রাজনৈতিক সঙ্কটে জার্মানির জোট সরকারে ভাঙ্গন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩২
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শল্টজ তার অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেছেন। এরপর দেশটির তিন-দলীয় জোট সরকারের অংশীদারদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়ায় রাজনৈতিক সঙ্কটে পড়েছে। নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
শল্টজ তার অর্থমন্ত্রী এবং জোট সদস্য ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি) নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে গত বুধবার বাজেট ঘাটতি নিয়ে দীর্ঘ বৈঠকের পর বরখাস্ত করেন বলে জানা গেছে।
লিন্ডনার এবং তার দল কর বৃদ্ধির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে এবং সামাজিক ব্যয় সংকোচ করার ওপর জোর দেয়। কিন্তু জোটের অন্য দুই সদস্য তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
এফডিপি শল্টজ-এর সোশাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসডিপি) এবং গ্রিন পার্টির সাথে জোট সরকারে আছে। জোট সরকার ২০২১ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় আসে। এখন শল্টজ গ্রিন পার্টিকে নিয়ে একটি সংখ্যালঘিষ্ঠ সরকারের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি জানুয়ারি মাসে সংসদে আস্থা ভোটের ডাক দিয়েছেন। আস্থা ভোটে পরাজিত হলে নতুন নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হবে। তবে বৃহস্পতিবার জার্মানির রক্ষণশীল দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর নেতা ফ্রিড্রিখ মার্টজ বলেছেন, ‘সংসদে আস্থা ভোট আগামী সপ্তাহেই হওয়া উচিত।’
মার্টজ বলেন, ‘আস্থা ভোটের জন্য জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করার একেবারেই কোনো কারণ নেই। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আমরা এখন জার্মান বুন্ডেস্টাগ (সংসদ) গঠনের দায়িত্ব জার্মানির ভোটারদের কাছে ফেরত দেই।’
বৃহস্পতিবার তার নিজের সংবাদ সম্মেলনে এফডিপি নেতা লিন্ডনার একমত হন, এবং বলেন যে অবিলম্বে আস্থা ভোট দেশের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।
ট্রাম্প নিয়ে দুশ্চিন্তা
ধারণা করা হচ্ছে, শল্টজ এবং বিরোধী নেতা মার্টজ জার্মান প্রেসিডেন্ট ফ্র্যাঙ্ক-ভালটার স্টাইনমেইয়ারের সাথে দেখা করবেন। জার্মান প্রেসিডেন্ট মূলত আনুষ্ঠানিক একটি পদ যিনি সরকার গঠন এবং মন্ত্রী নিয়োগ এবং বরখাস্ত অনুমোদন করে থাকেন।
জার্মান সরকারে অস্থিরতা মূলধারার দলগুলো নিয়ে হতাশা আরো গভীর করবে এবং অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি বা এএফডি’র মতো অভিবাসন-বিরোধী ডানপন্থী দলগুলোর জন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।
ফ্রান্সে এ বছর হঠাৎ নির্বাচনের পর অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দুই অর্থনীতিতে অস্থিরতা যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে ইউরোপিয়ান নেতাদের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার প্রচেষ্টা ব্যাহত করতে পারে।
প্রায় ৫০ জন ইউরোপিয়ান নেতা ইউরোপিয়ান পলিটিকাল কমিউনিটি সামিটে সমবেত হচ্ছেন, যেখানে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার ফলে নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রের কর আরোপের সম্ভাবনা, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে নতুন মোড় এবং ন্যাটো জোট দুর্বল হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হবে।
এই সামিটের স্বাগতিক দেশ হচ্ছে হাঙ্গেরি, যার ডানপন্থী নেতা ভিক্টর ওরবান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মিত্র এবং ট্রাম্পের সমর্থক।
সূত্র : ভিওএ