টরেন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব
রাশিয়ান সেনাদের নিয়ে নির্মিত সিনেমা সরানোর দাবি- আলমগীর কবির
- ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
টরেন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (টিআইএফএফ) থেকে রাশিয়ান সেনাদের নিয়ে নির্মিত একটি সিনেমা প্রদর্শন বাতিলের দাবি করেছেন ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। ‘রাশিয়ান অ্যাট ওয়ার’ নামের এই সিনেমায় ইউক্রেন আক্রমণে রুশ সেনাদের দায়মুক্তি দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে। ইউক্রেনের কনসাল জেনারেল ওলেহ নিকোলেনকো টিআইএফএফের সিইও ক্যামেরন বেইলির কাছে একটি চিঠিতে বলেছেন, ‘রাশিয়ান অ্যাট ওয়ার’ সিনেমাটি ইউক্রেন আক্রমণে দায়িত্বের প্রশ্নে সেনাদের দায়মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
চলচ্চিত্র উৎসবের শুরুর দিন গত ৫ সেপ্টেম্বর নিকোলেনকো এ চিঠিটি লিখেছেন। এতে বলা হয়, চলমান রাশিয়ান আগ্রাসনে ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হয়েছে। আর এই সিনেমায় রুশ সেনাদের দায়মুক্তি দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম স্বনামধন্য চলচ্চিত্র মঞ্চ টরেন্টো আন্তর্জাতিক উৎসবে এমন একটি সিনেমার প্রদর্শনী রাখাটা হবে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ।
রাশিয়ান-কানাডিয়ান পরিচালক আনাস্তাসিয়া ট্রফিমোভার সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন। গত সপ্তাহে এটি ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে প্রিমিয়ার হয়েছিল। আগামী শুক্রবার টিআইএফএফে প্রদর্শনের মাধ্যমে উত্তর আমেরিকায় সিনেমাটির প্রদর্শন শুরু হওয়ার কথা। টিআইএফএফের ওয়েবসাইটের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, সিনেমাটিতে যুদ্ধের প্রতি সেনাদের মোহভঙ্গ দেখানো হয়েছে। কারণ রাশিয়ায় মিথ্যা গল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা যুদ্ধে যুক্ত হয়েছে।
পরিচালক ট্রফিমোভা একটি লিখিত বিবৃতিতে বলেছিলেন, ছবিটি প্রচারণামূলক নয় এবং রাশিয়ান সরকারের অনুমতি ছাড়াই চিত্রায়িত করা হয়েছিল, যা তাকে রাশিয়ায় অপরাধমূলক বিচারের ঝুঁকিতে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই কানাডা-ফ্রান্স সহ-প্রযোজনাটি একটি যুদ্ধবিরোধী চলচ্চিত্র যা জড়িত সব পক্ষের জন্য, বিশেষ করে আমার নিজের জন্য বড় ঝুঁকি নিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বিশ্বাস করি যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন অযৌক্তিক, বেআইনি এবং ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের তদন্তের বৈধতা স্বীকার করি।
বেইলির কাছে তার চিঠিতে, নিকোলেঙ্কো লিখেছেন- তিনি বিশ্বাস করেন না, ডকুমেন্টারিটি আইনত চিত্রায়িত হয়েছে, কারণ রাশিয়ান অধিকৃত ইউক্রেনে প্রবেশ সীমাবদ্ধ এবং ট্রোফিমোভা সেই সীমান্ত অতিক্রম করার অনুমতি পাননি।
টিআইএফএফ কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
টরেন্টোতে ‘হারবিন’
‘হারবিন’ হলো চীনের সবচেয়ে উত্তরের প্রদেশ হেইলংজিয়াংয়ের রাজধানী। বিংশ শতকের শুরুতে এই শহরে বসে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইতো হিরোবুমিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মূলত কোরিয়াকে জাপানি অত্যাচারী শাসন থেকে মুক্ত করার জন্যই এই পরিকল্পনা। এই প্রেক্ষাপট নিয়েই সিনেমা বানিয়েছেন কোরিয়ার বিখ্যাত পরিচালক উ মিন-হো। শহরের নাম অনুসারেই রাখা হয়েছে সিনেমার নাম। এতে প্রধান দু’টি চরিত্রে অভিনয় করেছেন কোরিয়ার এই সময়ের সবচেয়ে আলোচিত অভিনেতা হিউন বিন ও লি ডং উক।
বর্তমান সময়ের বিশ্বব্যাপী কোরিয়ান সংস্কৃতির জনপ্রিয়তা বাড়ানোর ক্ষেত্রে পরিচালক উ মিন হো এবং অভিনেতা হিউন বিন ও লি ডং উকের অবদান অনেক। সেটারই যেন নতুন করে প্রমাণ মিলল ৮ সেপ্টেম্বর টরেন্টোতে। এদিন ‘হারবিন’র প্রিমিয়ার হয়েছে। তার আগে লাল গালিচায় হেঁটেছে তারা। এই তিন তারকাকে একসাথে দেখার আশায় প্রিমিয়ারের বাইরে ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ভক্তরা অপেক্ষা করছিলেন। ভক্তদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লি ডং উক বলেন, ‘টরেন্টোতে আমি প্রথমবার এসেছি। এখানে ভক্তদের দেখতে পেয়ে খুব কৃতজ্ঞ ও খুব খুশি।’ এই অভিনেতা বিশ্বব্যাপী পরিচিত ‘মাই গার্ল’ টিভি সিরিজের জন্য।
এই সিনেমার প্রচারণা পত্রে বলা হয়, ‘হারবিন’ নামটি ছোট। তবে সাহসী প্রতিরোধী সেনাবাহিনীর জন্য এটি বেশ পরিচিত। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে কোরিয়াকে জাপানি অত্যাচারী শাসন থেকে মুক্ত করার জন্য লড়াই করেছিল। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন উ মিন হো। যিনি ২০২১ সালে ‘দ্য ম্যান স্ট্যান্ডিং নেক্সট’ সিনেমার জন্য অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছিলেন। সেরা আন্তর্জাতিক ফিচার ফিল্ম বিভাগে এটিই ছিল দক্ষিণ কোরিয়ার বড় স্বীকৃতি।
টরেন্টো স্ক্রিনিংয়ের বাইরে, অ্যাঞ্জেলাহ নামের ২৬ বছর বয়সী একজন ভক্ত বলেছেন, তিনি কে ড্রামা দেখে এবং কোরিয়ান চলচ্চিত্র, কে পপ ও কোরিয়ান সংস্কৃতি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বড় হয়েছেন। তার জন্য, টরেন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এ অভিনেতাদের দেখে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, এই সাংস্কৃতিক প্রভাবগুলো কতটা সুদূরপ্রসারী হয়েছে। তাদের দু’জনকে এখানে টরেন্টোতে একটি ব্যক্তিগত ইভেন্টে স্ক্রিন থেকে যেতে দেখা আমার জন্য বিশেষভাবে রোমাঞ্চকর। শিল্প সত্যই সীমাহীন, বাধা ভেঙে এবং মানুষের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে, তারা যেখান থেকেই হোক না কেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা