২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দেইনি কেয়া পায়েল

এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দেইনি কেয়া পায়েল -


কেয়া পায়েল। তরুণ প্রজন্মের অভিনয়শিল্পী। এখন নাটকের কাজ কমিয়ে দিয়েছেন। ভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন। গত মাসে তার অভিনীত বাস ট্রিপ নাটকটি ট্রেন্ডিংয়ে ছিল। এই মাসে টেলিভিশনে প্রচার শুরু হয়েছে নতুন ধারাবাহিক ‘শিউলি মালা’। এসব নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান

দেশের নাটকের নিয়মিত মুখ আপনি। সিনেমায় কাজ করছেন না কেন?
কেন শব্দটির সহজ উত্তর হচ্ছে আমাকে কেউ সিনেমায় নিচ্ছেন না। মানে আমি যে রকম কাজ চাই সে রকম পাচ্ছি না। কিছু সিনেমার প্রস্তাব পেয়েছিলাম। করা হয়নি। তাই আপাতত শুধু নাটক করছি। সিনেমা নিয়ে ভাবছি না। যদি ভালো গল্প পেয়ে যাই, আমার সব কিছু পছন্দ হয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই করব। আমিও তাই অপেক্ষায় আছি।

নতুন শিল্পীদের ধারাবাহিকে বেশি সময় দেয়া উচিত। কিন্তু আপনাকে একক নাটকে বেশি দেখা যায়। এর কারণ কী?
ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই ধারাবাহিকে কম অভিনয় করেছি। চেষ্টা করেছি, আগের তুলনায় কাজ কমিয়ে দিয়ে আরো ভালো কিছু করার। এখনো চেষ্টা চলছে। আমার কাজের ফর্দ ঘাটলেই এর প্রমাণ মিলবে। এই মাসে ‘শিউলি মালা’ নামে নতুন একটি ধারাবাহিক প্রচার শুরু হয়েছে দ্বীপ্ত টিভিতে। দুই বছর আগে এ নাটকে অভিনয় করেছিলাম। পারিবারিক গল্পের এ নাটকটি পছন্দ হয়েছে। খলিল জিবরান দারুণ লিখেছেন। গোলাম সোহরাব দোদুল একজন গুণী নির্মাতা। গল্প ও চরিত্রই আমাকে নাটকের কাজে আগ্রহী করে তুলেছে। বেশ ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে কাজটি করেছি।

শিউলি মালার গল্প কী নিয়ে?
শিউলি আর মালা। দুই বোনের জীবন সংগ্রামের গল্প উঠে এসেছে ধারাবাহিকটিতে। মফস্বল শহরে তাদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা। বাবা তমিজ উদ্দিনকে সবাই চেনে একজন গুণী শিল্পী হিসেবে। এক বছর হলো প্যারালাইজড হয়ে ঘরে পড়ে আছেন। শিউলি মাস্টার্স শেষ করতে পারেনি, তার আগেই সংসার চালাতে নেমে গেছে টিউশনিতে। তবে মালা যথেষ্ট মেধাবী হওয়ায় সে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায় মেধাবৃত্তি নিয়ে। টানাপড়েনের সংসারের গল্প নিয়ে এগিয়ে যাবে ধারাবাহিকটি। এখানে আমি অভিনয় করেছি মালা চরিত্রে। আর শিউলি চরিত্রে রয়েছেন মৌসুমী হামিদ।
জুলাই মাসে আপনার ‘বাস ট্রিপ’ নাটকটি ট্রেন্ডিংয়ে শীর্ষে ছিল। নাটকটি কেন জনপ্রিয়তা পেল বলে মনে করেন?
নাটকের ভাবনাটিই তো দারুণ। আমরা কাজটি করার সময়েও বেশ মজা পেয়েছি। তখনই ভেবেছিলাম, ভিন্ন রকম কিছু একটা হবেই। আমার মনে হয়, এ ধরনের নাটক বাংলাদেশের দর্শকরা পছন্দও করেন। তা না হলে তো ট্রেন্ডিংয়েও তো থাকত না। নাটকের ধরনটা পারিবারিক ড্রামানির্ভর, এন্টারটেইনিংও বটে। নাটকের পরিচালক মহিদুল মহিম এ ধরনের নাটক এর আগেও করেছেন। আমার মনে হয়, তিনি দর্শকের পালসটা ভালোই বুঝতে পারেন। সহশিল্পী জোভান ভাইও আমাকে এই নাটকের শুটিংয়ে দারুণ সহযোগিতা করেছেন। সব মিলিয়ে এটি চমৎকার একটি টিমওয়ার্কও বটে।

