ইইউ বৈঠকে জয়ের পরিকল্পনা পেশ জেলেনস্কির
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩১
ব্রাসলসে ইউরোপীয় ইউনিয়েনের (ইইউ) বৈঠকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন কিভাবে জয় পাবে, সেই পরিকল্পনা পেশ করলেন জেলেনস্কি।
ইইউ সাধারণভাবে জেলেনস্কিকে সমর্থন করার কথা বললেও, জেলেনস্কির সব দাবি মানতে নারাজ ইইউ-এর কিছু সদস্য দেশ।
লিথুয়ানিয়ার প্রেসিডেন্ট শীর্ষ বৈঠকে বলেন, ‘আমি যখন পরিকল্পনা দেখি, তখন দেখতে পাই, বিগত মাস বা বছরগুলোতে আমরা যেসব সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি, সেই সব বিষয় এখানে আছে।’
২৭টি ইইউ দেশের শীর্ষ নেতার বৈঠকে জেলেনস্কি এক ঘণ্টা সময় পেয়েছিলেন তার পরিকল্পনার কথা জানানোর জন্য। এক দিন আগেই তিনি ইউক্রেনের পার্লামেন্টে পাঁচটি বিন্দুর কথা বলেছিলেন। সেগুলো আবার এই বৈঠকে বলেন।
ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করার কোনো সিদ্ধান্ত এই বৈঠকে নেয়া হবে না। পরে ন্যাটোর প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে না।
লিথুয়ানিয়া এই প্রস্তাবে রাজি হলেও যুক্তরাষ্ট্র জানিয়ে দিয়েছে, ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করা হলে পরমাণু শক্তিধর রাশিয়ার সাথে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়তে পারে ন্যাটো।
জার্মানি থেকে ক্ষেপণাস্ত্র চান জেলেনস্কি
জেলেনস্কি বৈঠকে বলেন, ‘রাশিয়ার বিরুদ্ধে দূরপাল্লার মিসাইল ব্যবহার করার অনুমতি দিক পশ্চিমা দেশগুলো।
তিনি জানান, ‘এই যুদ্ধটা রাশিয়ায় নিয়ে যাওয়াটা জরুরি। তাহলেই রুশরা যুদ্ধের ভয়াবহতা বুঝতে পারবেন এবং তারা পুতিনকে ঘৃণা করতে শুরু করবেন।’
ইউক্রেনকে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য মিসাইল ও রকেট দিয়েছে, যা দিয়ে রাশিয়ার ভিতরের লক্ষ্যে আঘাত করা সম্ভব। কিন্তু বাইডেন চান না, ইউক্রেন রাশিয়ার ভিতরে ক্ষেপণাস্ত্র আক্রমণ করুন।
যুক্তরাষ্ট্র মনে করছে, তাহলে উত্তেজনা বহুগুণ বেড়ে যাবে। ইউক্রেন জার্মানির কাছ থেকে টাউরুস ক্রুজ মিসাইলও চেয়েছে। কিন্তু জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা আমার সিদ্ধান্তের কথা জানেন। আমার সিদ্ধান্ত বদল হবে না।’
শলৎস ইউক্রেনকা টাউরুস মিসাইল দিতে রাজি নন। তবে শলৎসের জোটসঙ্গী ও প্রধান বিরোধী দলের এই ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দিতে কোনো আপত্তি নেই।
তবে ন্যাটোর সামরিক কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, রাশিয়ার সরবরাহ লাইন ও রুশ পরিকাঠামোয় আঘাত করতে পারলেই একমাত্র ইউক্রেন যুদ্ধে জিততে পারবে।
জেলেনস্কির বক্তব্য
ইইউ সদস্য দেশগুলো যৌথ ঘোষণায় জানিয়েছে, ইউক্রেনকে সাথে নিয়েই শান্তি আলোচনা করতে হবে। ইউক্রেনের শর্তেই একমাত্র শান্তি আলোচনা হতে পারে।
শলৎস বলেন, জেলেনস্কির সাথে তার বৈঠক রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে একটা বার্তা দিচ্ছে। ইউক্রেনের প্রতি তার সমর্থন কমেনি।
জেবেলস্কি জানান, তার এই জয়ের পরিকল্পনার রূপায়ণ রাশিয়ার ওপর নির্ভর করছে না। সেটা নির্ভর করছে ইউক্রেনের সঙ্গীদের ওপর। তিনি নভেম্বরের শেষে ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনের আয়োজন করবেন। সেখানে রাশিয়াও চাইলে যোগ দিতে পারে।
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন শক্তিশালী হতে চায় এবং কঠোর কূটনীতির পথ নিতে চায়। জেলেনস্কির দাবি, এখনই জয়ের পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে আগামী বছর যুদ্ধ বন্ধ হতে পারে।’
সূত্র : ডয়চে ভেলে