২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বৈষম্য মুক্তির বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে : হানিফ সংকেত

-

হানিফ সংকেত। একাধারে তিনি উপস্থাপক, পরিচালক, লেখক ও প্রযোজক। প্রায় দুই যুগ ধরে তিনি বাংলাদেশের দর্শককুলকে জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদির মাধ্যমে আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন। সাম্প্রতিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তার ছেলেমেয়েও স্ত্রী সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে দেশ থেকে পালানোর পর বিজয়ও এসেছে আন্দোলনের। এ নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নয়া দিগন্তের সাথে
। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাকিবুল হাসান

আন্দোলনে ছাত্র-জনতার বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনার বিদায় হয়েছে। বিষয়টিকে আপনি কিভাবে দেখছেন?
কেউ যখন নিজের কাজের জন্য কাউকে জবাবদিহি করতে চান না তখন তার মধ্যে এক ধরনের দম্ভ চলে আসে। আর দম্ভের পরিণতি এমনই হয়। আর এ জন্য এই তরুণ প্রজন্মকে অভিনন্দন জানাই। ’৫২, ’৬৯ ও ’৯০-এর মতো ’২৪ সালেও গণ-আন্দোলনেও নেতৃত্বে ছিল ছাত্ররা। কখনোই ছাত্রদের আন্দোলন পরাজিত হয়নি। এবারো ছাত্ররা সেটি প্রমাণ করে দেখিয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতি অভিভাবকদের সমর্থন ছিল। আপনিও কি সন্তানদের আন্দোলনে ছিলেন?
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম থেকেই আমার ছেলে ও মেয়ে নিয়মিত মিছিলে ছিল। অভিভাবক হিসেবে আমার স্ত্রীও সন্তানদের সাথে ছিল। আমার প্রতিষ্ঠান ফাগুন অডিও ভিশনের কর্মীরাও আন্দোলনের পাশে ছিলেন। ক’দিন থেকে ঘুমাতে পারছি না। নানা এলোমেলো স্মৃতি, চিন্তা মস্তিষ্ককে ক্রিয়াশীল করে রাখছে। হৃদয় কেঁদে ওঠে, ঘুম আসছিল না। আর আমি সব সময় নীরবে কাজ করি, প্রচারের জন্য নয়।

আন্দোলনে সফলতা আসার আগে অনেকগুলো প্রাণ ঝরে গেছে। তাদের ব্যাপারে কি বলবেন?
যাদের প্রাণের বিনিময়ে আমাদের বিজয় হলো, তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি এবং এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
শুরুতে কি ভেবেছিলেন এই আন্দোলনে সরকার পতন হবে?
আমি মোটামুটিভাবে আমাদের দেশ সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গিয়েছিলাম- হবে না, কিছুই হবে না। কিন্তু এবার আমাদের এই তরুণ সমাজের উত্থান দেখে চমকে গেছি। তাদের দেশপ্রেম বলি, স্পৃহা বলি, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার যে মানসিকতা, সেটি দেখে নিজের ভেতরে আবার আশার সঞ্চার হয়েছে। এখন মনে হচ্ছে, এ দেশ ঠিকই ঘুরে দাঁড়াবে।

হঠাৎ করে তরুণদের মধ্যে এমন পরিবর্তনের কারণ কী বলে মনে হয় আপনার?
বাঙালির বিদ্রোহী মনোভাব আছে অনেক আগে থেকেই। বাইরে থেকে যত নিরীহ আর শান্তই মনে হোক, বাঙালির ভেতরে রয়েছে এক জ্বলিত ইস্পাত। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে সে তার স্বাক্ষর রেখেছে। ব্রিটিশ আমলে ফকির বিদ্রোহ, সন্ন্যাস বিদ্রোহ, তিতুমীরের বিদ্রোহ, বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন, অনুশীলন সমিতি, চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন এবং পরবর্তী সময়ে বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, নকশাল আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান এসব তার প্রমাণ। ব্রিটিশকে প্রথমত কলকাতাছাড়া ও পরে ভারতছাড়া করেছিল মুখ্যত বাঙালিরাই। সুতরাং তরুণদের এই পরিবর্তনটা ঐতিহাসিকভাবেই হয়েছে।

আগামীর বাংলাদেশকে কেমন দেখতে চান?
আমি একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখতে চাই; যা হবে নিরপেক্ষ, দুর্নীতিমুক্ত; যারা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করবে। যাদের মাধ্যমে আমরা একটি সুন্দর বাংলাদেশ পাবো। বিশেষ করে বৈষম্য মুক্তির বিষয়টি সামনের দিনগুলোতে গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সাথে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের একটি কার্যকর ব্যবস্থা কায়েমের উদ্যোগ নিতে হবে।

দৃশ্যত পরিবর্তনটা দেখতে কতদিন লাগতে পারে?
এখন একটি সরকারের পতন হয়েছে। নতুন সরকারের কাছ থেকে দৃশ্যত পরিবর্তন দেখতে চাইলে অপেক্ষা করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন যে সরকার হচ্ছে তাদের দু’টি প্রধান কাজ হবে। প্রথমত, দ্রুত একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। অন্যটি হলো, নতুন প্রজন্মের চিন্তাভাবনাকে বুঝার চেষ্টা করা। নতুনদের চিন্তার প্রতি সম্মান দেখিয়ে পদক্ষেপ নিতে পারলে একটি সুন্দর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ উপহার পাওয়া যাবে। এর জন্য অবশ্যই অপেক্ষা করতে হবে। দায়িত্বশীলদের সময় দিতে হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা, অন্যদের কথা ব্যক্তিগত : প্রেস উইং সালাহর জোড়া গোলে জিতল লিভারপুল ১০ সাংবাদিকসহ ১১ জনের ব্যাংক হিসাব জব্দ টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের ৬ দফা মেনে নেয়ার আহবান হাসিনা-কন্যা পুতুলের সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক লেনদেন স্থগিত বুটেক্স-পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হবে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে : প্রেস উইং ব্যর্থ টপ অর্ডার, মুমিনুলের ফিফটির পর পথ দেখাচ্ছেন লিটন তেজগাঁওয়ে বুটেক্স ও ঢাকা পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বেলজিয়ামের উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ বাড়ছে এসডিজি কার্যক্রমে যুক্ত হচ্ছে ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’

সকল