যারা এখনো দেখেননি, নাটকটিতে আপনার চরিত্র সম্পর্কে তাদের যদি ধারণা দিতেন
নাটকের চরিত্রে আমাকে বেশ চটপটে, খুবই রোমান্টিক, স্বামীভক্ত হিসেবে দেখা যায়। যারা আমার কাজ দেখেন, তারা অন্য রকম একজন আমিকে খুঁজে পাবেন। দেখার পর তারা বুঝতে পারবেন। তাই বলব, আগে দেখুন।
সম্প্রতি ইউটিউবে ‘ইচ্ছে পূরণ’ নামে আরেকটি নাটক দেখা যাচ্ছে। এই নাটকে দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন?
বেশ ভালো। অনেকেই কাজটি দেখে তাদের ভালো লাগার কথা জানিয়েছেন। নাটকটিতে আনন্দের বিপরীতে একটি দারুণ বার্তাও রয়েছে। যে জন্য নাটকটি দর্শক পছন্দ করছেন। মজুমদার শিমুলের পরিচালনায় এতে আমার বিপরীতে অভিনয় করেছেন তৌসিফ মাহবুব।

নতুন একটি সিনেমায় অভিনয়ে কথা শুনেছিলাম
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই জয় সরকার ‘আয়নাঘর’ নামে একটি ছবির ঘোষণা দিয়েছেন। এ সিনেমায় অভিনয় করতে যাচ্ছি এ ধরনের ঘোষণা আমি কোথাও দেইনি। শুধু এ সিনেমাটি নয়, আপাতত আমি কোনো সিনেমায় অভিনয় করছি না।
ওটিটিতে কাজের আগ্রহ কেমন?
অবশ্যই আছে। এখন তো অনলাইন প্ল্যাটফর্মের কাজ দর্শক পছন্দ করছেন। তরুণ-প্রবীণ নির্মাতারা এখানে কাজ করছেন। ভক্তদের জন্য সুখবর আছে। সম্প্রতি ওটিটিতে কাজ করেছি। এ বছরই দর্শক আমাকে ওটিটিতে পাবেন। কাজের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে চাই না। আমি চাই দর্শক পর্দায় কাজটি দেখবেন। আমি ওটিটিতে কাজ করছি কি না এ নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ ছিল। অবশেষে দর্শকের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।

নিজের অভিনয় নিয়ে উপলব্ধি কী?
ছয় বছরের ক্যারিয়ার। সব সময় দর্শকের পছন্দ-অপছন্দের কথা মাথায় রেখেই অভিনয় করছি। কতটুকু পেরেছি, দর্শকই ভালো বলতে পারবেন। কোনো চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও অভিনয় থেকে পিছিয়ে আসিনি। আমি মনে করি, অভিনয়ের মধ্য দিয়ে নিজেকে ভাঙতে পারলেই প্রকৃত শিল্পী হয়ে ওঠা যায়। যে জন্য প্রতিটি কাজেই চ্যালেঞ্জ নিয়ে করার চেষ্টা করি। কাজের মধ্য দিয়ে প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি।
গত বছর বলেছিলেন, এখন বেছে বেছে কাজ করবেন। গত এক বছরে আপনার নাটকের বাছাই নিয়ে নিজে কতটা সন্তুষ্ট?
চেষ্টা করেছি, আগের তুলনায় কমিয়ে দিয়ে আরো ভালো কিছু করার। এখনো চেষ্টা চলছে। যখন থেকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার কাজগুলো ভিন্নধর্মী হচ্ছে। পরিচালকরা গতানুগতিকতার বাইরেও গল্পের প্রস্তাব দিচ্ছেন। আমিও মোটামুটি সন্তুষ্ট। আশা করি, যতই দিন যাবে, এই সন্তুষ্টিও বাড়বে।

 


আরো সংবাদ



premium cement