‘আনস্টপেবল’ নিয়ে টরেন্টোতে জেনিফার লোপেজ
- আলমগীর কবির
- ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
উত্তর ও মধ্য আমেরিকার সবচেয়ে মর্যাদাকর চলচ্চিত্র উৎসব হিসাবে পরিচিত টরেন্টো ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। যেটি চলচ্চিত্র প্রেমিদের কাছে একাডেমি অ্যাওয়ার্ড (অস্কার)-এর গেটওয়ে হিসাবে বিবেচিত হয়। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে এই উৎসবের ৪৯তম আসর। যেখানে সারা বিশ্বের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রযোজক, পরিচালক থেকে শুরু করে হাজির হচ্ছেন অভিনেতা ও অভিনেত্রীরা।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার এই উৎসবের স্পটলাইট ছিল জেনিফার লোপেজের ওপর। এ দিন এই তারকা অভিনীত স্পোর্টস ড্রামা ‘আনস্টপেবল’-এর প্রিমিয়ার হয়েছে উৎসবে। সিনেমায় লোপেজ পাঁচ সন্তানের প্রচণ্ড সমর্থনকারী একজন মা হিসেবে অভিনয় করেছেন। তার প্রাক্তন স্বামী বেন অ্যাফ্লেকও এই ছবিতে অভিনয় করেছেন। অ্যাফ্লেকের প্রযোজনা সংস্থা ‘আর্টিস্ট ইকু্যুইটি’ সিনেমাটি প্রযোজনা করেছে।
সিনেমার প্রিমিয়ারে অবশ্য অ্যাফ্লেক অনুপস্থিত ছিলেন। কারণ লোপেজের সাথে বিয়ের দুই বছরের কম সময়ের মধ্যে গত ২০ আগস্ট তারা দু’জনে বিয়েবিচ্ছেদের জন্য আবেদন করেছেন। তবে কোম্পানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং অ্যাফ্লেকের বন্ধু ম্যাট ডেমন প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন এবং লাল গালিচায় টিমের সাথে হেঁটেছেন।
শুক্রবার টরেন্টোর আবহাওয়া খুব একটা অনুকূলে ছিল না। তা সত্ত্বেও লোপেজ এবং তার সহ-অভিনেতা জারেল জেরোম, ডন চেডল এবং ববি ক্যানাভালকে এক ঝলক দেখার জন্য ভক্তরা রেড কার্পেটের কাছে জড়ো হয়েছিল।
‘আনস্টপেবল’-এর গল্প তৈরি হয়েছে একজন রেসলারের জীবন কাহিনী নিয়ে। যেখানে দেখা যায়, জেরোম নামে একজন কলেজ রেসলার পেশাদার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বড় হচ্ছেন। অ্যান্থনি রোবেলসের অনুপ্রেরণামূলক সত্য গল্পের ওপর ভিত্তি করে এর গল্প, যিনি ডান পা ছাড়াই জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির কুস্তি দলের হয়ে শক্তি ও দক্ষতা তৈরি করেছিলেন।
স্ক্রিনিংয়ের সময়, রয় থমসন হলের দর্শকরা বেশ কয়েকবার করতালিতে ভেঙে পড়েন এবং ফিল্মের আরো মর্মান্তিক এবং শৈল্পিক মুহূর্তগুলো উপভোগ করেন। সিনেমার প্রিমিয়ার শেষ হওয়ার পর লোপেজ সবার কাছ থেকে আন্তরিক অভিবাদন পেয়েছিলেন। সিনেমায় তিনি ছেলের স্বপ্নকে সমর্থন করার সময় শারীরিক এবং মানসিক কষ্ট সহ্য করেন। এ সম্পর্কে লোপেজ বলেন, আমি যখন স্ক্রিপ্টটি পড়ি তখন মনে হয়েছিল যে আমিসহ অনেক মহিলা যে সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গেছে তার সাথে এর গল্প সম্পর্কিত হতে পারে। ল্যাটিনো হওয়ার গল্পটি তাই অনুপ্রেরণাদায়ক ছিল। এটা আমাকে আঁকড়ে ধরে।
বায়োপিকে লোপেজের এটিই প্রথম কাজ নয়। এর আগে ‘সেলেনা’ নামে একটি বায়োপিকে কাজ করার অভিজ্ঞাতা রয়েছে তার। সেখানে অভিনয়কে যথাযথ ভাবে ফুটিয়ে তুলতে না পারার কারণে সমালোচিত হয়েছিলেন।
এ সম্পর্কে লোপেজ বলেছেন, ‘তবে এবারের অভিজ্ঞতা ছিল সম্পন্ন ভিন্ন। কারণ এখানে আমি একজন মা। এই শব্দটি আমাদের হৃদয় থেকে ধারণ করা। তাই এর সাথে পূর্বের কোনো কিছু মেলালে চলবে না।’
এবারের ডিসকভারি প্রোগ্রামে নির্বাচিত হয়েছে ‘সাবা’সহ ২৪টি চলচ্চিত্র। এর উদ্বোধনী চলচ্চিত্র হিসেবে দেখানো হয়েছে ভারতের বাঙালি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নারী দুর্গা চুন্ডবোস পরিচালিত ‘বোজোঁ ত্রিস্তেস’। ফরাসি নাট্যকার-সাহিত্যিক ফ্রাঁসোয়া সেগোঁর উপন্যাস অবলম্বনে এতে অভিনয় করেছেন আমেরিকান তারকা ক্লোয়ি সেভেনিয়ে।
বিভিন্ন দেশের নবাগত ও উদীয়মান পরিচালকদের প্রথম ও দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র জায়গা পেয়ে থাকে ডিসকভারি প্রোগ্রামে। ‘সাবা’ মাকসুদ হোসেন পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র। বাবা নিখোঁজ হওয়ার পর অসুস্থ মাকে নিয়ে সাবা নামের এক তরুণীর জীবনসংগ্রামকে পর্দায় তুলে ধরেছেন তিনি। স্ত্রী ত্রিলোরা খানকে নিয়ে এর গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন মাকসুদ হোসেন।
‘সাবা’য় নাম ভূমিকায় দেখা যাবে মেহজাবীনকে। অন্য দুটি মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন রোকেয়া প্রাচী ও মোস্তফা মনওয়ার। তাদের অভিনয় দেখতে মুখিয়ে আছেন দর্শকরা। আগামী ৭, ৮ ও ১৪ সেপ্টেম্বর এর একটি করে প্রদর্শনী হবে। এগুলোতে মেহজাবীন ও মাকসুদের অংশ নেয়ার কথা রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রদর্শনী তিনটির টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
শুধু অভিনয় নয়, ছবিটি সহ-প্রযোজনা করেছেন মেহজাবীন। প্রযোজকের তালিকায় তার পাশাপাশি আছেন আরিফুর রহমান, তামিম আব্দুল মজিদ, ত্রিলোরা খান, মাকসুদ হোসেন ও বরকত হোসেন পলাশ। চিত্রগ্রহণ করেছেন বরকত হোসেন পলাশ।
টরন্টোর এবারের আসরের লালগালিচায় আলো ছড়াবেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি, সালমা হায়েক, সেলেনা গোমেজের মতো তারকারা। প্রতি বছর ১১ দিনের এই আয়োজনে সমবেত হয় অন্তত ৪ লাখ সিনেপ্রেমী। উৎসবে ১০০-১৩০টি চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন সিরিজ বেচাকেনা হবে। আশা করা হচ্ছে, স্ট্রিমিং প্যাটফর্মগুলো বেশির ভাগ কন্টেন্ট কিনে নেবে।
এবারের উৎসব চলবে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা