ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আলোচনা থেকে বাদ পড়া নিয়ে বৈঠক করলেন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৯:৫৪
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সোমবার ইউক্রেন পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় নেতাদের আমন্ত্রণ জানান।
ব্রিটেন, জার্মানি, ইতালি, পোল্যান্ড, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং ডেনমার্কের নেতৃবৃন্দ, ন্যাটো প্রধান মার্ক রাট, ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট আন্তোনিও কস্তা এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেয়েন তড়িঘড়ি করে ডাকা এই বৈঠকে যোগ দেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে গত সপ্তাহের ফোনালাপে দু’নেতা রাশিয়ার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে তিন বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন।
ইউক্রেন যুদ্ধের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন এবং শান্তি আলোচনায় ইউরোপের ভূমিকা থাকবে না, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের এমন ইঙ্গিতের পরিপ্রেক্ষিতে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো।
বৈঠকের পর ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার বলেন, যুদ্ধের অবসান ঘটলে পুনরায় শুরু হওয়া বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র-এর নিরাপত্তা গ্যারান্টি প্রয়োজন। তিনি যোগ করেন এর সাথে ইউরোপের ভবিষ্যত জড়িত।
হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর মধ্যে সোমবার ফোনে কথা হয়। ৩০ মিনিটের এই বন্ধুত্বপূর্ণ এই ফোনালাপে নেতারা ইউক্রেন যুদ্ধ, আগামীকাল ইউরোপীয় দেশগুলোর আসন্ন বৈঠক এবং যুক্তরাষ্ট্র ও রুশ কর্মকর্তাদের মধ্যে সৌদি আরবে আলোচনার বিষয়ে কথা বলেছেন।
ওদিকে বৈঠকের আগে সম্প্রতি ইউরোপীয় নেতারা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কির স্টারমার বলেন, তার সরকার যুদ্ধোত্তর শান্তিরক্ষী বাহিনীর অংশ হিসেবে ইউক্রেনে সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।
স্টারমার বলেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে পরবর্তী আগ্রাসন থেকে থেকে বিরত রাখতে ইউক্রেনে স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করা জরুরি।
যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে মঙ্গলবার রাশিয়ার কূটনীতিকদের সাথে প্রত্যাশিত আলোচনাসহ বৈঠকের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও সোমবার সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। রুবিও মঙ্গলবার রাশিয়ার কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনার আগে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে দেখা করেন।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সোমবার সাংবাদিকদের বলেন, রুশ প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ থাকবেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাভরভ বলেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ শেষ করতে ইউরোপের কোনো ভূমিকা থাকা উচিত নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং পুতিনের গত সপ্তাহে দীর্ঘ এক ঘণ্টা ফোনালাপ হয়। ওই আলাপে তারা অবিলম্বে শান্তি আলোচনা শুরু করার বিষয়ে একমত হয়েছিলেন, তবে রোববার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে রুবিও সিবিএসের ‘ফেস দ্য নেশন’-কে বলেন, ‘শান্তির প্রক্রিয়া এক বৈঠকের বিষয় নয়।’
রুবিও বলেন, ‘আমরা আগামী দিন ও সপ্তাহগুলোতে দেখবো ভ্লাদিমির পুতিন টেকসই ও ন্যায্যভাবে ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে আলোচনায় আগ্রহী কি না।’
ইউক্রেনের একজন মন্ত্রী বলেন, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সম্ভাব্য সফরের প্রস্তুতি হিসেবে একটি সরকারি প্রতিনিধি দল রিয়াদে পৌঁছেছে।
রুবিও বলেন, চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবে যাইই ঘটুক না কেন, একবার ‘সত্যিকার আলোচনা’ শুরু হলে ইউক্রেনকে ‘সম্পৃক্ত হতে হবে’।
ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কি এই সপ্তাহের শেষের দিকে সৌদি আরবে থাকবেন, তবে তিনি বলেছেন যে তিনি যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া আলোচনায় জড়িত নন।
সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সর্ববৃহৎ অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ ছিল। কিন্তু ট্রাম্প এই অব্যাহত সমর্থনের অবস্থান থেকে সরে আসেন। সূত্র : ভিওএ