১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

১০০০ দিন ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী?

১০০০ দিন ধরে চলা ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কী? - ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের এক হাজার দিন পূর্ণ হলো মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর)। এক হাজার দিন পরেও যুদ্ধ চলছে। এখনো ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে মাঝে মধ্যেই ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হচ্ছে।

এই পরিস্থিতির মধ্যে আগামী জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে রাশিয়ার ভেতরে যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা রকেট হামলা করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। আর রাশিয়া হুমকি দিয়েছে, এরকম আক্রমণ হলে তার উপযুক্ত ও কড়া জবাব দেয়া হবে।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে এসে এই নীতির পরিবর্তন করতে পারেন। সমর-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধু এই পদক্ষেপ নিলে ৩৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধের গতিপ্রকৃতির বদল হবে না।

এই যুদ্ধের ফলে ইউক্রেনের হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গেছে। লাখ লাখ মানুষ বাইরের দেশে আশ্রয় নিয়েছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ইউরোপে সবচেয়ে বড় সঙ্ঘাত। এর ফলে সামরিক দিক থেকে কার কত ক্ষতি হয়েছে তা গোপন রাখা হয়েছে। গোয়েন্দাদের তথ্যের উপর ভিত্তি করে পাশ্চাত্য দেশগুলো যে হিসেব করেছে, তাতে এক দেশের হিসেবের সাথে অন্য দেশের হিসেবের প্রচুর ফারাক রয়েছে। তবে সব রিপোর্টই বলছে, দু’পক্ষের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছে।

ইউক্রেনের প্রতিটি অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারেই যুদ্ধের সময় শোক নেমে এসেছে। বড় শহর থেকে দূরের গ্রাম পর্যন্ত সব জায়গায় হামলা হয়েছে, প্রতিটি রাতে বারবার সাইরেন বেজেছে। মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছেন। ঘুমহীন রাত কাটিয়েছেন তারা।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর
এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প চেয়ারে বসার পর তিনি কী সিদ্ধান্ত নেবেন? প্রশ্ন উঠেছে, ইউক্রেনকে সামরিক সাহায্য দেয়ার নীতির, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্টের ভবিষ্যৎ কী হবে?

ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর দু’দেশের মধ্যে কোনোরকম আলোচনা হয়নি। সম্ভাব্য আলোচনার আগে দু’দেশই তাদের শক্তি বাড়িয়ে নিতে চাইতে পারে। ইউক্রেন ও রাশিয়া চাইবে যুদ্ধক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের আরো কিছুটা জমি দখল করে নিয়ে আলোচনায় বসতে।

রাশিয়া ইরানের কাছ থেকে ড্রোন পেয়েছে। কুরস্কে উত্তর কোরিয়ার ১১ হাজারের মতো সেনাও যুদ্ধে নেমে পড়েছে। কিয়েভের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়া এক লাখ সেনা পাঠাবার ক্ষমতা রাখে।

ইউক্রেন আবার আগস্ট থেকে রাশিয়ার কুরস্কের একটা অংশ দখল করে রেখেছে। সেখানে তারা সবচেয়ে দক্ষ সেনা পাঠিয়েছে।

ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়া সেখানে ৫০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে। তাছাড়া তারা পূর্ব ইউক্রেনেও দ্রুত কিছু এলাকা দখল করতে চায়।

শীত আসছে, এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়া এক দিনে ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন দিয়ে আক্রমণ করেছে। রাশিয়ার গভীরে মার্কিন রকেট দিয়ে হামলার অনুমতি পাওয়া ইউক্রেনকে সামরিক ও আর্থিক সাহায্য দেয়ার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

দু’বছরে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে মাঝারি বৃদ্ধি হয়েছে। তা সত্ত্বেও যুদ্ধের আগের অবস্থার সাথে তুলনা করলে ইউক্রেনের অর্থনীতিতে বড় ধাক্কা লেগেছে। সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয়েছে ইস্পাত শিল্প ও কৃষিক্ষেত্র।

রাশিয়ার দাবি ও ন্যাটো
ইউক্রেনের প্রোসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, আগামী বছর কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। তবে যেকোনো আলোচনা শুরুর আগে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতে হবে এবং ইউক্রেনকে উপযুক্ত নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে হবে।

ক্রেমলিন বলেছে, গত জুনেই প্রেসিডেন্ট পুতিন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগ দেয়ার আশা ত্যাগ করতে হবে। আর চারটি এলাকা থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু ইউক্রেন সেই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছে।

শুক্রবার জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস প্রায় দু’বছর পর পুতিনের সাথে ফোনে কথা বলেছেন। তারপরই জেলেনস্কি বলেছেন, রাশিয়ার নেতা একঘরে হয়ে ছিলেন। এই ফোনের ফলে তার সেই দশা কিছুটা হলেও কমলো।

জেলেনস্কি সবাইকে সাবধান করে দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত শান্তি দরকার। কিন্তু এক হাজার দিন পরেও প্রশ্ন হলো, সেই শান্তি কিভাবে আসবে?

জার্মানি সিদ্ধান্ত বদলাবে না
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দেয়া হচ্ছে না। এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত বদল করছে না জার্মানি।

ব্রাজিলে জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের সাইড লাইনে শলৎস জানিয়েছেন, জার্মানি মনে করে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়ানো দরকার। কিন্তু তারা বিচক্ষণতার সাথে সেই কাজ করতে চায়।

শলৎস বলেছেন, ‘আমরা এখনো পর্যন্ত যে অস্ত্র দিয়েছি তা রাশিয়ার গভীরে গিয়ে আঘাত করতে পারবে না।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে


আরো সংবাদ



premium cement
‘ইসলামী আইন ও বৈষম্যহীন শ্রমনীতি চালু করতে হবে’ পাশের দেশের মিডিয়া মিথ্যা প্রচার করছে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বেতাগীতে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে যখম তাড়াশে গাছের সাথে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় চালক নিহত চট্টগ্রাম বন্দরে ৩ মাসে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে খাতা না দেখেই নম্বর, বিক্ষোভ বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থীদের ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে মসজিদের পুকুর দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন সরকারের সাথে বৈঠক করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে তিতুমীরের ১৪ শিক্ষার্থী বেতাগীতে শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে জখম ‘মুহম্মদ স:-কে শ্রদ্ধা জানাতে কোনো ধর্ম বাধা হতে পারে না’

সকল