১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ইউক্রেনের অবকাঠামোতে রাশিয়ার ব্যাপক হামলা

ডনেটস্ক অঞ্চলে রুশ হামলা থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা আশ্রয় নিয়েছে শহরের এক প্রেক্ষাগৃহে; সেখানে একটি শয্যার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। পাভলোহ্রদ, ডিনিপ্রোপেট্রোভস্ক অঞ্চল। ইউক্রেন - ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়া শুক্রবার আকাশপথে ইউক্রেনের উপর ব্যাপক হামলা চালিয়েছে। তারা ৯৩টি ক্ষেপণাস্ত্র ও প্রায় ২০০টি ড্রোন নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি। প্রায় তিন বছর আগে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার হামলা শুরুর পর ইউক্রেনের বিদ্যুৎ অবকাঠামোর উপর এটাই অন্যতম বৃহত্তম বোমাবর্ষণ বলে অভিহিত করেছেন তিনি।

জেলেন্সকি বলেছেন, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী ১১টি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রসহ ৮১টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। চলতি বছরের শুরুতে পশ্চিমা মিত্রদের দেয়া এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দিয়ে এগুলো প্রতিহত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে বলেছেন, এই ধরনের হামলার মাধ্যমে রাশিয়া 'লাখ লাখ মানুষকে সন্ত্রস্ত করে তুলছে।' রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ঐক্য গড়তে আবার আবেদন করেছেন তিনি।

জেলেন্সকি বলেছেন, 'বিশ্বের কাছ থেকে একটা জোরালো প্রতিক্রিয়া দরকার : ব্যাপক একটা হামলা- ব্যাপক একটা প্রতিক্রিয়া। এই সন্ত্রাস বন্ধ করার এটাই একমাত্র পথ।'

তবে, আগামী বছর যুদ্ধ কোন দিকে মোড় নেবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জানুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে ফিরছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এই যুদ্ধ বন্ধ করার অঙ্গীকার করেছেন এবং কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের জরুরি সামরিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি করেছেন।

মস্কোতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, 'ইউক্রেনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ স্থাপনার' উপর দূরপাল্লার লক্ষ্যভেদী ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করেছে রুশ সামরিক বাহিনী; পাশাপাশি বলা হয়েছে, 'ইউক্রেনের সামরিক ইন্ডাস্ট্রির কারখানার কর্মকাণ্ড নিশ্চিত করছে এই স্থাপনাগুলি।'

তারা আরো বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা আর্মি ট্যাকটিকাল মিসাইল সিস্টেম বা এটিএসিএম ব্যবহার করে বুধবার ইউক্রেন হামলা চালিয়েছিল; এরই প্রত্যুত্তরে এই হামলা চালানো হয়েছে।

কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বলেছে, শুক্রবারের হামলায় পরিবহন নেটওয়ার্ক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকেও নিশানা করা হয়েছে।

ইউক্রেনের বৃহত্তম বেসরকারি বিদ্যুৎ সংস্থা ডিটেক বলেছে, এই হামলায় তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি 'গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত' হয়েছে।

২৮ নভেম্বরে এমনই এক ভয়াবহ হামলায় প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল। জরুরিকালীন পরিষেবা বিভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনরায় চালু করার আগে পর্যন্ত ১০ লক্ষের বেশি পরিবার বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন ছিল।

ইউক্রেনের কর্মকর্তারা সতর্ক করেছেন, আরো হামলার জন্য রাশিয়া ক্রুজ ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র জড়ো করছে।

এই যুদ্ধ চলাকালে ইউক্রেনের প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ঘন ঘন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনা ইউক্রেনে এখন অহরহ ঘটছে।
সূত্র : ভিওএ


আরো সংবাদ



premium cement