়ার পর তাদের ব্যবহারের জন্য ১৮টি অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক, যা যুদ্ধক্ষেত্রে প্রধান সমরাস্ত্র হিসেবে বিবেচিত হয়, তা সরবরাহ করা হয়েছে।

জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে যুদ্ধের সম্মুখভাগে ট্যাঙ্কগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।

ইউক্রেন থেকে পাওয়া বিভিন্ন খবরে জানা যাচ্ছে, যুক্তরাজ্য থেকে চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্কও ইউক্রেনে পৌঁছেছে। চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে পাশ্চাত্যের দেশগুলোর কাছে আধুনিক সামরিক সরঞ্জাম প্রদানের আহ্বান জানিয়ে আসছিল ইউক্রেন। ইউক্রেনকে ইতোমধ্যেই ট্যাঙ্ক দিয়ে সাহায্য করছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও যুক্তরাজ্য।

অবশ্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নেটো জোটের কাছে শুধু ট্যাঙ্ক নয়, যুদ্ধবিমানও চাইছেন।

যদিও এখনো কোনো দেশই তা দেয়ার স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি দেয়নি। ইউক্রেন সরকার এখনো লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক চালানের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে যুক্তরাজ্য থেকে চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্কের প্রথম চালান গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটি।

প্রায় দুই হাজার লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক, যেগুলোকে বিশ্বের প্রথম সারির যুদ্ধ ট্যাঙ্ক হিসেবে বিবেচনা করা হয়, সেগুলোর সবই নেটো দেশগুলোতে উৎপাদিত এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী এই ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে।

শুরুতে অনিচ্ছুক থাকলেও জানুয়ারি মাসে জার্মানি ইউক্রেনকে ট্যাঙ্ক পাঠাতে রাজি হয়।

জার্মান আইন অনুযায়ী, বার্লিনকে অবশ্যই লিওপার্ড টু ট্যাঙ্ক যেকোনো দেশে পুনরায় রফতানি করার অনুমতি দিতে হবে।


আধুনিক স্থলযুদ্ধে ট্যাঙ্ক এক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, কারণ এটা শত্রুপক্ষের অবস্থান বা রক্ষণব্যূহ ভেদ করে সামনে এগুতে এবং জায়গা পুনর্দখল করতে বড় ভুমিকা রাখে।

ট্যাঙ্ক চলার জন্য রাস্তা দরকার নেই, অসমান, উঁচু-নিচু, খানাখন্দে ভরা মাটির ওপর দিয়েও তা চলতে পারে। একই সাথে ট্যাঙ্ক হচ্ছে এক চলন্ত কামান, যা যুদ্ধরত বাহিনীকে শত্রুর প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেঙে সামনে এগুনোর এবং গোলাবর্ষণের ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।

লিওপার্ডে মতো ট্যাঙ্ক যুদ্ধে ইউক্রেনের সামরিক সক্ষমতা অনেকখানি বাড়িয়ে দেবে।

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র যেমন রাশিয়ার বিরুদ্ধে রণক্ষেত্রে ইউক্রেনকে সুবিধাজনক অবস্থানে নিয়ে যাবে, তেমনি পশ্চিমা বিশ্ব বা নেটো জোটভুক্ত দেশগুলোকেও এ যুদ্ধে আরো গভীরভাবে জড়িয়ে ফেলবে।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিয়াস বলেছেন, ‘প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবং যথা সময়ে ট্যাঙ্কগুলো আমাদের ইউক্রেনের বন্ধুদের হাতে পৌঁছেছে।’

জার্মান সেনাবাহিনী গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইউক্রেনের ট্যাঙ্ক ক্রুদের লিওপার্ড টুয়ের অ্যাডভান্সড এ-সিক্স ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

এগুলো রাশিয়ান টি-৯০ প্রধান যুদ্ধ ট্যাঙ্কের সাথে পাল্লা দেয়ার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে এবং অন্য পশ্চিমা ট্যাঙ্কগুলোর তুলনায় এটার রক্ষণাবেক্ষণ সহজ এবং জ্বালানি-সাশ্রয়ী বলে মনে করা হয়।

লিওপার্ড টু ছাড়াও, জার্মানি ইউক্রেনকে দুটি বিশেষ ট্যাঙ্ক-পুনরুদ্ধার যান ও ৪০টি পদাতিক যুদ্ধ যান পাঠিয়েছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইরিনা জোলোটার বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের চ্যালেঞ্জার টু ট্যাঙ্কগুলো ইউক্রেনে পৌঁছে গেছে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেক্সি রেজনিকভ তার ফেসবুক পেজে পশ্চিমাদের তৈরি সামরিক যানের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জার টুয়ের একটি ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘ব্রিটিশ যানটি সামরিক শিল্পের অন্যতম একটি নমুনা।’

এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

তবে এর আগে তারা নিশ্চিত করেছ যে ইউক্রেনের ট্যাঙ্ক ক্রুরা ব্রিটেনে প্রশিক্ষণ শেষে ট্যাঙ্কের সাথে তাদের দেশে ফিরেছে।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement